আবার চাঁদে: যেন চর দখলের লড়াই!

ইজেল

04 September, 2023, 10:10 pm
Last modified: 04 September, 2023, 10:17 pm
চাঁদের দেশে অভিযান হালে বেশ চাঙা হয়ে উঠেছে। ভারতের সফল চন্দ্রাভিযানের মধ্য দিয়ে তাই আবার নতুন করে বুঝতে পারছে বিশ্ব। জাতীয় গৌরবগাথা এবং কৌশলগত গুরুত্ব—এই দুইই এমন অভিযানের পালে জোরালো হাওয়া দিচ্ছে। 

১. 

(চাঁদের বুড়ির গল্প মাগো মিথ্যা বাজে বেবাক ভুল/ গল্প করো সেই সিনেমার চলল যেটা হাউস ফুল'—আশির দশকের একটি খুদে সাময়িকী, লিটল ম্যাগাজিনে পড়েছিলাম এই জাতীয় ছড়াটি। 'জাতীয়' বললাম এ কারণে—স্মৃতি থেকে বলছি, তাতে ভুলভাল থাকতে পারে। নাম ভুলে যাওয়া সে ছড়াকার হয়তো আজকের দিনে লিখতেন—

'চর দখলের লড়াই চাঁদে', দেখব এবার তার সিরিয়াল/কার প্রযুক্তি এগিয়ে মা, জয় পেল কার পাকা চাল!)

চাঁদের দেশে অভিযান হালে বেশ চাঙা হয়ে উঠেছে। ভারতের সফল চন্দ্রাভিযানের মধ্য দিয়ে তাই আবার নতুন করে বুঝতে পারছে বিশ্ব। জাতীয় গৌরবগাথা এবং কৌশলগত গুরুত্ব—এই দুইই এমন অভিযানের পালে জোরালো হাওয়া দিচ্ছে। 

ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের 'দ্য নিউ কনটেস্ট টু ল্যান্ড অন দ্য মুন' শীর্ষক ফিচার লিখেছেন দৈনিকটির আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্পাদক লন্ডনের পেগি হোলিনগার এবং নয়াদিল্লির সাংবাদিক বেনাঞ্জামিন পারকিন। হোলিনগার গত ৩৫ বছর ধরে এ দৈনিকের সাথে যুক্ত রয়েছেন। লন্ডন, প্যারিস ও টোকিও থেকে সম্পাদকীয় ও প্রতিবেদন-বিষয়ক দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়া দৈনিকটির প্যারিস ব্যুরো প্রধানও ছিলেন। অন্যদিকে পারকিন ২০১৯-এ  দৈনিকটির সাথে যোগ দেন। এর আগে মুম্বাই থেকে কাজ করেছেন। এ দৈনিকে আসার আগে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সাথে যুক্ত ছিলেন। এ লেখার মূল তথ্য সেখান থেকেই নেওয়া।  

২৩ আগস্ট। বুধবার। ২০২৩। ভারতের বেঙ্গালুরুর মিশন কন্ট্রোল কক্ষ। রুদ্ধশ্বাসে প্রতীক্ষার পালা। ২০১৯-এর সেপ্টেম্বরে প্রায় সফলতার কাছাকাছি গিয়েই ধূলিসাৎ হয়ে যায় চাঁদের মাটি স্পর্শ করার ভারতীয় স্বপ্ন। সফটওয়্যারের গোলমালে চন্দ্রযান-২ চাঁদে নামার বদলে আছড়ে পড়ে। ধ্বংস হয়ে যায় যানটি। প্রায় চার বছর ধরে সফটওয়্যারের বিকাশ ঘটানো হয়েছে। নকশায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। এবারে? ভাবতেই কারও কারও বুক কী দুরু দুরু করে ওঠেনি! না সে রকম কিছুই ঘটল না। ধীরে ধীরে চাঁদের মাটিতে নামল ভারতের তৈরি চন্দ্রযান-৩-এর চন্দ্র অভিযানের বাহন বিক্রম। ভারতীয় মহাকাশ সংস্থা (আইএসআরওর) প্রধান এস সোমনাথ জানালেন, ভারত চাঁদে নেমেছে। গোটা কক্ষজুড়ে বিজয়-উল্লাস আর আনন্দের ঢেউ বয়ে গেল। এস সোমনাথের মুখে হাসির সাথে ছিল স্বস্তিও। 

