সংক্রমণ কমায় পুনরায় ভ্যাকসিন রপ্তানি শুরু করতে বৈশ্বিক চাপের মুখে ভারত

আন্তর্জাতিক

টিবিএস ডেস্ক
14 September, 2021, 05:00 pm
Last modified: 14 September, 2021, 05:15 pm
প্রায় ১০০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিনের জন্য ভারতের দিকে তাকিয়ে রয়েছে কোভ্যাক্স। কোভ্যাক্সের সঙ্গে মার্কিন কর্মকর্তারাও আশা করছেন যে, করোনা পরিস্থিতি স্থিতিশীল হওয়ায় ভারত পুনরায় টিকা রপ্তানিতে সম্মত হবে।

কোভিড ভ্যাকসিন রপ্তানিতে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে বাড়তে থাকা বৈশ্বিক চাপের মুখোমুখি ভারত। করোনা প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় মাসখানেক আগে ভারত ভ্যাকসিন রপ্তানি বন্ধ করে। সংক্রমণ কমে আসলেও এখন পর্যন্ত দেশটি টিকা রপ্তানি উন্মুক্ত করেনি।

বিশ্বের দ্বিতীয় জনবহুল দেশ ভারত একইসঙ্গে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী দেশ। ভারতীয়দের টিকাদান কর্মসূচিতে গতি আনতে দেশটি টিকা রপ্তানি বন্ধ করে।

এদিকে, প্রায় ১০০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিনের জন্য ভারতের দিকে তাকিয়ে রয়েছে কোভ্যাক্স। জাতিসংঘ সমর্থিত বৈশ্বিক টিকাদান উদ্যোগ কোভ্যাক্সের সঙ্গে মার্কিন কর্মকর্তারাও আশা করছেন যে, করোনা পরিস্থিতি স্থিতিশীল হওয়ায় ভারত পুনরায় টিকা রপ্তানিতে সম্মত হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের মতো ধনী দেশগুলো যখন ইতোমধ্যে দুই ডোজ ভ্যাকসিনপ্রাপ্ত নাগরিকদের বুস্টার শট দেওয়ার কথা চিন্তা করছে, তখনই সৃষ্টি হলো এই চাপ।

তবে, ভারতীয় কর্মকর্তারা এখনও রপ্তানি শুরুর বিষয়ে কোনো দিনক্ষণ ঠিক করেননি। টিকা উৎপাদনের ভবিষ্যৎ নিয়ে মিশ্রবার্তা সৃষ্টি হলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগামী বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিশ্বের ৭০ শতাংশ মানুষকে পূর্ণাঙ্গ টিকাদানের আওতায় আনার নতুন প্রতিশ্রুতিতে অংশ নিতে বিশ্বনেতাদের আহ্বান জানাতে ফোন করার পরিকল্পনা করছেন।

এর আগে, এপ্রিলের শুরুর দিকে ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউটের নির্বাহী কর্মকর্তা অ্যাসোসিয়েট প্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, ভারতের করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে জুন নাগাদ ভ্যাকসিন রপ্তানি চালু হবে। বিশ্বের বৃহত্তম (ডোজ তৈরিতে) ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হওয়ার পাশাপাশি তুলনামূলক কম খরচে অ্যাস্ট্রেজেনেকা ভ্যাকসিন উৎপাদন করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ভ্যাকসিন চাহিদা পূরণের প্রতিশ্রুতি দেয় সেরাম।

কিন্তু, এরপরই ভারতে বাড়তে থাকে সংক্রমণ। মে মাসে ভারতে এক সপ্তাহে সর্বোচ্চ ২৭ লাখ মানুষের দেহে করোনা শনাক্ত হয়। এক বিবৃতিতে সেরাম চলতি বছরের শেষ নাগাদ রপ্তানি চালুর কথা জানায়। তবে, তারা "ভারতীয়দের জীবনের বিনিময়ে" ভ্যাকসিন রপ্তানি করবে না বলেও উল্লেখ করে।

আগস্টে ভারত সরকারকে ভ্যাকসিন বিষয়ে পরামর্শদাতা একটি দলের প্রধান ব্লুমবার্গকে জানান, দেশটি সম্ভবত আগামী বছর ভ্যাকসিন রপ্তানির অনুমতি দিবে।

মহামারির আঘাতে বিপর্যস্ত নিম্নআয়ের দেশগুলোই ভারতের রপ্তানি বন্ধের মূল ভুক্তভোগী। গত সপ্তাহে কোভ্যাক্স জানায়, তারা প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দুই কোটি ডোজ ভ্যাকসিনের পরিবর্তে চলতি বছর মাত্র এক কোটি ৪০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন বিতরণ করতে পারবে। ভারতের রপ্তানি বন্ধ থাকা এর অন্যতম একটি কারণ বলেও তারা উল্লেখ করে।

অজ্ঞাত সূত্রের উল্লেখ করে অ্যাক্সিওর একটি প্রতিবেদন জানিয়েছে যে, ভ্যাকসিন রপ্তানি চালু করতে ভারতকে বিশেষ প্রণোদনা প্রদানের পরিকল্পনা করছে বাইডেন প্রশাসন।

সরকারি তথ্য অনুসারে, রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার পূর্বে ভারত বিশ্বের প্রায় ১০০টি নিম্নআয়ের দেশে ছয় কোটি ৬০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহ করে।

গত রোববারের তথ্য অনুযায়ী, সাত দিনের গড় হিসেবে ভারতে সংক্রমণ সংখ্যা ছিল ৩৩ হাজার ৭৯৩, যা মে মাসের সংক্রমণ সংখ্যার প্রায় দশ ভাগের এক ভাগ।

ভারত ইতোমধ্যে ১৪০ কোটি জনগণের প্রায় ৪০ শতাংশকে অন্তত এক ডোজ ভ্যাকসিন প্রদান করেছে।

  • সূত্র: ওয়াশিংটন পোস্ট

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.