সবার আগে ডিজিটাল মুদ্রা চালু করতে চায় চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক

আন্তর্জাতিক

টিবিএস ডেস্ক
23 September, 2020, 07:10 pm
Last modified: 23 September, 2020, 07:25 pm
চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, ডিজিটাল ইউয়ানের মাধ্যমে ডলার ভিত্তিক আন্তর্জাতিক লেনদেন ব্যবস্থার ওপর চীনের নির্ভরতা অনেকাংশে হ্রাস পাবে।

আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে সিংহভাগ লেনদেনই হয় মার্কিন ডলারে। অর্থ স্থানান্তরের প্রক্রিয়াতেও যেকোনো দেশের মুদ্রাকে ডলারে রূপান্তর করে লেনদেন করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তীব্র ভূ-রাজনৈতিক বিবাদে জড়িয়ে পড়ার পর থেকেই চীন তা এড়াতে চাইছে। চাইছে বিকল্প আর্থিক ব্যবস্থায় লেনদেন চালু করে ডলারের আধিপত্য হ্রাস করতে। 

এজন্যেই বিশ্বের সবার আগে চীনকে ডিজিটাল মুদ্রা চালু করতে হবে। এমন উদ্দেশ্যই জানিয়েছে, চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক- পিপলস ব্যাংক অব চায়না (পিবিওসি)। এশিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী আর্থিক খাত নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির নিজস্ব এক ম্যাগাজিনে প্রকাশিত মতামতমূলক নিবন্ধে একথা জানানো হয়। 

চায়না ফাইন্যান্স নামক ম্যাগাজিনটির নিবন্ধে বলা হয়, ডিজিটাল মুদ্রা চালু করা এবং তা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে 'নতুন এক যুদ্ধক্ষেত্রের' সূচনা হবে। বিশ্বের সব আত্মমর্যাদাসম্পন্ন ও স্বনির্ভর দেশ নাম লেখাবে এ প্রতিযোগিতায় । 

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, চীনের ডিজিটাল ইউয়ান জারি এবং তা প্রসার ঘটলে প্রচলিত আন্তর্জাতিক অর্থায়ন খাতে বিপুল পরিবর্তন আসবে বলেও উল্লেখ করা হয় নিবন্ধে।
    
''কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চালু করা ডিজিটাল মুদ্রা প্রবর্তনে চীনের অনেক সুবিধা এবং সম্ভাবনা আছে। এই লক্ষ্য অর্জনের গতি বৃদ্ধি করে চীনকেই সবার আগে এপথে নেতৃত্ব দিতে হবে।''

এদিকে গত মাসেই স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত বড় কিছু বাণিজ্যিক ব্যাংক ইতিমধ্যেই নিজেদের মধ্যে বড় আকারে একটি ডিজিটাল ওয়ালেট এর লেনদেন পরীক্ষামূলকভাবে শুরু করেছে। স্থানীয় পর্যায়ে ডিজিটাল মুদ্রা চালুর আগে যা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এরপর থেকেই চীনা কেন্দ্রীয় ব্যাংক- পিবিওসি'র ডিজিটাল ইউয়ান নিয়ে প্রত্যাশা বাড়ছে।   

চায়না ফাইন্যান্সে প্রকাশিত নিবন্ধে যুক্তি দেওয়া হয়,  ডিজিটাল মুদ্রার লেনদেন থেকে তথ্য সংগ্রহের উন্নত উপায় চালু করলে মুদ্রানীতি প্রণয়ন করাটাও অনেক সহজ হয়ে পড়বে। মহামারি পরবর্তীকালে যা হবে অর্থনৈতিক উত্তরণের সহযোগী শক্তি। চীনকে অবশ্যই মার্কিন ডলারের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ হ্রাস করতে হলে নতুন একটি মুদ্রা ব্যবস্থা চালু করতেই হবে। এটাই হতে পারে ইউয়ানের আন্তর্জাতিকরণ।

ক্রিপ্টোকারেন্সি চালুর লক্ষ্যে পিবিওসি'র ডিজিটাল মুদ্রা গবেষণা ইউনিট ইতোমধ্যেই ১৩০টি মৌলিক আবিষ্কারের মেধাসত্ত্ব নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে। মুদ্রা জারি, সঞ্চালন থেকে শুরু করে এর ব্যবহার বিষয়ক নানা ক্ষেত্রে এসব আবিষ্কার করা হয়। গত এপ্রিল নাগাদ জমা দেওয়া এসব আবেদন অনুমোদন করা হলে, নিজস্ব ডিজিটাল মুদ্রাকে সমর্থন দেওয়ার মতো একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ সরবরাহ চক্র থাকবে চীনের হাতে। 

এছাড়া, গত এপ্রিলে পিবিওসি'র ডিজিটাল কারেন্সি ইনস্টিটিউড বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানায়, তারা চারটি বড় শহরে ডিজিটাল মুদ্রার আভ্যন্তরীণ লেনদেন পরীক্ষায় ইলেক্ট্রনিক পেমেণ্ট ব্যবস্থা চালু করেছে। এসব পরীক্ষার ফলাফলের উপর ভিত্তি করে আগামীতে আসন্ন শীতকালীন অলিম্পিক আয়োজনের সময় এধরনের বিনিময় ব্যবস্থা সচল করা হবে। 

উল্লেখ করা যেতে পারে, ছয় বছর আগেই কাগজের মুদ্রা ইস্যুর খরচ কমাতে ডিজিটাল মুদ্রা চালুর লক্ষ্যে নিজস্ব গবেষণা টিম গঠন করে পিবিওসি। পাশাপাশি আর্থিক লেনদেনের ওপর নীতিনির্ধারকদের নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধির লক্ষ্যও ছিল এর মূল উদ্দেশ্য। 

  • সূত্র: এশিয়া টাইমস 
     

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.