ইতিহাসের একটি বিশাল মুহূর্তের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও রাশিয়ার পরে চতুর্থ দেশ হিসেবে চাঁদে অবতরণ করে ভারত। এক ঢিলে দুই পাখি মারার মতোই চাঁদে কেবল নামেইনি। বরং অন্ধকার এবং অনাবিষ্কৃত দক্ষিণ মেরুতে মনুষ্য তৈরি প্রথম যান হিসেবে এটি অবতরণ করে। 

এ কথাও পাশাপাশি জোর দিয়ে বলা যায়, এটাই কোনো পার্থিব যানের শেষ অবতরণ নয়। শীতল যুদ্ধের মহাকাশ দৌড়ের ইতি ঘটেছে প্রায় অর্ধশতক আগে। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন আর আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছিল সে দৌড়ের প্রকৃত প্রতিযোগী। এবারে সে প্রকৃতির দৌড়ে নেমেছে নজিরবিহীন সংখ্যক দেশ। সবাই নিজ নিজ দেশের পতাকা নিয়ে চন্দ্র জয়ের দুঃসাহসিক অভিযানে নামার তোড়জোড় করছে। চন্দ্রযান নামিয়ে চাঁদের দেশে অভিযান নতুন জেগে ওঠা চরে লাঠিয়াল পাঠিয়ে দখলের কথাই যেন আমাদের মনে করিয়ে দেয়।

চলতি সপ্তাহেই নভোচারীহীন নিজ চন্দ্রযানকে চাঁদে নামানোর চেষ্টা করবে জাপান। চলতি বছর একই 'পথ লক্ষ্য করে স্বীয় কীর্তি ধ্বজা ধরে' এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। চন্দ্রভূমিতে অভিযান চালানোর যান পাঠানোর পরিকল্পনা করছে কানাডা, মেক্সিকো ও ইসরায়েল। চাঁদে ২০২৫-এর মধ্যে নভোচারী পাঠানোর নাসার পরিকল্পনার নাম আর্টেমিস। আন্তর্জাতিক ছয় মহাকাশ সংস্থা এ কাজে নাসার সাথে হাত মিলিয়েছে। তাইকোনট (চীনের ভাষায় 'তাইকোং' মানে বহির্বিশ্ব এবং নাবিকের গ্রিক প্রতিশব্দ 'নট' নিয়ে তৈরি হয়েছে শব্দটি) নামে পরিচিত চীনা নভোচারীদের  ২০৩০-এর মধ্যে চাঁদে পাঠানোর পরিকল্পনা নিয়ে জোরকদমে কাজ করছে বেইজিং।

চাঁদ ছাড়া পৃথিবীর আর কোনো উপগ্রহ নেই। ১৯৬০-এর দশক থেকে চাঁদে কে প্রথম মানুষ পাঠাবে, তা নিয়ে বেদম প্রতিযোগিতা শুরু করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অধুনালুপ্ত সোভিয়েত ইউনিয়ন। সে যুগে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই চন্দ্র অভিযানের তৎপরতার দিকনির্দেশনা দিত সরকার। জাতীয় মহাকাশ সংস্থাগুলো সে নির্দেশনা বাস্তবায়নে আদাপানি খেয়ে কাজে নামত। হ্যাঁ, এ কথা সত্যি, মহাকাশ গবেষণার কিছু কিছু সুফল মহাকাশযাত্রার ক্ষেত্র থেকে উপচে পড়ত। সাধারণ প্রযুক্তি এবং অর্থনীতি এতে উপকৃত হতো। প্রধানত জাতীয় গৌরবকে তুঙ্গে তুলে ধরার লক্ষ্যেই সে যুগে চাঁদে যাওয়ার তৎপরতা চলেছে।

অর্ধশতকেরও বেশি সময় পরে আবার চাঁদ বিজয়ের তুলকালাম, কাণ্ডকারখানা নিয়ে দুনিয়া মেতে উঠেছে। তবে এবারে লক্ষ্য বদলে গেছে। বদলে গেছে চাঁদ অভিযানের লব-কুশীলবরাও। চন্দ্র অভিযানসহ মহাকাশ অভিযাত্রার ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকায় এখনো রয়েছে বড় বড় অর্থনৈতিক শক্তি। কিন্তু মহাকাশ চত্বর ব্যবহারের বিস্তর বিস্তার ঘটেছে। জড়ো হয়েছে অনেক দেশ। বহু বেসরকারি কোম্পানি। 

