‘বেথলেহ্যামের তারা’ আসলে কি ছিল? এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা কী?

ইজেল

26 December, 2020, 08:35 am
Last modified: 26 December, 2020, 01:04 pm
একুশে ডিসেম্বর, ২০২০, রাতের আকাশে আবির্ভুত বিশাল গ্রহ-সংযোগের মতই কি ঘটেছিল কোন সংযোগ বেথলেহ্যামের আকাশে? অধুনা সফটওয়্যার এর মাধ্যমে গ্রহ গুলোর ঘূর্ণন যদি বারবার পর্যালোচনা করা যায় তবে খুব মজার কিছু বিষয় সামনে আসে, চোখে পড়বে বেশ কিছু গ্রহসংযোগের ঘটনা যা ঘটেছিল খ্রিষ্টের জন্মের সময়কালে। যখন দু’টি গ্রহ প্রায় একই সরলরেখায় অবস্থান করে তখন তা উজ্জ্বল দেখায় পৃথিবীর আকাশে। গ্রহ দু’টি আসলে কাছাকাছি থাকে না, তারা শুধু মাত্র একই সরলরেখায় আপতিত হয় এবং হয়ে উঠে উজ্জ্বলতম।

গত একুশে ডিসেম্বর ২০২০-এর শীতল রাতের আকশে ঘটে এক বিরল ঘটনা, বৃহস্পতি আর শনি গ্রহ একই সংযোগ রেখায় অবস্থান করে তৈরি করেছিল উজ্জ্বল এক তারার। পৃথিবীতে এই ঘটনা ঘটেছে প্রায় ৮০০ বছর পর। এই ঘটনাকে অনেকেই 'ক্রিসমাস স্টার' বলে অবিহিত করেছেন, এর সাথে বাইবেলে বর্ণিত যিশুর জন্মের সময় দেখা উজ্জ্বল তারা বা 'বেথলেহ্যাম স্টার' এর সম্পর্কের যোগসূত্র খুঁজেছেন। আসলেই কি এমন কোন ঘটনা ঘটেছিল সেদিনের আকাশে, যিশুর জন্মকালীন সময়ে? যদি ঘটে থাকে তবে তার ব্যাখ্যা কী? জ্যোতির্বিজ্ঞান কী বলে?

মজার ব্যাপার হল, যিশুর জন্মের সমসাময়িক সময়ে বেশ কিছু গ্রহ-সংযোগের ঘটনারও প্রমাণ পাওয়া যায়, অনেকটা একুশে ডিসেম্বরের ঘটনার মত। যদিও এর সাথে সবাই একমত নন কিন্তু এটা অনেকখানি-ই ব্যাখ্যা করে বেথলেহ্যাম তারাকে।

বেথলেহ্যামের তারার গল্পটি পাওয়া যায় শুধুমাত্র ম্যাথিউয়ের বইয়ে। গসপেলের গল্প অনুযায়ী যিশুর জন্মের দিনে পূবের আকাশে দেখা যায় উজ্জ্বল এক তারা যা দেখেছিলেন একদল জ্ঞানী ব্যক্তি। এরাই সেই 'ম্যাজাই', যাদের গল্প আমরা নানা ভাবে উপস্থাপন করি বিভিন্ন গল্প, সাহিত্যে। আবার অনেক জায়গায় তাঁদের বলা হয়েছে 'রাজা'। উজ্জ্বল নতুন এই তারাটির সাথে ইহুদিদের রাজার জন্মের একটা ইঙ্গিত রয়েছে বলে মনে করেন সেই তিন জ্ঞানী ব্যক্তি। তাঁর জন্ম উদযাপন করার জন্য তাঁরা তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে পড়েন জেরুজালেমের উদ্দেশ্যে। সেখানে পৌঁছে রোম কর্তৃক নিযুক্ত সেখানকার শাসক হ্যারোডকে তাঁরা শিশু যিশু সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন। এ ব্যাপারে ম্যাথিউ এ লেখা আছে, কোথায় সেই শিশু যে ইহুদিদের রাজা হিসেবে জন্মেছে? আমরা তাঁর জন্মানোর ইঙ্গিত বহনকারী তারাটি উদিত হতে দেখেছি আর এখানে এসেছি তাঁকে অর্ঘ্য দিতে। " এ ঘটনায় হ্যারোড ঘাবড়ে যান, যিশুর জন্মস্থান খুঁজে বের করার জন্য হ্যারোড তাঁর পক্ষের কিছু জ্ঞানী মানুষ নিযুক্ত করেন। তাঁরা তাদের অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে তিন জ্ঞানী ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন, বিশেষ করে তারাটিকে কখন এবং কোথায় উদিত হতে দেখেন সে বিষয়ে। বেথলেহ্যামে একজন বার্তাবাহকের জন্ম সম্পর্কে মিকাহর ভবিষ্যৎবানীর জন্য তাঁরা ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। যিশুর খোঁজে তিন জ্ঞানী ব্যক্তিকে বেথলেহ্যামে পাঠিয়ে দেন হ্যারোড। যিশুকে হত্যার বাসনায় হ্যারোড বেথলেহ্যামে জন্মানো সকল শিশুকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। ম্যাথিউ এর গসপেল বলে, "তাঁরা জ্ঞানী ব্যক্তিদের কাছে জানার পর সেই তারার খোঁজে বের হন,অবাক হয়ে তারাটিকে তাঁরা পূব আকাশে উদিত হতে দেখেন, শিশুটি যে জায়গায় ছিল সেখানে স্থির হয় তারাটি। তারাটিকে দেখে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়ে সেই জ্ঞানী ব্যক্তিদের দল।

