আফগানিস্তানের রিহ্যাবে মানুষের মাংস খাচ্ছে মানুষ!

আন্তর্জাতিক

টিবিএস ডেস্ক
09 February, 2022, 02:10 pm
Last modified: 09 February, 2022, 03:56 pm
“তারা একজনকে মেরে আগুনে পুড়িয়েছে। এরপর তার নাড়িভুঁড়ি পর্যন্ত গিলে খেয়েছে।” 

আফগানিস্তানের মাদক রিহ্যাব কেন্দ্রে আটকে রাখা হয়েছে শত শত মাদকাসক্তকে। চিকিৎসার জন্য তাদেরকে রিহ্যাব কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলেও তারা এখন আফিম কিংবা হেরোইনের বদলে খাচ্ছে মানুষের মাংস। সম্প্রতি আফগানিস্তানের রিহ্যাব কেন্দ্র পরিদর্শন করে আসা ডেনমার্কের এক সাংবাদিক এমনটিই দাবি করেছেন।

ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদন বলা হয়েছে, গত মাসে ডেনমার্কের ওই সাংবাদিক রিহ্যাব কেন্দ্র থেকে ছাড়া পাওয়া এক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেন। ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন, তালেবান পরিচালিত মাদকাসক্তদের চিকিৎসা দেওয়া ওই ক্লিনিকের ভিতরের পরিবেশ খুবই ভয়ঙ্কর। সেখানে রোগীদের ঠিকমতো খেতে দেওয়া হয় না। বেশিভাগ দিনই তারা না খেয়ে থাকেন।

ছবি: এএফপি

এমনকি রোগীদের স্বাস্থ্যের প্রতিও যত্ন নেওয়া হয় না সেখানে। পর্যাপ্ত খাবার এবং সময়মত যথাযথ চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যু হচ্ছে অনেকেরই। 

আবদুল নামের ওই ব্যক্তি আরও দাবি করেছেন, রিহ্যাব কেন্দ্রের পরিস্থিতি দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে। খাবার না পেয়ে ধীরে ধীরে হিংস্র হয়ে উঠছেন সেখানে চিকিৎসা নিতে যাওয়া রোগীরা।

আবদুলের দাবি, সম্প্রতি ক্লিনিকের এক ব্যক্তিকে খুন করে তার মাংস খেয়েছেন কয়েকজন রোগী। এমনকি ওই ক্লিনিকের ভিতরের পার্ক থেকে একটি বিড়াল ধরে এনে, তার কাঁচা মাথা পর্যন্ত খেয়েছেন একজন।

ছবি: এএফপি

তিনি বলেন, "তারা (রোগীরা) একজনকে মেরে আগুনে পুড়িয়েছে। এরপর তার নাড়িভুঁড়ি পর্যন্ত গিলে খেয়েছে।" 

দীর্ঘকাল ধরেই আফগানিস্তান বিশ্বের বৃহত্তম অবৈধ আফিম এবং হেরোইন সরবরাহকারী দেশ হিসেবে পরিচিত। ২০১৭ সালে বিশ্বের মোট সরবরাহের ৮০ শতাংশেরও বেশি আফিম উৎপাদন করেছিল দেশটি। জাতিসংঘের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ওই বছর ১.৪ বিলিয়ন ডলারের আফিম এবং হেরোইন উৎপাদন করেছিল আফগানিস্তান। 

ছবি: এএফপি

আফিম উৎপাদন ও বিদেশে রপ্তানিই মূলত তালেবানের আয়ের প্রধান উৎস। জাতিসংঘের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০১৮ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে মাদকব্যবসা থেকে তালেবান আনুমানিক ৪০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি আয় করেছে। ২০২১ সালের মে মাসের এক প্রতিবেদনে একজন মার্কিন কর্মকর্তার উদ্ধৃতি উল্লেখ করে দাবি করা হয়েছে, তালেবান তাদের বার্ষিক আয়ের আনুমানিক ৬০ শতাংশ পর্যন্ত অবৈধ মাদকদ্রব্যের মাধ্যমেই অর্জন করে থাকে।

গেল বছরের শেষার্ধে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহারের পর কাবুলের ক্ষমতা দখল করে নেয় তালেবান। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত দেশটিতে প্রায় সব ধরনের আন্তর্জাতিক সহায়তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ কারণে আফগানের অর্থনীতি এখন চরম সংকটের মুখে। বিশ্লেষকরা বলছেন, শীঘ্রই এই পরিস্থিতি পরিবর্তনের তেমন সম্ভাবনা নেই। 

ছবি: এএফপি

অন্যদিকে, কাবুলে ইউনাইটেড নেশন অফ ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইম (ইউএনওডিসি)-এর প্রধান সিজার গুডস জানিয়েছেন, আফিমের উৎপাদন আরও বাড়িয়েছে তালেবান। ফলে আগের তুলনায় মাদকের দাম কমেছে; দেশটিতে সহজলভ্য হচ্ছে মাদক। এর কারণে আরও বেশি সংখ্যক মানুষ মাদকাসক্ত হচ্ছেন।


 

  • সূত্র: ডেইলি মেইল
     

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.