প্যারডির বাঙ্গালী

ইজেল

03 April, 2021, 10:15 am
Last modified: 03 April, 2021, 04:52 pm
সজনীকান্ত যখন ভান্ডার-রক্ষককে (স্টোরকিপার) হুশিয়ার করছিলেন তখন তার আশেপাশে সাধারণ চোর ছ্যাঁচোড় আর ছিঁচকে সিধেলই ছিল। কালে কালে তাদের অনেক পদোন্নতি হয়েছে। ভান্ডারীর কাছেই এখন রাজকোষ, চোর ছ্যাঁচোড়রাই ভিআইপি সিআইপি, ভান্ডার লুটেপুটে সবাই মিলেমিশেই খাচ্ছে। চোর-ছ্যাঁচোড়, ছিঁচকে সিধেল আর ভান্ডারী সবাই মানি লন্ডারিং-এর কারিগর...

ছোট মাপের বাঙ্গালিদের নিয়েই শুরু করি। চাকর-বাকর এবং নিতান্ত প্রান্তজনেরা তো আর লেখকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইন জুড়ে দিয়ে ফাঁসিয়ে দেবার ক্ষমতা রাখে না। বড় মাপের সেরা বাঙ্গালিদের ভয় কে না পায়? সুতরাং সজনীকান্ত দাসের 'ভান্ডারী হুশিয়ার' দিয়েই শুরু করি। কাজী নজরুল ইসলাম যা ভাবেন, ভাবুন।

চোর ও ছ্যাঁচোড়ে, ছিঁচকে সিঁধেলে দুনিয়া চমৎকার
তলপি-তলপা-তহবিল নিয়ে ভান্ডারী হুশিয়ার
বাজার করিয়া চাকর বানাজি ভারী করে ফেরে ট্যাক
ঘি তেল চুরিতে বামন ভায়ার হয়েছে বিষম 'ন্যাক'।
ভাত নিয়ে ঘরে বাড়ী যায় দাসী আঁচল তাহার দ্যাখ
মজাদার ভারী এ দুনিয়াদারী সামলিয়ে চলা ভার--

সজনীকান্ত যখন ভান্ডার-রক্ষককে (স্টোরকিপার) হুশিয়ার করছিলেন তখন তার আশেপাশে সাধারণ চোর ছ্যাঁচোড় আর ছিঁচকে সিধেলই ছিল। কালে কালে তাদের অনেক পদোন্নতি হয়েছে। ভান্ডারীর কাছেই এখন রাজকোষ, চোর ছ্যাঁচোড়রাই ভিআইপি সিআইপি, ভান্ডার লুটেপুটে সবাই মিলেমিশেই খাচ্ছে। চার্লস ম্যাটকাফের বাংলার গ্রাম যেমন আত্মনির্ভরশীল লিটল রিপাবলিক ছিল, এ গায়ের মানুষের যেমন ও গায়ে যাবার প্রয়োজন হতো না, একালের ভুবনায়ন পুরো প্রক্রিয়াটাই পাল্টে দিয়েছে।

বাঙ্গালি বাবু

চোর-ছ্যাঁচোড়, ছিঁচকে সিধেল আর ভান্ডারী সবাই মানি লন্ডারিং-এর কারিগর। সেখালে ভান্ডারী হুশিয়ার হতেন, একালে ভান্ডারী তো গুদামের চাবিই তুলে দিয়েছেন তাদের হাতে। সেকালের সিঁধেল বাঙ্গালির সম্পদ হোক তা চুরির, দেশেই থাকতো; একালে তা চলে যায় সেকেন্ড হোম কি থার্ড হোমে, সুইস ব্যাংক কিংবা কোন অফশোর আর্থিক প্রতিষ্ঠানে। কখনো কখনো যদি বরাত মন্দ থাকে তাহলে পানামা পেপার্স, উইকিলিকস কিংবা বাড়ির পাশের তেহেলকা ডট কমের মতো কাগজ গোপন অর্থের খানিকটা জানিয়ে দেয়। তাতে কি দাম কমে? একটুও না। ধপ করে চোয়াল বসে যায়--ও বাব্বা, এত্তো ধনী। সামাজিক মর্যাদা বাড়ে, সংসদ সদস্য হবার সম্ভবনা উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।

