রাধানাথ শিকদার ও জর্জ এভারেস্ট

ইজেল

29 May, 2021, 01:55 pm
Last modified: 29 May, 2021, 03:26 pm
হিমালয় পর্বতমালার ৭৯টি শৃঙ্গের মধ্যে ৩১টির তখন নামকরণ হয়ে গেছে, অন্যগুলো সংখ্যা দিয়ে পরিচিত। ১৮৫২ সালে ত্রিকোনমিতির হিসেব নিকেশে হিমালয়ের শৃঙ্গের উচ্চতা মাপতে গিয়ে রাধানাথ শিকদারের কাছেই প্রথম ধরা পড়ে কাঞ্চনজংঘার চেয়েও বড় শিখর হিমালয়ে রয়েছে। ১৫ নম্বর শৃঙ্গটিই সবচেয়ে উঁচু। স্থানীয় ভাষায় চমুলুংমা বা পৃথিবীর মা হিসেবে পরিচিত এই শৃঙ্গ ভূমি থেকে মেপে দেখলেন উচ্চতা ২৯০০০ ফুট।

রবীন্দ্রনাথের নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তির ঠিক ১০০ বছর আগে তারই পিতৃভূমি জোড়াসাঁকো শিকদার পাড়াতে ১৮১৩ সালে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজের নাম পৌঁছে দেওয়া আর একজন বাঙ্গালি জন্ম গ্রহণ করেন- রাধানাথ শিকদার। 
 
শিবনাথ শাস্ত্রীর মতে রাধানাথ হচ্ছেন 'ডিরোজিও বৃক্ষের একটি উৎকৃষ্ট ফল'। উনবিংশ শতকের বঙ্গীয় রেনেসাঁর প্রধান প্রাণপুরুষ লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও। হিন্দু কলেজে তার প্রিয় ছাত্রদের অন্যতম রাধানাথ শিকদার। ডিরোজিওকে রাধানাথ ইংরেজির শিক্ষক হিসেবে পেলেন ১৮৩৬ সালে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র হিসেবে। গণিতের শিক্ষক ডক্টর টাইটলারের মনে হলো রাধানাথ গণিতের বিস্ময়কর প্রতিভা। ডক্টর টাইটলারের পরামর্শে যে দু'জন বাঙ্গালি সবার আগে নিউটনের প্রিন্সিপিয়া পড়লেন তাদের একজন রাধানাথ অন্যজন রাজনারায়ন বসাক। ডিরোজিওর স্কুলে তিনি যাদের সঙ্গ পেলেন তাদের মধ্যে রয়েছেন প্যারীচাঁদ মিত্র, হরচন্দ্র ঘোষ, কৃষ্ণমোহন বন্দোপাধ্যায় (পরে রেভারেন্ড), দক্ষিনারঞ্জন মিত্র মজুমদার প্রমুখ।

রাধানাথের বাবা তিতুরাম শিকদার। শিকদাররা মুর্শিদাবাদের নবাবের পুলিশি দায়িত্ব পালন করতেন। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে উৎপীড়নের অভিযোগ উঠায় ইংরেজ শাসকরা তাদের ক্ষমতা হরণ করে। ফলে তারা আর্থিক দূরবস্থায় পড়ে যান। 

রাধানাথ শিকদার

রাধানাথের ডায়েরিতে পাওয়া যায়: কলেজ জীবনে মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করা তার পক্ষে সম্ভবপর হয়ে উঠত না কারণ 'একবার পড়ার কথা মনে পড়ত, পরক্ষণেই বাড়িতে ফিরিয়া যাইয়া কি খাইব, মা বুঝি এখনও কিছু খান নাই, এই সকল ভাবনা মনে উদিত হইয়া পড়ার ব্যাঘাত ঘটিত।' 