মহাকাশের টেকসই ব্যবহার নিয়ে কথা বলেন মার্কিন চিন্তাধারা বা থিংকট্যাংক সিকিউর ওয়ার্ল্ড ফাউন্ডেশনের (সিডব্লিউএফ) পরিকল্পনা কর্মসূচির পরিচালক ব্রায়ান উইডেন। তিনি বলেন, মহাকাশ প্রযুক্তি সস্তা হয়েছে। পাশাপাশি এটি অনেক ক্ষেত্রেই সাধারণ পর্যায়ে এসে গেছে। এ ছাড়া কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তি মূল্য কমানো নিয়ে পণ্যদ্রব্যের মতোই প্রতিযোগিতার মধ্যেও পড়েছে। 

তিনি আরও বলেন, অনেক দেশই এখনো মহাকাশে রকেটে ছোড়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। এ পর্যায়ে দেশগুলোর কাছে চাঁদ একটি সুবিশাল লক্ষ্য হিসেবে দেখা দেয়। আর এ লক্ষ্য অর্জন করাও যে সম্ভব, তা-ও বুঝতে পারছে তারা।

জাতীয় গৌরবের বিষয়টি এখনো চন্দ্রাভিযানের বড় নিয়ামক হয়ে আছে। উইডেন বলেন, এ সত্ত্বেও চাঁদ থেকে কাজে লাগানোর মতো কী কী পাওয়া যায়, তা-ও খতিয়ে দেখার জন্য সেখানে অভিযান চালানো দরকার বলে মনে করা হচ্ছে। অনেকেই ভাবেন, চাঁদে গেড়ে বসতে পারলে তার একটা বড় সামরিক, কৌশলগত এবং আর্থিক সুবিধা পাওয়া যায়। অন্য দল ভাবছেন, চাঁদে এমন সব সম্পদ রয়েছে, যা আমাদের একান্তভাবে প্রয়োজন রয়েছে। উইডেন আরও বলেন যে সত্যি বলতে কি কোনটা যে ঠিক, এখনো কেউ জানেন না। 

মেরু কেন পছন্দের!

চাঁদের দক্ষিণ মেরুকে কেন চন্দ্রযান অবতরণের জন্য বেছে নিয়েছে ভারত, তা বেশ তাৎপর্যের। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে শেষ অ্যাপোলো মিশন চাঁদ ছেড়ে চলে আসে নাসা। বিজ্ঞানীরা সে সময় মনে করতেন, চন্দ্রপৃষ্ঠ শুষ্ক। শূন্য প্রান্তর, ঢিবি ও খাদ ছাড়া চাঁদের দেশে আর কিছুই নেই। কিন্তু তারপর অনেক অনুসন্ধান হয়েছে। তার ভিত্তিতে ধারণা আমূল পাল্টে গেছে। চাঁদের দেশের দক্ষিণ মেরুর অন্ধকার শীতল গহ্বরগুলোতে হয়তো লুকিয়ে আছে হিমায়িত পানি। হয়তো রয়েছে রেয়ার আর্থ মেটালস নামে পরিচিত বিরল কিছু ধাতুও। রুপালি-সাদা ১৭টি নরম কিন্তু ভারী ধাতুকে রেয়ার আর্থ মেটালস বা রেয়ার আর্থ এলিমেন্টস সংক্ষেপে আরইই বলা হয়। নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদন,  আটপৌরে কাজে ব্যবহৃত ইলেকট্রনিকস পণ্য এবং প্রতিরক্ষাব্যবস্থার জন্য আরইই অপরিহার্য।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন উভয় দেশের নজর পড়েছে চাঁদের দেশের ওপর। ভিনগ্রহে বসবাস সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের লক্ষ্যে চাঁদে একটি প্রধান ঘাঁটি বসানোর বিষয়ে মাথা ঘামাচ্ছে ওয়াশিংটন ও বেইজিং। চাঁদের হিমায়িত পানি নিয়েও তাদের আগ্রহের শেষ নেই। এই পানি পান করার কাজে লাগানো যেতে পারে। কিংবা পানিকে ভেঙে শ্বাস-প্রশ্বাস চালানোর মতো অক্সিজেন পাওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া হাইড্রোজেনও পাওয়া যাবে, জ্বালানির কাজে যা ব্যবহার করা সম্ভব। অন্যদিকে চাঁদে নভোচারীরা থাকার মধ্য দিয়ে গভীর মহাকাশে অভিযানের জন্য প্রয়োজনীয় অনেক কিছু জানা বা শেখা যাবে। 