তিন জ্ঞানী ব্যক্তি বা ম্যাজাই যীশুখৃষ্টের জন্মের পর দামী উপহারসামগ্রী নিয়ে হাজরি হন। বাইজেনটাইন মোজাইকে ম্যাজাইদের আগমণের সেই দৃশ্য উৎকীর্ণ করা হয়েছে

বেথলেহ্যামের এই তারার খোঁজে জ্যোর্তিবিজ্ঞানীরা শতাব্দী ধরে গবেষণা করেছেন, কী এর উৎস, কিভাবে এর ব্যাখ্যা করা যায় তা বের করার চেষ্টা করেছেন। সম্ভাব্য সকল কারণ নিয়ে অনেক আলোচনা চলে ত্রয়োদশ শতাব্দী পর্যন্ত। কোন সুপারনোভা বা উল্কা কিংবা সূর্যের আগুন ছটা অথবা একই সমতলবর্তী দুইটি গ্রহের একীভূত হওয়া, এমন ভিন্ন ভিন্ন সম্ভাবনার কথা বলা হয়। আবার এমন কিছুই কখনো ঘটেনি বলেও মনে করা হয়। সত্য ঘটনা হল, বিজ্ঞান এটা সম্পর্কে কোন ধারনাই করতে পারছিল না।

ধরা যাক বেথলেহ্যামে যা ঘটেছিল তা সত্যিই আকাশে সংগঠিত হওয়া গুরুত্বপূর্ণ এক ঘটনা। তাহলে বেথলেহ্যাম তারা সম্পর্কে বিজ্ঞানের ভাষ্য কী কী?

যদিও পুরো ব্যাপারটা ঝাপসা, তারপরেও খুঁজলে এর কিছু সূত্র মেলে। যেমন- সেই বিশেষ তারাটি কোন উল্কাপাত না। উল্কা সাধারণত এক খণ্ড পাথর যা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ঢুকলে জ্বলে উঠে এবং পর মুহূর্তে তা বিলীন হয়ে যাবে কিন্তু বেথলেহ্যামের জ্ঞানী তিন ব্যক্তি সেই তারাটিকে অনুসরণ করেছেন টানা সাতদিন ধরে। তাই এটি উল্কা হওয়ার সম্ভাবনাকে নাকচ করে।