এর মধ্যেই রাধানাথ নিউটনীয় গণিত ও পদার্থ বিজ্ঞানে দক্ষ হয়ে উঠলেন। ১৯৩১ সালে জিটিএস বা গ্রেট ট্রিগোনোমেট্রিকাল সার্ভে চলাকালে ভারতের সার্ভেয়ার জেনারেল জর্জ এভারেস্ট গণিত ও ত্রিকোনমিতির হিসেবে পাকা হাতের একজন কাউকে খুঁজছিলেন। ডক্টর টাইটলার তাকে ১৯ বছর বয়সী রাধানাথ শিকদারের কথা বললেন। তিনি তাকে জরিপ সহায়তায় 'কম্পিউটার' পদে মাসিক ৩০ টাকা বেতনের চাকরিতে নিয়ে নিলেন এবং অল্পদিনের মধ্যেই তার গাণিতিক ও উদ্ভাবনী ক্ষমতায় বিস্মিত হলেন। রাধানাথ জরিপের হিসেবের দক্ষতায় জর্জ এভারেস্টের আস্থাভাজন দক্ষিণ হস্ত হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠলেন। রাধানাথ পেশা বদল করতে চেয়েছিলেন, ম্যাজিস্ট্রেট হবার আগ্রহ ব্যক্ত করেছিলেন। কিন্তু জর্জ এভারেস্ট বেতন বাড়িয়ে তাকে প্রতিহত করেন। 

রাধানাথ ও এভারেস্ট

এটা সত্যি সঠিক মানচিত্র অঙ্কনের প্রধান শর্তই হচ্ছে সঠিক জরিপ। ভারত উপমহাদেশের কোনো জরিপকারীর কথা বলতে হলে সবার আগে উচ্চারিত নামটি একজন বাঙ্গালির, তিনিই রাধানাথ শিকদার। জর্জ এভারেস্টের পর ভারতের সার্ভেয়ার জেনারেল হলেন অ্যান্ড্রু স্কট ওয়া। তিনি তাকে চিফ কম্পিউটার পদে পদোন্নতি দিয়ে হিমালয় পর্বতমালা জরিপের দায়িত্ব দিলেন। সে সময় তার মাসিক বেতন বেড়ে ৬০০ টাকায় উন্নীত হয় বলে উল্লেখ করা হয়।

অ্যান্ড্রু স্কট ওয়া

রাধানাথ শিকদার যখন হিমালয়ের দায়িত্ব নিলেন তখন পর্যন্ত কাঞ্চনজংঘা পৃথিবীর সর্বোচ্চ শিখর হিসেবে পরিচিত। হিমালয় পর্বতমালার ৭৯টি শৃঙ্গের মধ্যে ৩১টি তখন নামকরণ হয়ে গেছে, অন্যগুলো সংখ্যা দিয়ে পরিচিত। ১৮৫২ সালে ত্রিকোনমিতির হিসেব নিকেশে হিমালয়ের শৃঙ্গের উচ্চতা মাপতে গিয়ে তার কাছেই প্রথম ধরা পড়ে কাঞ্চনজংঘার চেয়েও বড় শিখর হিমালয়ে রয়েছে। ১৫ নম্বর শৃঙ্গটিই সবচেয়ে উঁচু। স্থানীয় ভাষায় চমুলুংমা বা পৃথিবীর মা হিসেবে পরিচিত এই শৃঙ্গ ভূমি থেকে মেপে দেখলেন উচ্চতা ২৯০০০ ফুট; তিনি বেশ ক'টি প্রেক্ষাপট থেকে পরিমাপ নিলেন এবং দেখলেন উচ্চতার হেরফের হচ্ছে না। তিনি সার্ভেয়ার জেনারেলকে জানালেন এবং অংক কষে দেখলেন এর চেয়ে উঁচু আর কোনো শৃঙ্গ হিমালয় নেই, পৃথিবীতেই নেই। 