নাসা বিজ্ঞানী জিম ফ্রি বলেন, মঙ্গলে অভিযান ও বসবাস শেখার জন্য চাঁদে জীবনযাপন এবং কাজ করতে চাই। ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে চন্দ্র অভিযানে নাসা বিনিয়োগ করবে ৯৩ বিলিয়ন ডলার। বিশ্বের অনেক কোম্পানিও এ খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী। মার্কিন কোম্পানি ইনিশিয়েটিভ মেশিনস অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোবোটিক চলতি বছরের মধ্যেই চাঁদে প্রথম বাণিজ্যিক অবতরণের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। এপ্রিল মাসে জাপানের আইস্পেসের এমন প্রচেষ্টা ভেস্তে যাওয়ার পর পরই এ লক্ষ্য নেওয়া হয়। 

চাঁদের দেশে যাওয়া নিয়ে তোড়জোড় চলছে বেশ জোরেশোরে। মহাকাশ পরামর্শক এনএসআরের বিশ্লেষক ডালাস কাসাবোস্কি এসব কথা বলেন। 'চাঁদের হাটের প্রতিবেদন' বা 'লুনার মার্কেট রিপোর্ট' তৈরির কাজটি করেন তিনি। কাসাবোস্কি আরও বলেন যে ২০২২ থেকে ২০৩২-এর মধ্যে চার শর বেশি সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থার চন্দ্র অভিযানের পরিকল্পনা হয়েছে। এক বছর আগে যে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল, এ সংখ্যা তার চেয়েও আড়াই শ বেশি। ভারতসহ এখন যে চলমান চান্দ্র কর্মসূচি দেখা যাচ্ছে, সেগুলো অনেক বছর আগেই নেওয়া হয়েছিল—এ কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, গত দুই বছরে চাঁদের দেশে যাওয়াসংক্রান্ত তৎপরতা নিয়ে আরও অনেক তাৎপর্যপূর্ণ বিকাশ ঘটেছে। ব্যক্ত করা হয়েছে জোরালো অঙ্গীকার। 

সস্তা হলেও এখনো কঠিন!

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে আমাদের নাভিশ্বাস উঠছে। কিন্তু উল্টা কাণ্ড ঘটছে মহাকাশ অভিযান এবং সেখানে তৎপরতা চালানোর জগতে। বাড়ছে না বরং খরচ কমছেই সেখানে। চাঁদের কৌশলগত গুরুত্ব রয়েছে, সে কথা স্বীকার করে নেওয়া হচ্ছে। এভাবে চাঁদ নিয়ে আগ্রহ এবং কর্মসূচি বাড়ার সুফল হিসেবে এ খাতে খরচ কমছে।

প্রযুক্তির বিকাশে খরচ কতটা কমবে, তারও ধারণা দিয়েছে নাসা। নাসার হিসাবে স্পেস এক্সস ফ্যালকন-৯-এর মতো বারবার ব্যবহারযোগ্য বাণিজ্যিক রকেট পৃথিবীর কথিত নিম্ন কক্ষপথে পাঠানোর জন্য পেলোডের, প্রতি কিলোগ্রাম ওজনের ক্ষেত্রে খরচ কমবে ৯৫ শতাংশ। চন্দ্রযান এবং চন্দ্র যোগাযোগ সেবা তৈরির খাতে নেমেছে বেসরকারি খাত। সেখানেও একই হারে খরচ কমবে।

ইউনিভার্সিটি অব লিসেসটারের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সহযোগী অধ্যাপক ব্লেডডিন বোওয়েন। জ্যোতির্রাজনীতি বা অ্যাস্ট্রোপলিটিকসকে উপজীব্য করে তিনি লিখেছেন 'ওরিজিনাল সিন: পাওয়ার, টেকনোলজি অ্যান্ড ওয়ার ইন আউটার স্পেস' বইটি। গত বছর প্রকাশিত বইয়ে ব্লেডডিন বোওয়েন বলেন, চন্দ্র অভিযান নিয়ে চীন এবং আমেরিকা বেশ বিলম্ব করেছে। শেষ পর্যন্ত এখন তা চূড়ান্ত একটি রূপ নিয়েছে। অবশেষে মহাকাশ অভিযান চালানোর উপযোগী প্রযুক্তি তাদের নাগালে এসেছে বলেও জানান। জ্যোতির্রাজনীতির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি জানান, বহির্বিশ্বে চালানো যেকোনো রাজনৈতিক তৎপরতা এর আওতায় আসবে। কোনো তৎপরতাই রাজনীতির বাইরে নয়, এমনকি মহাকাশ বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতাও নয়। কে কাকে সহায়তা করছে, কেন করছে এবং কী কী শর্তে করছে, এসবই রাজনৈতিক অনুমান। এসবের কোনোটাই স্বার্থহীন কিংবা নিঃস্বার্থ কর্ম নয়।