নজরুলের কবিতা প্যারাডি করে সজনীকান্ত যাদের চোর ও ছ্যাঁচোড় বলেছিলেন তাদের স্ট্যাটাস এখন উপরে। তাদের হাত অনেক লম্বা। 
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপর ভর দিয়ে সরিৎশেখর মজুমদার নেতার নাম শুনে পিতার নাম ভুলে যাওয়া বাঙ্গালির দাস্যবৃত্তির একটি চিরায়ত চিত্র এঁকেছেন। সরিৎশেখরকে কেউ চ্যালেঞ্জ করবেন--বাঙ্গালী হয়ে বাঙ্গালিপনা নিয়ে ঠাট্টা-মস্করা করার অভিযোগে? পারবেন না, তিনি আটঘাট বেধে তথ্য ও উপাত্ত নিয়ে বাঙ্গালির চোখে চোখ রেখেই লিখতে বসেছেন:

এখন, আর দেরী নয়, ধরগো তোরা
হাতে ধামা ধরগো
আজ, কাজ গুছিয়ে ফিরতে হবে,
সামনে নেতৃবর্গ।

রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল

মন্দিরে শঙ্খ বেজে উঠেছে, লগ্ন বয়ে যাচ্ছে, তেলের অর্ঘ্য হাতে নিয়ে পুজারী সকল প্রস্তুত :

এখন যার যা কিছু আছে ভাঁড়ারে
সাজা পূজার থালার পরে
 খোসামোদের উৎসধারায়
 নেতাদের যত ঘট ভরগো।

ঘুষবান্ধব নেতাকে আক্ষরিক অর্থে তৈল মর্দনই যথেষ্ট নয় তাকে ক্যাশ ও কাইন্ড সবই দিতে হবে--নেতা ভজন মোটেও পাশ্চাত্য কেতার পলিটিক্যাল সাপোর্ট নয়। এটা প্রাচ্য কেতায় 'যা কিছু আছে দীনহীনের সকাল দেবে উজাড়ি'--গব্যঘৃত, সঞ্চিত সিঁকি ও আধুলি, রুপার মাদুলি, স্ত্রীর অবশিষ্ট যৌবন যদি থাকে তাও, স্ত্রীতে যদি না পোষায়   ষোড়ষী কন্যাও দেবে--লগ্ন থাকতেই নেতাপূজা মেনে নিতে হবে। কিন্তু এতো কিছু পূজারী পাবে কোথায়?

ওরে নিতেও হবে
ঘুষ দিতেও হবে
দেরী কেন করিস তবে,
বাঁচতে যদি হয়--বেঁচেনে;
মরতে হয়ও মরগে।

এমনকি বাঙ্গালী কবিও ধামা ধরা কাব্য রচনায় যথেষ্ট কামেল বলে সেকালে ও একালে প্রতিষ্ঠা করতে সমর্থ হয়েছেন।

বাঙ্গালির বিবর্তন, ওল্ড বেঙ্গলের বিপরীতে নিউ বেঙ্গল

জ্যোতির্ময় ঘোষ রবীন্দ্রনাথের উপরই ভর করেছেন কিন্তু ধোলাই করেছেন খাদক বাঙ্গালিদের। মস্তিষ্কের মাপে বাঙ্গালী যতো পশ্চাদপদই হোক না কেনো ভুড়ির সম্মুখ টান তাকে পিছন থেকে দুবিঘত সামনে টেনে আনে।

হেথায় আশিষ আর নিরামিষ
কেও খায় চিনি রস শুষে শুষে
কেহ শুধু স্যাকারিন।
রবির বাসর খুলিয়াছে দ্বার
সেথা হতে শুধু আসিছে খাবার
খাবে আর খাবে, চাটিয়ে চুটিয়ে
যাবে না ফিরে
এই আসরের মহাখাবারের
থালার তীরে।