বিশেষ তারাটি কোন সুপারনোভাও না কারণ সুপারনোভা হল বিস্ফোরণের পর একটি তারার মৃত্যু। বিস্ফোরণের পর কয়েক দিন, কয়েক সপ্তাহ, এমনকি কয়েক মাস পর্যন্ত সুপারনোভার ঔজ্জ্বল্য থাকে যা অবশ্য বেথলেহ্যামের তারাকে ব্যাখ্যা করতে পারে কিন্তু সুপারনোভার ঘটনা হাজার বছরের পুরনো, এ সম্পর্কে মানুষের অভিজ্ঞতা আছে। সেই তারাটি সুপারনোভা হলে তা জানার কথা মানুষের। কোথাও না কোথাও এর লিখিত রেকর্ড পাওয়া যেতো কিন্তু তা পাওয়া যায়নি। ১৮৫ খ্রিষ্টাব্দে অর্থাৎ যিশুখ্রিষ্টের জন্ম সমকালীন সময়ে চীনে এক সুপারনোভার লিপিবদ্ধ তথ্য পাওয়া যায় যা দেখা গিয়েছিল পৃথিবী থেকে।

বেথলেহ্যামের তারা কী তাহলে কী এটা ক্রিসমাস কমেট বা ধূমকেতু? তারাটিকে পৃথিবীর কক্ষপথের খুব কাছ দিয়ে অতিক্রম করা একটি ধূমকেতু বলে অবিহিত করেছেন অনেক জ্যোতির্বিজ্ঞানী। দূরের কোন সৌরমণ্ডলের একখণ্ড শীতল অংশ যখন সুর্যের কাছাকাছি উত্তপ্ত অংশে প্রবেশ করে তখন তা ধারণ করে উজ্জ্বল রং। তাদেরকে অনেক সময় সপ্তাহ বা মাস ধরে উজ্জ্বল দেখতে পাওয়া যায় পৃথিবীর আকাশে কিন্তু সুপারনোভার মত এদেরও ঐতিহাসিক রেকর্ড আছে। তাই বেথলেহ্যাম তারা যদি ধূমকেতু হতো তবে পৃথিবীর কোন না কোন জায়গায় পাওয়া যেতো তার রেকর্ড।

খ্রিষ্টের জন্মের পাঁচ বছর আগে ঝাড়ুর মত এক তারা বর্ননা দেন একজন চীনা জ্যোতির্বিজ্ঞানী যা একটি ধূমকেতু বলে মনে করেন অনেক গবেষক। এরকম অনেক ধুমকেতুর ইতিহাস চীনা জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা লিপিবদ্ধ করে গেছেন সাথে উল্কাপাতের ফলে প্রাণহানির ঘটনাও। ১৯৭০ সালে গবেষকরা চীনা ঝাড়ুর মত দৃশ্যমান উল্কার সময়ের সাথে একটা সামঞ্জস্য খুঁজে পান। এ নিয়ে বিস্তর লেখালিখি হয় বিজ্ঞান ভিত্তিক পত্রিকা গুলোয়। সকল তর্ক বিতর্ক শেষে ১৯৭৭ এ 'দ্য নিউইয়ার্ক টাইমস'এ বেথলেহ্যাম তারাটিকে হয় কোন ধূমকেতু বা গ্রহ-সংযোগ, নোভা কিংবা প্রচলিত কোন গল্প বলে ঘোষণা দেন কিংবদন্তী বিজ্ঞান লেখক ওয়াল্টার সালিভ্যান। যদিও এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি সর্বসম্মত কোন মতামত।

সুপারনোভা আরসিডব্লিউ নামে পরিচিত, ইতিহাসের সবচেয়ে পুরনো এই সুপানোভার দেখা পেয়েছিলেন চীনা জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা, ১৮৫ খৃষ্টাব্দে

বিশেষ সেই তারাটি একটি ধূমকেতু এই ধারনাকে বর্জন করার কোন উপায় নেই কিন্তু তারপরেও রয়ে যায় অতি আবশ্যিক এক সংশয়। আমাদের মাথায় রাখতে হবে প্রাচীন কালে মানুষ উল্কাপাতকে মনে করতো অভিশাপ, তারা মনে করতো এর ফলে তাদের জীবনে নেমে আসে বিপর্যয়। তাই আকাশে উজ্জ্বল কোন তারাকে দেখতে পেলে খুব স্বাভাবিক ভাবে তাদের আতঙ্কিত হওয়ার কথা, জ্ঞানী ব্যক্তিদের এটা ভাবার কথা নয় যে এটা তাঁদের মুক্তিদাতা আগমনের কোন শুভ নিদর্শন।