চাঁদের দেশে প্রথম মানুষ নামানোর জন্য যে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়েছিল, এখনকার একটি আইফোনেই তার চেয়ে প্রায় এক লাখ গুণ বেশি উপাত্ত প্রক্রিয়াকরণ শক্তি বা প্রসেসিং পাওয়ার রয়েছে। তারপরও চাঁদে যাওয়ার তৎপরতায় জড়িয়ে আছে নানা বিপদ-আপদ। বোওয়েন বলেন, ব্যর্থ স্বপ্ন এবং ভঙ্গ অঙ্গীকারের বিরান ভূমি হলো মহাকাশ। অভিযান শুরুর বা অবতরণের দিনের সুনির্দিষ্ট ক্ষণে সবকিছু যথাযথ মতো কাজ করানো যারপরনাই কষ্টসাধ্য। 

মহাকাশযানকে পথ দেখিয়ে নেওয়ার মতো জিপিএস ব্যবস্থা বা দিকনির্দেশক কোনো উপগ্রহে নেই। চাঁদের দেশের ভূমিতে নেই অতি দ্রুত বেগে নেমে আসা যানের গতি কমানোর মতো কোনো আবহমণ্ডলও। গর্ত এবং জঞ্জালে ভরা চাঁদের ভূমি। এসবের ছায়া নতুন বিপত্তি ডেকে আনতে পারে। ছায়ার কারণে মারাত্মক ভুল হতে পারে সেন্সরস বা স্পর্শকের পাঠে। এতে ঘটতে পারে অজানা অনেক বিপদ-আপদ। 

ভারতের চন্দ্রযান-৩ এবার সফলভাবে নামতে পেরেছে। কিন্তু তার আগে, ২০১৯-এ ভারতের চন্দ্রযাত্রা পুরোই ব্যর্থ হয়েছিল। এদিকে চন্দ্রযান-৩ নামার দিন কয়েক আগেই রাশিয়ার লুনা-২৫ নিয়ন্ত্রণ হারায়। আছড়ে পড়ে চাঁদের মাটিতে ধ্বংস হয়ে যায়। 

ব্যর্থতার কারণ তুলে ধরতে গিয়ে রাশিয়ার মহাকাশ সংস্থা রোসকসমসের প্রধান ইউরি বোরিসভ দায়ী করেন চন্দ্র অভিযানকে ঘিরে রাশিয়ার দীর্ঘ তৎপরতাহীনতাকেই। তিনি বলেন, আমাদের পূর্বপুরুষেরা ১৯৬০ এবং ১৯৭০-এর দশকে যেসব অমূল্য অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিলেন, এ-সংক্রান্ত কর্মসূচি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় কার্যত তার সবটাই হারিয়ে গেছে। 

চাঁদে নামার জন্য বেরেশিট নামের এক অভিযান চালায় ইসরায়েল। হিব্রু ভাষায় বেরেশিট মানে সূচনা বা শুরু। ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে এপ্রিল মাসে চালানো ইসরায়েলি অভিযান ব্যর্থতার মধ্য দিয়ে শেষ হয়। চাঁদের মাটিতে নামার কিছু আগে নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সাথে মহাকাশযানের যোগাযোগ কেটে যায়। ইসরায়েলের একটি বেসরকারি কোম্পানি প্রথমবার এই অভিযান চালায়। আগামী বছর একই কোম্পানি বেরেশিট-২ নামে চাঁদে নামার দ্বিতীয় অভিযান চালাবে বলে পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। 

'সংকোচের বিহ্বলতা নিজেরে অপমান। সংকটের কল্পনাতে হোয়ো না ম্রিয়মাণ'— যেন এরকম গুরুবাক্য মেনেই এগিয়ে চলেছে চৈনিক, মার্কিন এবং ভারতের মতো দেশগুলো। চাঁদের দেশে সফলভাবে নামতে পারলে তাতে নিজ দেশের সম্মানের মুকুটে বড় পালকটিই যুক্ত হবে—ধরে নিয়েছে তারা। চাঁদের দেশে কী ব্যাপক সম্ভাবনা লুকিয়ে আছে, তা এখনো অজানা। কিন্তু আগেভাগে নামতে পারলে সুবিধার পোয়াবারো বরাতে বর্তাবে ভেবেই দ্রুতগতিতে তৎপরতার চালাচ্ছে তারা। চন্দ্র অভিযানের বেলায় প্রবাদ বচন উল্টে যায়, আগে গেলে বাঘে খায় না, সোনা পায়। পিছে গেলে পাত খালি যেতে পারে বা যায়! 

