শ্রীলঙ্কা সিরিজ স্থগিত হওয়ায় ক্রিকেটারদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া

খেলা

শান্ত মাহমুদ
28 September, 2020, 06:50 pm
Last modified: 28 September, 2020, 07:00 pm
অনেকদিন পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরবেন, এটা ভেবে ফুরফুরে মেজাজেই অনুশীলন করে যাচ্ছিলেন ক্রিকেটাররা। সিরিজটি স্থগিত হয়ে যাওয়ায় ক্যাম্পে ডাক পাওয়া ক্রিকেটারদের অনেকে হতাশ। অনেকে আবার হতাশ না হয়ে বাস্তবতা মেনে নিতে বলছেন। 

অনেকদিন ধরেই বাংলাদেশের শ্রীলঙ্কা সফর নিয়ে আলোচনা। কোয়ারেন্টিনের সয়ময়সীমা ও স্বাস্থ্য বিধির জটিলতায় আটকে ছিল সিরিজটির ভাগ্য। অবশেষে ধোঁয়াশা দূর হয়েছে। কিন্তু ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসেনি। অনির্দিষ্টকালের জন্য সিরিজটি স্থগিত হয়ে গেছে।

কোয়ারেন্টিনসহ স্বাস্থ্য বিধি নিয়ে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটকে একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছিল বিসিবি। কোয়ারেন্টিনের সময়সীমা ছাড়া বাকি সব বিষয়ে একমত শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট। কিন্তু কোয়ারেন্টিনের সময়সীমা কমানোর ব্যাপারটি তাদের হাতে নেই বলে জানিয়েছে। এমন উত্তরের পর বিসিবি জানিয়েছে, ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন করে সিরিজ খেলা সম্ভব নয়।

অনেকদিন পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরবেন, এটা ভেবে ফুরফুরে মেজাজেই অনুশীলন করে যাচ্ছিলেন ক্রিকেটাররা। সিরিজটি স্থগিত হয়ে যাওয়ায় ক্যাম্পে ডাক পাওয়া ক্রিকেটারদের অনেকে হতাশ। অনেকে আবার হতাশ না হয়ে বাস্তবতা মেনে নিতে বলছেন। 

সিরিজটি স্থগিত হওয়ার খবর শোনার পর এ নিয়ে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার। 

নাজমুল হোসেন শান্ত: হতাশা কিছুটা আছে। খেলতে পারলে ভালো হতো। কিন্তু আমরা, অর্থাৎ আমাদের বোর্ড যেভাবে চাচ্ছিল, সেভাবে হয়নি। তো এটা নিয়ে আসলে হতাশ হয়েও লাভ নেই। যখন যেমন, ওইভাবে মানিয়ে নিতে হবে। খুব বেশি চিন্তিত না এটা নিয়ে। তবে হলে ভালো হতো। 

ঘরোয়া ক্রিকেট শুরু হলে অবশ্যই ভালো হবে। অনেকদিন খেলা নেই। ঘরোয়া ক্রিকেট শুরু হলে স্বস্তির একটা ব্যাপার হবে। আমরা যারা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছি, কেবল তাদের জন্যই নয়। যারা ঘরোয়া ক্রিকেটের ওপর নির্ভরশীল, তাদের জন্যও অনেক ভালো হবে। 

ইমরুল কায়েস: পরিস্থিতির কারণে যেটা হয়েছে, সেটা তো মেনে নিতেই হবে। হতাশ হয়ে কিন্তু কিছু হবে না। বাস্তবতা মানতেই হবে। আমি হতাশ হলাম, তাতে আমার কী হবে। করোনা পরিস্থিতি বুঝতে হবে। বোর্ড চিন্তা করে দেখেছে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকাটা ক্রিকেটারদের জন্য অনেক বেশি। সবকিছু চিন্তা করেই বিসিবি একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মেনে নিতে হবে। শুনলাম ঘরোয়া ক্রিকেট শুরু হবে। কবে শুরু হবে জানি না। তবে শুরু হলে ভালো হবে। 

মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন: অবশ্যই হতাশা কাজ করছে। কারণ এতোদিন মনে হচ্ছিল হয়তো হবে, একটা সমঝোতা আসবে। কিন্তু যেহেতু শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড তাদের কোয়ারেন্টিনে অনড় ছিল, সেক্ষেত্রে আমাদের কিছু করার ছিল না। কারণ ১৪ দিন খুব কঠিন। অনুশীলনে তিনদিন বিশ্রাম দিয়েছে, একাডেমি ভবনে আছি। এতেই পাগল হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা। তেমন কিছু করার নেই। জিম করলাম, রুমে এলাম। এভাবে আর কতোক্ষণ থাকা যায়। ১৪ দিন সেখানে অনেক বেশি। যেটা মনে হয় সম্ভব নয়। বিসিবি ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 

আমি প্রথমবার টেস্ট দলে ডাক পেয়েছিলাম। আমার জন্য একটু বেশিই হতাশার। কিন্তু ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থেকে খেলা এটা আরও বেশি কঠিন। মানসিকভাবে বেশি চাপ বাড়তো বলে মনে হয়। এটা তো বাতিল হয়ে যায়নি। সামনের বছর হয়তো হবে। ভালো কিছুই হবে, এই আশায় আছি।

নুরুল হাসান সোহান: না, হতাশার তেমন কিছু নেই। অনুশীলন তো চলছে। ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট না হওয়ায় হয়তো ঘরোয়া ক্রিকেটের যে কোনো টুর্নামেন্ট শুরু হবে। খেলা হওয়াটাই গুরুত্বপূর্ণ। শুরু হলেই ভালো। যেহেতু ৫-৬ মাস ধরে খেলার বাইরে, তো যেকোনো ধরনের টুর্নামেন্টই আমাদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ।

খালেদ আহমেদ: অবশ্যই হতাশার। অনেক দিন পর মাঠে নামব ভেবেছিলাম। তুমুল আগ্রহ ছিল যে অনেকদিন পর খেলা হবে। ইচ্ছা ছিল যদি সুযোগ পাই, ভালো কিছু করব। অবশ্য এখানে কিছু করারও নেই। এটা বোর্ডের সিদ্ধান্ত। আমাদের মেনে নিতে হবে। সামনে যা খেলা আছে, ওগুলো খেলতে হবে ভালো করে। ঘরোয়া ক্রিকেট শুরু হলেও আমাদের জন্য অনেক ভালো হবে। 

ইয়াসীর আলী রাব্বি: একটু খারাপ তো লাগছেই। কারণ আশা করছিলাম আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরবে বাংলাদেশ। দুই বোর্ডই চেষ্টা করেছে কিন্তু হয়নি। এটা নিয়ে আসলে হতাশ হওয়ার কিছুই নেই। সামনে যেটা আসবে, ওটা নিয়ে এগোতে হবে। ওটা নিয়েই চিন্তা করছি। ঘরোয়া ক্রিকেট শুরু হলে খুবই ভালো হয়। কারণ অনেক দিন ধরেই ম্যাচ খেলা হচ্ছে না। যেখানেই হোক, খেলাটা শুরু হওয়া দরকার।

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.