১৮৫২ তে আবিষ্কৃত হলেও আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় অনেক লম্বা সময় লেগে যায়। ৪ বছর পর ১৮৫৬ সালে ঘোষণা করা হয় এবং শৃঙ্গের নাম দেওয়া হয় মাউন্ট এভারেস্ট। নামটি পছন্দ করেছেন সার্ভেয়ার জেনারেল অ্যান্ড্রু স্কট ওয়া। এই নাম নিয়ে ভারতবাসীর একটি আক্ষেপ রয়েছে- এর আবিষ্কারক এবং উচ্চতা নির্ধারক ব্যক্তি রাধানাথ শিকদারের নামেও তো হতে পারত মাউন্ট রাধানাথ। তবে এ নিয়ে রাধানাথও নিস্পৃহ ছিলেন এবং এমনকি জর্জ এভারেস্টও তার নাম সর্বোচ্চ এই শৃঙ্গের সাথে সংযুক্ত করার ব্যাপারে আপত্তি করেছেন। 

হিমালয় পর্বত ও রাধানাথ শিকদার

ঘোষণার আহে, বিভিন্ন কৌণিক দূরত্ব থেকে উচ্চতা মেপে তার গড় নিয়ে রাধানাথ শিকদার আবারও দেখলেন উচ্চতা পুরোপুরি ২৯০০০ ফুট। কিন্তু সার্ভেয়ার জেনারেল মনে করলেন এই সংখ্যাটি একটি ভ্রান্ত ধারণা দিতে পারে, অনেকেই ভাবতে পারেন আনুমানিক ২৯০০০ ফুট।

সুতরাং তিনি নিজ থেকে ইচ্ছে মতোন আরও ২ ফুট যোগ করে উচ্চতা নির্ধারণ করলেন ২৯০০২ ফুট। ১০০ বছর পর ১৯৫৫ সালে আধুনিক যন্ত্রপাতির সহায়তা নিয়ে পুনরায় যখন হিসেব করা হলো দেখা গেল উচ্চতা ২৯০২৯ ফুট। আবার বিজ্ঞানী ও পর্যবেক্ষকরা এটাও আবিষ্কার করলেন এভারেস্টের উচ্চতা প্রতিবছর কিছুটা বাড়ছে এবং এই বৃদ্ধি ঘটছে শৃঙ্গের উত্তর পূর্ব দিকে। আর একদা সর্বোচ্চ মনে করা কাঞ্চনজংঘার উচ্চতা ২৮১৬৯ ফুট।

কাঞ্চনজঙ্ঘার আঁকা ছবি, সিঙ্গালাল উপত্যকার দিক থেকে । শিল্পী সাগ্লিনভেইট, ১৮৫৫

রাধানাথ শিকদারের খ্যাতি বিশ্বব্যাপী আরো ছড়াতে পারত। তবে এটাও স্মর্তব্য যখন ভারতবর্ষের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিজ্ঞানের মেধার সংবাদ দেশিয় সীমান্ত অতিক্রম করেনি, জার্মান ফিলোসোফিক্যাল সোসাইটি ১৮৬৪ সালে তাকে সম্মানজনক সদস্যপদ উপহার দিয়েছে।

ভারতীয় জরিপের অন্যতম অগ্রদূত রাধানাথ শিকদার উপনিবেশবাদ বিরোধী ভূমিকাতে ছিলেন কঠোর। তিনি ইংরেজ ম্যাজিস্ট্রেটের শ্রমশোষণের বিরোধিতা করে ২০০ টাকা দণ্ডও দিয়েছেন। দীর্ঘদিন ইংরেজ সহকর্মীদের সাথে কাজ করে আচরণ এবং কথনে বেশ সাহেবিয়ানা এলেও প্যারীচাঁদ মিত্রের সাথে মিলে মিশে ১৮৭৫ সালে 'মাসিক পত্রিকা' প্রকাশ করেন এবং নিজেও বাংলায় লিখতে শুরু করেন। তিনি বাংলা সহজীকরণের উপর জোর দেন এবং বলেন 'যে ভাষা স্ত্রী লোক বুঝিবে না, তাহা আবার বাংলা কি? (রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গ সমাজ থেকে উদ্ধৃত।) অকৃতদার এই বিজ্ঞানী শেষ জীবনে চন্দননগরে গঙ্গার ধারে একটি বাগান বাড়ি কিনে সেখানেই অবস্থান করেন। ১৮৭০-এর ১৭ মে রাধানাথ শিকদার প্রয়াত হন।