খানার আসরে বুদ্ধিজীবী বাঙ্গালীও তার ক্ষুধা জানান দিতে কসুর করেন না। এ কালেও না, ধনীর ভোজেও না, দূতাবাসের পানীয় পরিবেশনাতেও না। গোগ্রাসে তাকে খেতেই হবে, পান করতেই হবে যতোক্ষণ ফ্রি পাওয়া যায়। মহাখাবারের আসরে তাদেরও নিমন্ত্রণ:

এসে হে শিল্পী এসো গীতিকার
কবি ও গল্পকার
এসো এসো আজ তুমি নির্লাজ
এসো হে নাট্যকার।

সরিৎশেখর মজুমদার রবি-আছরে থেকে খাদক বাঙ্গালীর যে চিত্র তুলে থরেছেন তাতে  পাকস্থলি কথা বলে, হস্তও সরব হয়ে উঠে :

পেট বলেছে 'খাব খাব'
হাত বলেছে খাই
কণ্ঠ বলে সব শিখেছি আমিত' আর নাই।
লোভ সে বলে  রইনু চুপে
জিভের ডগায় বহ্নিরূপে।

সংসার যে ধোকা, বোকা রামপ্রসাদ বুঝেছিলেন আর তার গানের বানী বদলে দিয়ে আজু গোসাই বসিয়ে নিলেন :

এ সংসার রসের কুটি
হেখা খাই দাই আর মজা লুটি
ওরে যার যেমন মন তার তেমন ধন
মন করবে পরিপাটি।

রজনীকান্ত সেনও রবি ঠাকুরের তহবিল টেনে মুদ্রা পাল্টে দিয়েছেন।তাতে বাঙ্গালী নারী ও নর বেশ চেনা যায়:

আমরা মাদুরে পড়িয়া নিদ্রা যাই গো,
আর তোমাদের চাই যদি:
আমাদের শাক-পাতাটা হলেই চলে গো,
আর তোমরা পোলাও দধি।

এমনকি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের মতো শুদ্ধ ছান্দসিক কবিও উর্বশীর নিরামিষ নিমন্ত্রণে নাতিদীর্ঘ দীর্ঘশ্বাস ছেড়েছেন :

ফিরিবে না ফিরিবে না অস্ত গেছে সে সৌরভ- শশী
পাকস্থলী--বাসিনী সর্বশী
তাই আছি নিরামিষ নিমন্ত্রণ আনন্দ উচ্ছাসে
কার মহাবিরহের তপ্তশ্বাসে মিশে বহে আসে--

বাঙালি ফুলবাবু

সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত বাঙ্গালির মদ্য ও মাংস বাসনার মদ্য অংশ পৃথক করেছেন ডি এল রায়ের 'বঙ্গ আমার জননী আমার' কবিতাকে 'মদিরা মঙ্গল' বানিয়ে:

মদ্য আমার। পানীয় আমার।
সরাব আমার পেগ
কেন কোম্পানি নজর দিল গো
কেন হল এই ডিউটি প্লেগ?...
নিরামিষ এই যকৃতটা শুধু
বৈরাগী সম করিছে শেক
রাজ্ঞী আমার। মাগগি আমার
ভাগগি আমার। আমার পেগ!

তিনি এই রচনায় পেগ, ডিউটি প্লেগ, শেক ইংরেজি হরফেই বসিয়েছেন। রামপ্রসাদের 'দে মা তবিলদারি' শরৎচন্দ্র পন্ডিত বার্ধক্য পীড়িত বাঙ্গালির উপর প্রয়োগ করেছেন:

আমায় দে মা রাজা করি
(আর) কাঙ্গাল হয়ে থাকতে নারি।
দন্ত অন্ত হলো গো মা, কিসে চিবুই কড়াই-মুড়ি
এখন হালুয়া ভিন্ন দিন চলে না রাবড়ি হলে খেতে পারি।

এখানেই শেষ নয়: 

খালি পেটে বাতাস ঢুকে 
কেবল ফুলে যাচ্ছে ভূড়ি
ও তুই টাকা দিতে আমায় ভুলে
টাক দিলি মা কপাল জুড়ি।
 
