সবুজ বিশ্ব গড়ায় অগ্রগামী যারা

আন্তর্জাতিক

টিবিএস ডেস্ক 
22 January, 2020, 07:20 pm
Last modified: 22 January, 2020, 07:27 pm
সবুজ বিশ্ব গড়ায় অগ্রণী ভূমিকা রাখা তেমন ৩০ ব্যক্তি, সংস্থা ও ধারা চিহ্নিত করেছেন ব্লুমবার্গের প্রতিবেদক ও সম্পাদকরা। জলবায়ু সংকট নিরসনে সম্ভাব্য সমাধান দিচ্ছে এসব ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও জোট। 

প্রতিনিয়ত দাবানল, খরা ও বন্যার মতো দুর্যোগের বিপুল সংবাদ জলবায়ু সংকট আরও ঘনীভূত হওয়ার বার্তা দিচ্ছে। তবে এমন বাস্তবতার মধ্যেও আশার আলো দেখাচ্ছেন অনেকে। 

সবুজ বিশ্ব গড়ায় অগ্রণী ভূমিকা রাখা তেমন ৩০ ব্যক্তি, সংস্থা ও ধারা চিহ্নিত করেছেন ব্লুমবার্গের প্রতিবেদক ও সম্পাদকরা। জলবায়ু সংকট নিরসনে সম্ভাব্য সমাধান দিচ্ছে এসব ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও জোট।

পরিবেশ নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিদের মধ্যে যেমন ইলন মাস্ক বা মার্ক কার্নির মতো পরিচিতরা রয়েছেন, তেমনি রয়েছেন স্বল্প পরিচিত পরিবেশবাদী রাজনীতিকরাও, যারা খুব দ্রুতই বিশ্বের চতুর্থ বৃহৎ অর্থনীতির হর্তাকর্তা হতে পারেন।  

২০২০ সালে সবুজায়নকেন্দ্রিক ফোরামগুলোতে আগ্রহের কেন্দ্রে থাকবেন এসব উদ্যোক্তা, নীতিপ্রণেতা, প্রকৌশলী ও চিন্তক। 

পাঠকদের সামনে তাদের মধ্যে অপেক্ষাকৃত বেশি আলোচিত কয়েকজনের পরিচিতি তুলে ধরা হলো। 

মারিও আরারিপ: বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কাসা দোসভেন্তোস এনারজিয়াস রেনোভাভিস এসএর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মারিও আরারিপ। 

তিনি সম্প্রতি নিজের ডিজেল ব্যবহারকারী গাড়ি প্রস্তুতকারী একটি প্রতিষ্ঠান ফোর্ড মোটর কোম্পানির কাছে  বিক্রি করে দিয়েছেন। 

২০০৭ সালে ব্রাজিলের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় প্রবল বাতাসকে কাজে লাগানোর চিন্তা করেন আরারিপ। 

সে সময় থেকে তার কোম্পানি কাসা দোসভেন্তোস ব্রাজিলে বায়ুশক্তির উত্থানের প্রতীক বনে গেছে। 

বর্তমানে ব্রাজিলে বিদ্যুতের তৃতীয় বৃহত্তম উৎস বাতাস।

স্যার ডেভিড অ্যাটেনবরো :বিবিসির উপস্থাপক ও প্রাকৃতিক ইতিহাসবেত্তা ডেভিড অ্যাটেনবরো কয়েক দশক ধরে ব্রিটেনের সবচেয়ে জনপ্রিয় উপস্থাপকদের একজন। 

২০১৭ সালে তার ডকুমেন্টারি সিরিজ 'ব্লু প্লানেট ২' ভাইরাল হয়। 

এ সিরিজের বিভিন্ন ছবিগুলোর মাধ্যমে প্লাস্টিক সামুদ্রিক প্রাণীদের কীভাবে নিঃশেষ করে দিচ্ছে, তা দেখানো হয়। 

তার এ শো সমুদ্র দূষণের ব্যাপকতা নিয়ে বিশ্বজুড়ে ক্ষোভ সৃষ্টি করে। ছবিটি দুটি এমি অ্যাওয়ার্ড জিতে। 

