তিন বছর পর জ্ঞান ফিরলো ডাচ ফুটবলারের
খেলা
দিন, সপ্তাহ বা মাস নয়; হিসাবটা বছরের। সেটাও কি না তিন বছর! যে পৃথিবীকে রেখে অজানা রাজ্যে হারিয়েছিলেন আবদেলহাক নুরি, সেই পৃথিবীর অনেক কিছু বদলে গেছে। তিন বছর পর কোমা থেকে ফেরা নেদারল্যান্ডসের এই ফুটবলারের জীবনও বদলেছে অনেক। সবচেয়ে বড় পরিবর্তন, কিছু বুঝে ওঠার আগেই জীবন থেকে হারিয়ে ফেলেছেন ৩৩টি মাস। যে হিসাব আর কখনই মেলাতে পারবেন না নুরি!
বয়স মাত্র ২২। এখন তার মাঠ দাঁপিয়ে বেড়ানোর কথা। তিন বছর আগে সেটাই করছিলেন নুরি। মাত্র ২০ বছর বয়সেই আয়াক্সের বিখ্যাত একাডেমি থেকে গ্রাজুয়েট করে মূল দলে জায়গা করে নেন নেদারল্যান্ডসের এই তরুণ ফুটবলার। বিরাট স্বপ্নের পথে নুরি যখন পা ফেলে যাচ্ছেন, তখনই ঝড় বয়ে যায় তার জীবনে। মাঠেই তার ফুটবল স্বপ্নে যতিচিহ্ন বসে যায়।
বিশ্ব মাতানো ফুটবলারদের তালিকায় যখন যুক্ত করা হচ্ছে নুরির নাম, ঠিক সে সময় জীবন যুদ্ধের কঠিন এক অধ্যায়ে ঢুকে পড়েন তিনি। ২০১৭ সালে আয়াক্সের হয়ে ম্যাচ খেলছিলেন নুরি। ম্যাচ চলাকালীন কার্ডিয়াক অ্যারিদমিয়া অ্যাটাকে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তরুণ এই ফুটবলার। ওই ঘটনায় নুরির মস্তিষ্কে স্থায়ীভাবে বড় ধরনের ক্ষতি হয়। কোমায় চলে যান তিনি।
হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা জানান, নুরির বাঁচার সম্ভাবনা একেবারেই কম। হার মানেননি নুরি, তিন বছর লড়াইয়ের পর চেনা ভূবনে ফিরে এসেছেন। যদিও স্বাভাবিক জীবনে ফেরা হয়নি তার, সেই সম্ভাবনাও কম। প্রিয় ফুটবলেও হয়তো আর কোনোদিন লাথি দেওয়া হবে না নুরির।
জ্ঞান ফিরে পাওয়া নুরি নিজ বাড়িতে ফিরেছেন। তার বড় ভাই আবদেররাহিম বলেছেন, 'সে জ্ঞান ফিরে পেয়েছে। আশেপাশে কে আছে, ও সেসব বুঝতে পারে এখন। এখন আমাদের সঙ্গে বাসাতেই আছে। আমার বিশ্বাস, হাসপাতালের চেয়ে এখানে বেশি যত্ন পাবে ও। নুরি এখন ঘুমায়, হাঁচি দেয়, ঢেকুর তোলে, খাবার খায়, টিভি দেখে। মাঝে মাঝে ভ্রু কুঁচকে বা হাল্কা হেসে মনে অবস্থার জানান দেয়। তবে সে বিছানা থেকে উঠতে পারে না। সব সময় বিছানাতেই সময় কাটছে ওর।'
২০১৬-১৭ মৌসুমে আয়াক্সের হয়ে ১৫টি লিগ ম্যাচ খেলেছেন নুরি। নেদারল্যান্ডসের বিভিন্ন বয়সভিত্তিক দলে খেলেছেন তরুণ এই মিডফিল্ডার। ডাচদের অনূর্ধ্ব-১৫, ১৬, ১৭, ১৮, ১৯ ও ২০ দলের হয়ে খেলেছেন নুরি।
Comments
While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.