নলিনীকান্ত সরকার কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের কবিতা দুমড়ে মুচড়ে একটি বাস্তবের বাংলাদেশ সৃষ্টি করেছেন। ম্যাকলে সাহেব এদেশের মানুষকে যেমন মূল্যায়ন করেছেন তাই প্রতিভাত নলিনীকান্তে।

কোন দেশেতে তরুলতা সকল দেশের চাইতে প্রবল,
কোন দেশেতে গেলেই খেতে হয় রে জাত-সাপের ছোবল,
কোথায় ফলে পাকা এচোড়, অকালে কুষ্মান্ডরে
সে আমাদের বাংলাদেশ, আমাদেরই বাংলারে।

নলিনীকান্ত ক্ষুদিরামের মুখে মুখে ফেরা সেই গান 'একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি'র একটি অসাধারণ উপসংহার টানলেন :

আবার সুদিন আসলে পরে
জন্মিব বাঙ্গালির ঘরে মা গো--
আমার ফাটা কপাল দেখে চিনবে জগৎবাসী।

রবীন্দ্রনাথের কবিতার স্বর ও ছন্দ অক্ষত রেখে থিম পাল্টে দিয়েছেন বলাই চাঁদ মুখোপাধ্যায় ওরফে বনফুল। তিনি সুযোগ সন্ধানী বাঙ্গালী চরিত্র একেছেন :

পৃথিবী যে রঙ্গমঞ্চ একথা সে বুঝেছে প্রচুর
ইংরেজ-বিদ্বেষী আজ, কল্য তাই রায় বাহাদুর।
নিত্য নব অভিনয় সখ
রাম বা রাবন কভু, কভু মন্ত্রী, কভু বিদুষক!
সে যেন বুঝেছে ভুমা
উচু-নীচু ভাল-মন্দ চড় কিংবা চুমা
আসল নকল
তার কাছে সমান সকল।

নাক কেটে বাঙ্গালী যে পরের যাত্রা ভঙ্গ করে এতো বাঙ্গালির হাজার বছরের সংস্কৃতির অংশ। অজিতকৃষ্ণ বসু এতে আরো একটি ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছেন:

'এতো বড় রঙ্গ দাদা, এতো বড় রঙ্গ:
কাটিয়া পরের নাক নিজ যাত্রা ভঙ্গ।"

রামপ্রসাদী গানকে আমপেসাদী করে গম্ভীরানন্দ লিখলেন:

আমায় দাও মা মন্ত্রীগিরি।
(আমি) নেমকহারাম নই শঙ্করী...
(যদি) সুপারিশ একটু কর তবে
গাড়ি বাড়ি করতে পারি।

পিনাকীশঙ্কর রায় চৌধুরী রবীন্দ্রনাথের কাঁধে চেপে বাঙ্গালী চরিত্রের একটি উপসংহার টেনেছেন :

হে মোর দুর্ভাগা দেশ যাদের করেছ ভোটদান
জিতেলি সে নাহি রবে তোমাদের সবার সমান
এমএলএ এমপি কার
তোমরা পাঠালে যারে
অ্যাসেম্বেলিতে ভাগ্যগুণে পেয়ে গেলে স্থান
জিতে গেলে থাকে না সে তোমাদের সমান

যদি শেষ পর্যন্ত তিনি মন্ত্রী হয়েই যান তাহলে তার ভোটাররা কি প্যাবেন? তারা পাবেন দুর্লভ 'কাঁচকলা আর অশ্বডিম্বের আধখান'।
রবীন্দ্রনাথের 'তোমারি গেহে পালিছ স্নেহে, তুমিই ধন্য ধন্য হে' গানের প্যারডি করেছেন ন্বয়ং নজরুল: 

'সুপার (জেলের) বন্দনা' 

তোমারি জেলে পালিছ ঠেলে, তুমি ধন্য ধন্য হে।
আমারি গান তোমারি ধ্যান, তুমি ধন্য ধন্য হে
রেখেছ সান্ত্রী পাহারা দোরে,            আঁধার কক্ষে জামাই আদরে
বেঁধেছ শিকল প্রণয়ডোরে, তুমি ধন্য ধন্য হে।