একুশে ডিসেম্বর, ২০২০, রাতের আকাশে আবির্ভুত বিশাল গ্রহ-সংযোগের মতই কি ঘটেছিল কোন সংযোগ বেথলেহ্যামের আকাশে? অধুনা সফটওয়্যার এর মাধ্যমে গ্রহ গুলোর ঘূর্ণন যদি বারবার পর্যালোচনা করা যায় তবে খুব মজার কিছু বিষয় সামনে আসে, চোখে পড়বে বেশ কিছু গ্রহসংযোগের ঘটনা যা ঘটেছিল খ্রিষ্টের জন্মের সময়কালে। যখন দু'টি গ্রহ প্রায় একই সরলরেখায় অবস্থান করে তখন তা উজ্জ্বল দেখায় পৃথিবীর আকাশে। গ্রহ দু'টি আসলে কাছাকাছি থাকে না, তারা শুধু মাত্র একই সরলরেখায় আপতিত হয় এবং হয়ে উঠে উজ্জ্বলতম।

যিশুর জন্মের সাত বছর আগে বৃহস্পতি এবং শনির তিনটি সংযুক্তি হয় একই নক্ষত্রমণ্ডলী, পাইছিস বা মীন-এ। গ্রহ গুলো নির্দিষ্ট কক্ষপথে নির্দিষ্ট গতিতে চলমান কিন্তু তাঁদের পরস্পরের গতি ভিন্ন এবং বিভিন্ন দুরত্বে অবস্থান করে, তাই অনেক সময় তাদের একে অন্যকে অতিক্রম করতে দেখা যায় রাতের আকাশে। তাদের এক জায়গায় স্থির অবস্থায় দেখা যায় আবার মাঝে মাঝে উল্টা গতিতেও দেখা যায় যাকে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা রেট্রোগ্রেড গতি বলে। এটা অনেকটা হাইওয়েতে অপেক্ষাকৃত ধীর গতির গাড়িকে অতিক্রান্ত করার মত ট্রিক। অন্য গাড়িটির কাছাকাছি এলে মনে হবে গাড়িটি পাশে স্থির হয়ে গেছে কিন্তু নিজের গাড়িটি টেনে নিলেই দেখা যাবে পেছনে পড়ে গেছে অন্য গাড়িটি। একই ঘটনা ঘটে যখন সূর্যের কাছাকাছি অবস্থিত পৃথিবী বাহিরের দিকে অবস্থিত গ্রহ গুলোকে অতিক্রম করে।

অবস্থানগত ভাবে বৃহস্পতি শনির তুলনায় সূর্যের কাছাকাছি অবস্থান করে তাই এটাও তুলনামূলক ভাবে দ্রুত গতির বলে মনে হয় আমাদের রাতের আকাশে। একটি বেশ বড় সময় ব্যপ্তিতে বৃহস্পতি এবং শনির সাথে যদি খুব কাছাকাছি তিনটি সংযোগ তৈরি হতো তবে এর নোট রাখতেন প্রাচীন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বা বলা ভালো জ্যোতিষীরা এবং তাঁরা অবশ্যই এর সাথে যোগ করতেন অর্থপূর্ণ ব্যাখ্যা।

এই জ্যোতিষীদের বেশি দিন অপেক্ষা করতে হয়তো হয়নি, খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে আরও বেশি লক্ষণীয় ঘটনা তাঁরা প্রত্যক্ষ করেন আকাশে। মাত্র চার বছর পড়েই অর্থাৎ যিশুর জন্মের চার বছর আগে বৃহস্পতি আর শুক্র এমন একটি ঘটনার জন্ম দিয়েছিল যা অনেকটাই একুশে ডিসেম্বর ২০২০ এ ঘটা ঘটনার সাথে মিল আছে।

 যিশুর জন্মের তিন বছর আগে বারই আগস্ট সকালে বৃহস্পতি আর শুক্র ১/১০ ডিগ্রী কোণে পরস্পরের উপর আপতিত হয় দেখা দেয় বলে ভোরের আকাশে। যা ছিল পূর্ণ চাঁদের ১/৫ ডায়ামিটার এবং এটা হলো একদম একুশে ডিসেম্বর ২০২০ এর ঘটনার মত। এখানেই শেষ না, বৃহস্পতি এবং শুক্রের এই নাচ পরের বছর পর্যন্ত চলতে থাকে যতক্ষণ না একটি আরেকটির উপর পরিপূর্ণ আপতিত হয় এবং তা একটি একক তারা রূপে দেখা যায় পরের বছর জুনে।

