আবারও সমালোচনার মুখে পিএসজি ত্রয়ী 

খেলা

টিবিএস ডেস্ক 
25 November, 2021, 07:50 pm
Last modified: 25 November, 2021, 07:56 pm
ক্যারাগার বলেন, “পিএসজিতে তিনজন বাসযাত্রী আছে। এজন্য তাদের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতার কোনো সম্ভাবনাই নেই।"

লিওনেল মেসি, কিলিয়ান এমবাপ্পে, নেইমার; খাতায়-কলমে এরচেয়ে দুর্ধর্ষ কোনো ত্রয়ী কল্পনা করাও হয়তো সম্ভব না। মৌসুমের শুরুতে এই তিনজনের একত্র হওয়াকে কল্পনা করেই ভয় পাচ্ছিল অন্য দলগুলো।

কিন্তু মাঠের বাস্তবতা ভিন্ন। বুধবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে পিএসজির পরাজয়ের পর আবারও সমালোচকদের আতশ কাচের নিচে যেতে হচ্ছে এ ত্রয়ীকে।

১-২ গোলে হারার পথে পিএসজির হয়ে একমাত্র গোলটি করেছেন এমবাপ্পে। প্রথমার্ধে সিটির কাছে নাকানি-চুবানি খাওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে তার গোলে এগিয়ে গিয়েছিল ফরাসি ক্লাবটি। কিন্তু রহিম স্টার্লিং ও গ্যাব্রিয়াল জেসুসের গোল করলে আবারও ম্যাচে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে সিটি।

পিএসজির সিংহভাগ গোল আসছে এই ত্রয়ীর কাছ থেকেই। আক্রমণভাগে তাদের অবদান নিয়ে হয়তো প্রশ্ন উঠবে না তেমন। কিন্তু এই তিনজনের প্রেসিংয়ে অবহেলা, রক্ষণে সহায়তা না করা ও ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য যথেষ্ট পরিশ্রম না করাটা ভোগাচ্ছে পিএসজিকে। 

২-১ গোলের পরাজয় তেমন বড় না শুনালেও বাস্তবতা হচ্ছে, এদিনে সিটির কাছে পাত্তাই পায়নি প্যারিসিয়ানরা। পুরো ম্যাচে একবারও রক্ষণ থেকে বল ক্লিয়ার করতে হয়নি সিটির। হিটম্যাপেও ফুটে ওঠেছে পিএসজির নিষ্ক্রিয়তা। কয়েকটি কাউন্টার অ্যাটাক ব্যতীত বল নিয়ে সিটির অর্ধে পা মাড়াতেই দেখা যায়নি মেসি-নেইমারদের। 

ম্যাচশেষে সাবেক ফুটবলার ও সমালোচক ওয়েন হারগ্রিভস বলেন, "সিটির পক্ষ থেকে মাস্টারক্লাস ছিল এটি৷ ফিল ফোডেন ও কেভিন ডি ব্রুইনা তো নামেইনি। 

"নেইমার এবং মেসি নিশ্চয়ই পিচ ছাড়ার সময় মনে মনে বলেছে, এই দলের হয়ে যদি খেলতে পারতাম। 

"২-১ এ শেষ হয়েছে। ব্যবধান আরও অনেক বড় হতে পারতো।"
 
রাফায়েল ভ্যান ডার ভার্ট তো মেসিকে তুলোধুনো করলেন এক কথায়। সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ তারকা বলেন, "রোনালদোর সঙ্গে যদি তার তুলনা করেন- একজন দলকে পরবর্তী স্তরে নেওয়ার জন্য চেষ্টা করছে, আরেকজন করছে না। সে প্রায় সময়ই মাঠে হাঁটে। আমি মেসির উপর খুবই বিরক্ত।" 

ম্যাচে পিএসজি ত্রয়ীর নিষ্ক্রিয়তার জন্য জ্যামি ক্যারাগার তাদেরকে 'বাসের যাত্রী' বলেই আখ্যা দিয়ে বসেন। এই ফুটবল সমালোচক বলেন, "সিটি, লিভারপুল, চেলসি বা বায়ার্ন; এই চার দলের মধ্যে একটি হয়তো শিরোপা জিতবে এবার। তাদের কারো একাদশেই কোনো যাত্রী নেই, যাকে টেনে নিয়ে যেতে হয় বাকি দলের। 

"পিএসজিতে তিনজন আছে। এজন্য তাদের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতার কোনো সম্ভাবনাই নেই। ওদের খেলা দেখে, বিশেষ করে এমবাপ্পেকে দেখে আমি হতাশ হয়ে যাই। 

"মেসিরটা না হয় মানা যায়। তার বয়স ৩৪, বড় মুহূর্তগুলোর জন্য নিজেকে বাঁচিয়ে রাখে সে। কিন্তু এরপরও তার বোঝা পুরো দল টানতে পারবে না। এটা ভুলে গেলে চলবে না, বার্সাও কিন্তু বহুদিন ধরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতে না।  
 
"কিন্তু এমবাপ্পের বয়স মাত্র ২২। তার উচিত দৌড়ে নিচে নামা ও সতীর্থদের সাহায্য করা। পিচের ভেতর এভাবে হেঁটে বেড়ানোটা একদমই পছন্দ না আমার।" 
 
আধুনিক ফুটবলে আক্রমণভাগে একজনের নিষ্ক্রিয়তাই পুরো দলকে ভোগাতে পারে। কেননা, সেই একজনকে কভার করতে বেগ পেতে হয় বাকি দলের। সেখানে পিএসজিতে তিনজনের নিষ্ক্রিয়তা স্বাভাবিকভাবেই দলের ভারসাম্য নষ্ট করে দিচ্ছে। 
 
লিগে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকলেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের বেশ কিছু ম্যাচে এবার ভুগতে হয়েছে পিএসজিকে। ক্লাব ব্রুজ ও আর বি লাইপজিগও পিএসজির বিপক্ষে সিংহভাগ সময় ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ রেখেছে নিজেদের কাছে। 

তবে এই ত্রয়ী ও বাকি দলের নৈপুণ্যে যথেষ্ট পয়েন্ট নিয়েই দ্বিতীয় রাউন্ডে পা রাখছে প্যারিসিয়ানরা। গ্রুপ রানার আপ হওয়া পিএসজি এখন পরের রাউন্ডেই মুখোমুখি হয়ে যেতে পারে চেলসি, লিভারপুল বা বায়ার্ন মিউনিখের সঙ্গে। 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.