ভূ-পৃষ্ঠের সর্বোচ্চ স্থানটি যে মানুষের নাম ধারণ করে সগর্বে মাথা উঁচিয়ে আছে তার নাম মাউন্ট এভারেস্ট, হিমালয়ের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এবং যেই মানুষটির নামে এ পর্বতের নামকরণ হয় তার নাম জর্জ এভারেস্ট।

১৮৫২ সালে সনাক্ত ও পরিমাপ কাজ সমাপ্ত হলেও ১৮৫৬-র আগে হিামলয়ের এবং পৃথিবীর সর্বোচ্চ শিখরটি (তখন ১৫ নম্বর শিখর হিসেবে পরিচিত) যে এভারেস্ট তা পৃথিবীর জানা হয়নি। উচ্চতা প্রকাশিত হওয়ার আর আজ অবধি হিমালয়ের সর্বোচ্চ শিখরকে চ্যালেঞ্জ করে আর কোনো শৃঙ্গ প্রতিষ্ঠিত হতে পারেনি।

হিমালয়ের একটি বিশ্বরেকর্ড আমাদের অনেকেরই অজানা। তা হচ্ছে পৃথিবীতে হিমালয় হচ্ছে সবচেয়ে বয়োকনিষ্ঠ পর্বতমালা, বয়স বড়জোর ৭০ মিলিয়ন বছর আর সবচেয়ে বয়স্ক দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাকনজা পর্বতমালা, সাড়ে ৩ বিলিয়ন বছর, হালে বলা হচ্ছে আরো বেশি ৩.৮ বিলিয়ন বছর।

১৯২৪ সালে এভারেস্ট জয় করতে গিয়ে নিরুদ্দিষ্ট হয়ে যান ব্রিটিশ অভিযাত্রী জর্জ ম্যালোরি। অনেক বাধা বিপত্তি ও হিমশীতল মৃত্যু পেরিয়ে ২৯ মে ১৯৫৩ সালে এডমন্ড হিলারি এবং শেরপা তেনজিং নোরকে সর্বোচ্চ শিখরে আরোহন করেন, এটাও মানুষের বিশাল বিজয়ের অন্যতম একটি অধ্যায়।

কিন্তু এই এভারেস্ট কিংবা হিমালয় পর্বত যার নামানুসারে সেই জর্জ এভারেস্ট কখনো হিমালয় পর্বত দেখেননি। 

ভারতবর্ষের মানচিত্র প্রণয়নের পিতৃপুরুষ জেমস রেনেল। তিনি বাংলার প্রথম সার্ভেয়ার জেনারেল ছিলেন। তার চেয়ে ৪৮ বছরের ছোট জর্জ এভারেস্ট ১৬ বছর বয়সে কিছু সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়ে যখন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সৈনিক কর্মচারি হিসেবে ভারতবর্ষে এলেন তিনি ভাবেনওনি তাকে ১৩ বছর ভারত সরকারের সার্ভেয়র জেনারেলের দায়িত্ব পালন করতে হবে।
 
জর্জ এভারেস্টের জন্ম ৪ জুলাই ১৭৯০, ব্যাপ্টাইজড হয়েছেন লন্ডনের গ্রিনিচের একটি চার্চে। তার জন্মস্থান নিয়ে অনিশ্চিয়তা রয়েছে গ্রিনিচ হতে পারে কিংবা ওয়েলসের  ব্রেকনশায়ারও হতে পারে। বাবা সলিসিটর, দাদার বাবা চার্চ স্ট্রিটের কসাই। জর্জ বাকিংহামশায়ার রয়াল মিলিটারি কলেজে প্রশিক্ষণ নেন। ১৮০৬ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ক্যাডেট হিসেবে যোগ দেন। ব্রিটিশ বেঙ্গল আর্টিলারির সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসেবে কমিশন লাভ করে ভারতযাত্রা করেন।