কবি রাধারমণ শীল ১৬৮০ সালেই নিশ্চিত হয়ে গেছেন বাঙ্গালির ভাগ্যে সুখ বুঝি আর নেই। কারণটা দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। আগে এক টাকায় ৮ সের তেল পেয়েছেন, এখন টাকায় তিন সেরও মেলে না। অল্প মূল্যের নুনের বাজারেও লেগেছে বিষম আগুন। বাঙ্গালী যে তণ্ডুল ভরসা করে টিকে ছিল তাও ভন্ডুল হয়ে গেছে সব রফতানি হচ্ছে বিদেশে:

আগেতে টাকায় ছিল দুধ কুড়ি সের
আট সের পাইনাকো অদৃষ্টের ফের
ঘৃত ছানা মাখন কি করিব আহার
শাক-ভাত খেয়ে কাল কাটা হল ভার
এদিকে ওদিকে দুদিকে মারা যাই
বাঙ্গালীর ভাগ্যে সুখ বুঝি আর নাই।

বাবু রিক্সায় চেপে সান্ধ্যভ্রমণে বের হয়েছেন

বেপর্দা নারী বাঙ্গালী মুসলমান কবি আহমদ হেজাব উদ্দিনের অস্বস্তির কারণ। ১৮৭০ সালে ঢাকা শহরের বেপর্দা আওরত বয়ান লিখেছেন তিনি:

শোনাহ আল্লাহর বান্দা করিয়া গউর;
আওরত রাখহ যার পরদার ভিতর।
এই দেশে আওরত দেখি বড় বদচাল।
বালেগ বেদাওনি কত নারী এছা বদরত।
যেখানে সেখানে ফিরে নাহি করে ডর।
বাড়ী বাড়ী যায় তারা হাটিয়া হাঁটিয়া
রঙ্গেরসে ফেরে যায় বেগানার বাড়ী।
এ ধার ও ধারে ফিরি হাতে হাতে ধরি।

কবি আরও অসন্তুষ্ট বেপর্দা স্বজাতির উপর বাড়ির উপর পর্দার আছর না থাকায় ভিক্ষুক অন্দরে আওরত পর্যন্ত পৌঁছে যায়- এ তো ভীষণ শরম- পরলোক ঢুকে পড়ে অন্দরে। এখানে পরলোক মানে ইহলোকের বিপরীত কিছু নয়, এটা অন্য লোক বেগানা পুরুষ।

গোবিন্দ্র চন্দ্র দাস তার 'ভাওয়াল' কবিতায় যাদের তুলে ধরেছেন তারা অবশ্যই বাঙ্গালী, পূর্ববঙ্গের রাজধানী ঢাকার নিকটেই বসবাস।

ঘোর স্বার্থপর এরা নিতান্ত নির্বোধ,
জঘন্য স্বজাতিশত্রু স্বজাতির চেয়ে,
নাহি জানে প্রতিকার কিংবা প্রতিরোধ
কাপুরুষতায় আছে অস্থিসজ্জা ছেয়ে!
নাহি লজ্জা, নাহি মান, নাহি অপমান,
সদা থাকে অধোমুখে লাথি ঝাটা খেয়ে
না আছে আপন স্বত্ব অধিকার জ্ঞান
অকূলে ভাসিছে 'পানা' কূল নাহি পেয়ে।

নারায়ন দাশশর্মার দেশবন্দনা আর যদুভট্ট মহাশয়ের বজ্জাতীয় সঙ্গীত দিয়ে উপসংহার টানি:

তোমার ক্যাবলাকান্ত মন্ত্রীগুলো রাহু আর শনি
তোমার গামছা বাঁধা পেটে, কুমির ছিন্নবসনী।
ওগো মা তোমায় দেখে দেখে খাকি হাঁ করে
এ কী হাল হয়েছে তোমার তুমি এমন হাঘরে।
এবং
বাংলার মাটি বাংলার জল
বাংলার বায়ু বাংলার ফল
শূণ্য হোক শূণ্য হোক 
শূণ্য হোক হে হনুমান।

 

 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.