বোওয়েন মনে করেন, চাঁদে যদি বড় শক্তি হয়ে উঠতে পারা যায়, তাহলে চাঁদ শাসনের বিস্তারিত নীতিমালা তৈরি ও বাস্তবায়নের বেলায় বিশাল প্রভাব খাটানো যাবে বলেই বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। আগামী এক শ বছরে যা কিছু ঘটবে, তার ভিত্তি হবে চন্দ্র... আর চাঁদের মাটিতে যদি আর্থিক সফলতার সুযোগ সৃষ্টি হয়, তাহলে তখন সেখানে সরেজমিনে হাজির থাকার সুফল ষোলো আনাই মিলবে। 

চন্দ্রশাসন

চন্দ্র-দৌড়ে চীনের কাছে হেরে যেতে পারে—এমন এক ডর ভর করেছে আমেরিকার ওপর। এতেই ২০১৭ থেকে নিজ মহাকাশ অভিযানের মোড় ঘুরিয়ে দেয় ওয়াশিংটন। মঙ্গল অভিযান ছেড়ে চন্দ্রমুখী অভিযানকে আঁকড়ে ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মাত্র দুই বছরের মধ্যেই এ কাজে চীন নিজের সক্ষমতা দুনিয়ার কাছে তুলে ধরে। চাঁদের প্রত্যন্ত অঞ্চলে নামার মধ্য দিয়ে এ সক্ষমতা পৃথিবীর সামনে জ্যোৎস্নার মতো জ্বলজ্বলে হয়ে ওঠে।  

এবারে বেইজিং-ওয়াশিংটনে চন্দ্র অভিযান নিয়ে প্রায় যুদ্ধের পর্যায়ে চলে গেছে। দুই দেশেই চাঁদের দক্ষিণ মেরুকে তাক করে কর্মসূচি নিচ্ছে। এমনকি নামার জন্য একই জায়গাও পছন্দ করতে শুরু করেছে। এ নিয়ে বাদ-বিবাদ, ঝগড়াঝাঁটির পর্ব পার হয়ে কখন যে পুরাদস্তুর যুদ্ধ লেগে যায়, সে আশঙ্কায় অনেকে বিশেষজ্ঞেরই পেটের ভাত চাল হয়ে যাচ্ছে। 

মহাকাশকে রণাঙ্গনের অংশ হিসেবে বিবেচনা করা নতুন কিছু নয়। ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন মহাকাশ বাহিনী বা ইউএস স্পেস ফোর্স (ইউএসএসএফ) প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি সে সময় বলেন,  ভবিষ্যতের যুদ্ধের একটি রণক্ষেত্র হলো মহাকাশ। মার্কিন সামরিক বাহিনীর  এই নতুন শাখা মহাকাশ যুদ্ধের ধারণার প্রতি মনোযোগ নতুন করে কাড়ে। মার্কিন মহাকাশ নীতিতে এর মধ্য দিয়ে কোনো বড়সড় পরিবর্তন আনা হয়নি। বরং চলমান সামরিক ভূমিকার খানিক রদবদল ঘটে। খাওয়ার ঘরে নতুনভাবে চেয়ার সাজানোর মতোই তুলনা করেন বোওয়েন।   

চীন ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে গণমুক্তি ফৌজের সমর্থক বাহিনী বা পিএলএএসএসএফ আওতায় 'মহাকাশ বাহিনী' গঠন করে। এ বাহিনী চীনের সামরিক উপগ্রহের অবকাঠানো দেখভাল করে। কয়েক দশক আগেই পিএলএএসএফ গঠন করা হয়। ২০১৫ সালেই রাশিয়া পুনরায় মহাকাশ বাহিনী বা স্পেস ফোর্স গঠন করে। রুশ বিমান মহাকাশ বাহিনীর আওতায় গঠন করা হয় এ বাহিনী।   

বোওয়েন আরও সত্যি কথা স্বীকার করতে দ্বিধা করেননি। তিনি বলেন, মহাকাশ প্রযুক্তির বিকাশ ঘটেছে প্রধানত রাষ্ট্রের হত্যা করার শক্তি বা প্রতিরক্ষাশক্তিকে বলবান করার অভিলাষে। চন্দ্রযাত্রা বা মহাকাশ খেয়াযান অর্থাৎ স্পেস শাটল ছোড়া হয় মানুষের নজর এ সত্য থেকে ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য। আসল মতলব, পৃথিবীর সামরিক এবং আর্থিক প্রয়োজনকে কেন্দ্র করেই চলছে মহাকাশচর্চা।  