গণিত ও জ্যোর্তিবিজ্ঞানে তার জ্ঞান জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের নজরে আসে। লেফটেন্যান্ট গভর্নর স্যার স্ট্যাম্পফোর্ড র‌্যাফলস তাকে জাভা দ্বীপ জরিপের দায়িত্ব দেন। ২ বছর পর ১৮১৬ সালে ভারতে এসে গঙ্গা ও হুগলি নদী সম্পর্কে জ্ঞান আরোহন করেন, তারপর কোলকাতা থেকে বেনারস পর্যন্ত ৪০০ মাইল দীর্ঘ পথের জরিপ সম্পন্ন করেন। তখন ভারতে 'গ্রেট ট্রিগোনোমেট্রিকাল সার্ভে' (জিটিএস) চলছিল।

গ্রেট ট্রিগনোমেট্রিক্যাল সার্ভের ক্যালকাটা বেসলাইন, শিল্পী জেমস প্রিন্সেপ, ১৮৩২

এর দলপতি কর্নেল উইলিয়াম ল্যাম্বটন তাকে চিফ অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে নিয়োগ দেন। ১৮২৩ সালে কর্নেল ল্যাম্বটনের মৃত্যুর পর তিনিই দায়িত্ব নেন। তিনি ম্যালেরিয়া ও বাতে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী হন। ক'বছর ইংল্যান্ডে কাটিয়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সাথে দরকষাকষি করে জরিপের উত্তম যন্ত্রপাতি আনার ব্যবস্থা করেন। ১৮৩০ সালে ফিরে এসে ভারতের সার্ভেয়ার জেনারেল নিযুক্ত হন এবং একই সঙ্গে জিটিএসের কাজও চালিয়ে যান। প্রায় তের বছর দায়িত্ব পালনের পর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি টমাস জার্ভিসকে তার উত্তরসুরী নির্বাচিত করে।

গ্রেট ট্রিগোনোমেট্রিক সার্ভে অফ ইন্ডিয়া, ভারতীয় সাইন্স ও টেকনলজি মহাফেজখানা

জার্ভিস রয়েল সোসাইটিতে বক্তৃতা দিতে গিয়ে জর্জ এভারেস্টের কার্যপদ্ধতি ত্রুটিপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন। উত্তরে জর্জ এভারেস্ট সোসাইটির প্রেসিডেন্ট প্রিন্স অগাস্টাস ফ্রেডরিককে লিখেন: যে বিষয়ে সোসাইটির কোনো জ্ঞান নেই সেই সোসাইটি যেন তার কাজ নিয়ে নাক না গলায়। শেষ পর্যন্ত জার্ভিসের নিয়োগ বাতিল হয়। এবং তার প্রধান সহযোগী অ্যান্ডু স্কট ওয়াকে ভারতের সার্ভেয়ার জেনারেল করার আদেশ আদায় করে নেন।

অ্যান্ড্রু স্কটও অত্যন্ত দক্ষ সার্ভেয়ার। তিনিই বাঙ্গালি রাধানাথ শিকদারকে তার সার্ভে মিশনের গুরুদায়িত্বসমূহ প্রদান করেন। তার অন্যতম ছিল হিমালয় জরিপ এবং সে আমলের মানচিত্র প্রণয়ন।

কর্নেল ওয়ার আঁকা এভারেস্টের ভৌগোলিক স্কেচ

হিমালয় জরিপের সময়ই রাধানাথ শিকদার হিমালয়ের সর্বোচ্চ শিখর আবিষ্কার করলেন। গুরু জর্জ এভারেস্টের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতেই উত্তরসূরী অ্যান্ড্রু স্কট ওয়া সর্বোচ্চ শিখরের নাম দিলেন মাউন্ট এভারেস্ট। অনেক আপত্তির পরও (এমন কি জর্জ এভারেস্ট নিজেও আপত্তি করেছেন) রয়াল জিওগ্রাফিক্যাল সোসাইটিকে দিয়ে এই নামটি অনুমোদন করিয়ে আনলেন। তিনি নাইটহুড লাভ করেন।

৯ ডিসেম্বর ১৮৬৬ লন্ডনে হাউড পার্ক গার্ডেনে স্যার এভারেস্ট মৃত্যুবরণ করেন।  
 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.