ইতালীর চিত্রকর গিয়োত্তো বনদোনে হ্যালির ধূমকেতু দেখেছিলেন ১৩০১ খৃষ্টাব্দে, তারপর তিনি এই ধূমকেতুকে বেথলিহামের তারা হিসেবে আঁকেন, যীশুর মাথার উপর জ্বলজ্বল করছে

দু'টি উজ্জ্বল তারার সংযোগে সৃষ্ট বেথলেহ্যামের তারা, ধারনাটি কিন্তু নতুন নয়। ১২৮৫ খ্রিষ্টাব্দে রচিত অরচেস্টার মঠ থেকে প্রাপ্ত একতাড়া নোটের মধ্যে পাওয়া যায় বৃহস্পতি আর শনি গ্রহের সংযোগ কথা যা সংঘঠিত হয়েছিল যিশুর জন্মের সময়ে। একই ধারণা পোষণ করেন স্বয়ং জোহানেস ক্যাপলার সপ্তদশ শতাব্দীতে।

 বাইবেলের সেই তারা কী তাহলে প্রচলিত গল্প নাকি সত্য ঘটনা? অনেক উৎসাহী জ্যোতির্বিজ্ঞানী মনে করেন বেথলেহ্যাম তারার অর্থপূর্ণ ব্যাখ্যা খুঁজে পেয়েছিলেন প্রাচীন জ্যোতিষীরা। সে সময়ে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গার আকাশে ঘটা ঘটনা গুলো হল এর সমর্থনে রাখে অতিরিক্ত প্রমাণ। উজ্জ্বল তারা এবং গ্রহ গুলো কিছু গুরুত্বপূর্ণ নক্ষত্রপুঞ্জ অতিক্রম করে তাই বেশীর ভাগের মতামত বেথলেহ্যামের তারা একক কোন ঘটনা নয় বরং তা যুগল কোন ঘটনা যা কয়েক বছর ধরে আকাশে দেখা গিয়েছিল এবং সেখান থেকেই একজন নতুন রাজার জন্মের ইঙ্গিত পেয়েছিলেন মেজাইরা।

 এই যে এতো ব্যাখ্যা সেগুলো কী আসলেই সেদিনের সেই ঘটনাকে সঠিক ভাবে উপস্থাপন করে? না, এসবের কোন কিছুই ঠিক সেরকম না যেরকম বর্ণনা আমরা দেখি ম্যাথিও এর বইয়ে। গ্রহ সম্পর্কে খুব ভালো জানতো প্রাচীন যুগের মানুষেরা, তাই কোন গ্রহ-সংযোগকে তারা হিসেবে উল্লেখ করা ছিল তাঁদের জন্য খুব অদ্ভুদ ব্যাপার।

 তাছাড়া তারার অবস্থান সম্পর্কে হ্যারোডের যে জিজ্ঞাসা ছিল জ্ঞানীদের কাছে তাই বা কেন, এমন উজ্জ্বল তারা  তিনি তো দর্শন করতে পারতেন নিজ চোখে। জ্যোতিঃশাস্ত্র একটি স্ববিরোধী বিষয় যা পঠনের শুরুতেই তৈরি হয় দ্বিধার, এ উদ্ধৃতি স্বয়ং বাইবেলের।

 সব মিলিয়ে যেটা বলে যায় মানুষ এখনো পরিষ্কার জানে না বেথলেহ্যামের তারা সম্পর্কিত বাইবেলের গল্পের উৎস।  সৌভাগ্যজনক ভাবে আমাদের বিরল সুযোগ হয়েছে একুশ ডিসেম্বর, ২০২০-এ  'ক্রিসমাস স্টার' দেখার। 'ক্রিসমাস স্টার' সবার জীবনে নিয়ে আসুক শান্তি, আনন্দ আর ভালোবাসা- যা এখন খুব জরুরী।

সূত্র: ডিসকভার সায়েন্স ম্যাগাজিন

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.