মহাকাশে শক্তি এবং রাজনীতি নিয়ে দ্য ফিউচার অব জিওগ্রাফি বইতে টিম মার্শাল কী বলেন, এবারে তা-ই শোনা যাক। তিনি বলেন, চন্দ্রভূমি নিজ দখলে রেখে এবং সে এলাকায় নিজ কর্তৃত্ব স্থাপন করে আধিপত্যবাদী শক্তি অন্যদের চন্দ্রজয়ের বাসনাকে কোণঠাসা করে দিতে পারে। প্রথমে যে ঘাঁটি গাড়তে পারবে, প্রথমেই সেই চাঁদের সম্ভাব্য সম্পদ হাতাতে পারবে। 

নাসার প্রধান বিল নেলসন চলতি বছরের গোড়াতেই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন, বৈজ্ঞানিক গবেষণা চালানোর ভান করে চাঁদে ভূমি দখল করতে পারে চীন। এ অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়েছে বেইজিং। তবে একই কাজ আমেরিকা বা অন্য কোনো দেশ করতে পারে কি না, সে আভাস দেননি নেলসন। 

যা-ই হোক, তার এই হুঁশিয়ারির মধ্য দিয়ে আরেক সত্যের সামনে এসে দাঁড়াল দুনিয়া। পরিকল্পিত চন্দ্রাভিযানকে শান্তিপূর্ণ কক্ষ ধরে এগোতে হলে,  নতুন আন্তর্জাতিক দিকনির্দেশনার জরুরি প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। কিংবা বহুল প্রচলিত কথার বাক্ভঙ্গিমায় বলা যায়, এখন এটাই সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে। ১৯৭৯ খ্রিষ্টাব্দের চন্দ্রচুক্তিতে সই করেনি রাশিয়া, চীন বা খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বরং আমেরিকা নিজেই আর্টেমিস অ্যাকোর্ডস নামের এক চুক্তি তৈরি করেছে। মার্কিন এই চুক্তিতে সই করার গরজ দেখায়নি চীন, রাশিয়া কেউই। ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে চাঁদে নভোচারী নামানো এবং সেখানে নভোচারীর টেকসই উপস্থিতি বজায় রাখার জন্য নাসা আর্টেমিস নামের  কর্মসূচি নিয়েছে। এ থেকেই এ চুক্তিটির নাম রাখা হয়। আর্টেমিস নাম এসেছে গ্রিক পৌরাণিক কাহিনি থেকে। অ্যাপোলোর যমজ বোনের নাম আর্টেমিস। ১৯৬০ এবং ১৯৭০-এর দশকগুলোতে চন্দ্রজয়ী নাসার কর্মসূচির নাম ছিল অ্যাপোলো। অ্যাপোলোর শেষ এবারে আর্টেমিসের যাত্রা শুরু। 

রমরমা চন্দ্র ব্যবসার তৎপরতায় শশব্যস্ত মহাকাশ প্রযুক্তি কোম্পানি অ্যারগোটেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডেভিড অ্যানো বলেন, চুক্তির বিষয় খুবই গুরুত্ব পেতে চলেছে। চমৎকারভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব এমন কিছু সুনির্দিষ্ট বিধিবিধান চাইছে চন্দ্র অভিযানে জড়িত সব দেশই। 

চাঁদে উপনিবেশ বা বসতি বা ঘাঁটি যা-ই বলুন না কেন, স্থাপন নিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে। এ প্রতিযোগিতার খেলোয়াড় কেবল আমেরিকা বা চীন নয়। সস্তায় মহাকাশ এবং চন্দ্র অভিযানের ক্ষেত্রে উদাহরণ স্থাপন করেছে ভারত। মহাকাশে নভোচারী পাঠানোর উচ্চাভিলাষী প্রকল্প নিয়ে এগিয়ে চলেছে দেশটি। চন্দ্রযান-৩ অভিযানে দিল্লির খরচ হয়েছে ৭ কোটি ৩০ লাখ ডলার। অন্যদের এমন অভিযানে যে অর্থ ব্যয় হয়েছে, ভারতীয় মহাকাশ সংস্থা সেই একই কাজ করেছে তার ভগ্নাংশ খরচ করে। হলিউডে অনেক চলচ্চিত্রের কিংবা কোনো কোনো দেশের সড়ক, ফ্লাইওভার বানানো বা রেললাইন বসানোর খরচও এর থেকে লক্ষণীয়ভাবেই বেশি। 