এ  বছর 'অ্যা লাইফ অন আওয়ার প্ল্যানেট' নামের একটি চলচ্চিত্র প্রকাশ পাবে, যাতে প্রকৃতিবাদী হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার ও বিশ্বের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে কথা বলবেন অ্যাটেনবোরো।

মাইক ক্যানন-ব্রুকস: অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক সফটওয়্যার কোম্পানি অ্যাটলাসিয়ান করপোরেশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মাইক ক্যানন-ব্রুকস। 

দেশজুড়ে দাবানল ছড়িয়ে পড়ার ঘটনায় সরকার ও কয়লাভিত্তিক প্রকল্পের পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধে তার মতো সোচ্চার হতে দেখা যায়নি আর কোনো বিখ্যাত ব্যক্তিকে।  

বছরের পর বছর তিনি নিজ টুইটার অ্যাকাউন্টকে প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের (যার নেতৃত্বাধীন সরকার জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে প্রাণঘাতী দাবানলের সম্পর্ক নাকচ করেন) বিরুদ্ধে রীতিমতো মুগুর হিসেবে ব্যবহার করেছেন।

এ ছাড়া পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তিকেন্দ্রিক উদ্যোগগুলোতে শত শত কোটি ডলার ঢালছেন তিনি। 

মার্ক কার্নি: বৈশ্বিক উষ্ণতার হুমকি মোকাবিলায় আর্থিক খাতের জাগরণে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নর মার্ক কার্নি। চলতি বছরের মার্চে তিনি ব্যাংকের দায়িত্ব ছেড়ে তার জলবায়ুগত কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখবেন। সে সময় থেকে জাতিসংঘের জলবায়ু তৎপরতা ও অর্থায়নবিষয়ক দূত হিসেবে তিনি প্যারিস জলবায়ু চুক্তির লক্ষ্য অর্জনে সহায়তায় ব্যক্তিগত অর্থায়ন সহজলভ্য করতে কাজ করবেন।

ক্লাইমেট অ্যাকশন ১০০+ :২০১৫ সালে প্যারিস জলবায়ু চুক্তির সময় পার্শ্ববৈঠকে জন্ম নেওয়া জোটটি বিশ্বজুড়ে বৃহৎ করপোরেশনগুলোর ওপর চাপ প্রয়োগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ৩৫০টির বেশি ছোট-বড় অ্যাসেট ম্যানেজারের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা জোট বিভিন্ন কোম্পানিকে পরিবেশবান্ধব নীতি নিতে চাপ তৈরি করছে।  

বিল গেটস: মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা ও মানবহিতৈষী বিল গেটসকে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দরিদ্র লোকজনের ওপর বৈশ্বিক উষ্ণতার হুমকি নিয়ে ধারাবাহিকভাবে সোচ্চার হতে দেখা গেছে।

গত বছরের অক্টোবরে বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের কৃষকদের ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার সঙ্গে অভিযোজনে সহায়তায় বিশ্বব্যাংকের মাধ্যমে ৩১ কোটি ডলার দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে।

ইলন মাস্ক: বৈদ্যুতিক গাড়ি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান টেসলার সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও ইলন মাস্ক। তার প্রতিষ্ঠান জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার বন্ধে ভূমিকা রাখছে। চলতি বছর টেসলা ১০ লাখতম বৈদ্যুতিক গাড়িটি বিক্রির পরিকল্পনা নিয়েছে।

গ্রেটা থানবার্গ: পরিবেশ নিয়ে বিশ্বজুড়ে স্কুলপড়ুয়া শিশু-কিশোরদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করে আলোচিত হয় সুইডিশ কিশোরী গ্রেটা থানবার্গ।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘে দেওয়া বক্তব্যে সে জলবায়ু সংকট নিয়ে উদাসীনতার জন্য বিশ্বের প্রভাবশালীদের ব্যাপক সমালোচনা করে। বিমান চলাচলে কার্বন নির্গমনের প্রভাব রোধে গ্রেটা নৌকায় দুবার আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে গত বছরের জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দেয়। এতে তার সময় লাগে ৩৬ দিন।
 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.