ভারতের মহাকাশ কর্মসূচি ৫৪ বছরে পা দিয়েছে। চন্দ্রজয়ের নীলনকশা সামনে ধরে এ কর্মতৎপরতার যাত্রা শুরু হয়নি। শুরুতে লক্ষ্য ছিল সরল। ভারতের যোগাযোগ অবকাঠামো নির্মাণে সহায়তা করা, ফসলের ওপর নজরদারির উন্নয়ন ঘটানো এবং ঝড়ের আগাম সতর্কতা জানানোসহ দেশটির অভ্যন্তরীণ উন্নয়ন। চীনের মহাকাশ কর্মসূচির সাথে পাল্লা দিতে ভারতীয় সংস্থাটির কর্মসূচিতে পরিবর্তন আনা হয়। নয়াদিল্লির চিন্তাধারা বা থিংকট্যাংক দ্য অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের বিশ্লেষক রাজেশ্বরী পিল্লাই রাজাগোপালান বলেন, ২০০৭-এ কৃত্রিম উপগ্রহবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের প্রথম সফল পরীক্ষা চালায় চীন। এ সময়ে নয়াদিল্লি সর্বসম্মতভাবেই সিদ্ধান্ত নেয়, মহাকাশে নিজ সম্পদ রক্ষায় ভারতকে কিছু একটা করতেই হবে। এর প্রায় এক যুগের মধ্যেই অর্থাৎ ২০১৯-এ এসে ভারত শেষ পর্যন্ত কৃত্রিম উপগ্রহবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের প্রথম সফল পরীক্ষা করল। 

চীনের সাথে মহাকাশ অভিযান নিয়ে পাল্লা লড়তে অন্য দেশের সহযোগিতা নিতেও দ্বিধাহীন ভারত। এর মধ্যে চাঁদের দেশে সম্ভাব্য আগামী অভিযানে জাপানকে সাথে নেবে ভারত। অন্যদিকে শুক্র গ্রহের দেশে অভিযান চালাতে জুটি বাঁধবে ফ্রান্সের সাথে।  

ভারত এরই মধ্যে মহাকাশ অভিযানে উল্লেখযোগ্য সক্ষমতাও অর্জন করেছে। বোওয়েন বলেন, ভারত কোনো নতুন মহাকাশ শক্তি নয়। নিজ রকেটে বয়ে নিজ কৃত্রিম উপগ্রহকে ভারত প্রথম মহাকাশে পাঠায় ১৯৮০ খ্রিষ্টাব্দে।

চন্দ্র অবতরণে আগস্টে ভারতের সাফল্য নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠেয় জি২০ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সুবিধা দেবে। অন্যদিকে লুনা-২৫-এর যাত্রাভঙ্গ হওয়ায় ধকল পোহাতে হবে রাশিয়াকে। মহাকাশ সক্ষমতার প্রশ্ন উঠলে কেউ কেউ বাঁকা চোখে মস্কোর দিকে তাকাবেন হয়তো। সিডব্লিউএসের কর্মকর্তা উইডেন বলেন, রাশিয়ার মহাকাশ কর্মসূচির স্বাস্থ্য ও প্রাণশক্তির হাল-হকিকত নিয়ে প্রশ্ন ওঠার মতো অনেক ঘটনা গত ১৫ বছর ঘটেছে। রুশ মহাকাশ কর্মসূচি ভেস্তে গেছে—এ কথা বলা হয়তো যাবে না। তবে এ কর্মসূচির গতি নিচের দিকে, অন্যদিকে ভারতেরটা চলেছে ওপরের দিকে। বোওয়েন আরও বলেন, মহাকাশ প্রকল্পের ক্ষেত্রে অবকাঠামো, অর্থনৈতিক সেবা এবং সামরিক গোয়েন্দা তৎপরতাকে গুরুত্বপূর্ণ সূচক ধরা হয়। এ সূচকগুলো ভিত্তি করে বলা যায়, ভারতের মহাকাশ কর্মসূচি স্বয়ংসম্পূর্ণ। ভারত যদি আগ্রাসী ভিত্তিতে চন্দ্র অভিযান নিয়ে এগিয়ে যেতে চায়, তবে সে কাজে সময় এবং অর্থ উভয়েরই দরকার পড়বে। কিন্তু সে কর্মটি নয়াদিল্লি শেষ পর্যন্ত করতে পারবে।        

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.