ব্রিটেনের ‘ভয়ঙ্কর ধর্ষক’ সিনাগা
রেইনহার্ড সিনাগা, ব্রিটিশ আইনী ইতিহাসের সবচেয়ে ‘ভয়ংকর ধর্ষক’। ১৩৬ ধর্ষণসহ ১৫৯টি যৌন অপরাধে দোষী সাব্যস্ত সিনাগাকে সোমবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন ব্রিটিশ আদালত।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডির শিক্ষার্থী ৩৬ বছর বয়স্ক সিনাগা ইন্দোনেশিয়ার নাগরিক। ম্যানচেস্টারের এই সিরিয়াল ধর্ষক নাইট ক্লাবের বাইরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করত। প্রিন্সেস স্ট্রিটের মন্টানা হাউসে তার ফ্ল্যাটে যাওয়ার আগে পুরুষদের নাইটক্লাব এবং বারগুলো ছেড়ে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করত সে। প্রায়ই কোনো পানীয় পানের কিংবা ট্যাক্সি ডাকার অফার দিয়ে কথা শুরু করতো সিনাগা।
তরুণরা ক্লাব থেকে বের হলে তাদের ড্রাগ বা মাদকের লোভ দেখিয়ে নিজের ফ্ল্যাটে নিয়ে আসতো সিনাগা। তারপর নেশাগ্রস্ত এই তরুণদের ধর্ষণ আর যৌন নিপীড়ন করতো। শুধু তাই নয়, এই নিপীড়নের ভিডিও চিত্র ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করত ভুক্তভোগীদের।
বেশ কয়েকবছর ধরে এই কাজ করে আসছে এই ধর্ষক। ২০১৭ সালে ভুক্তভোগী নির্যাতিতদের একজন পুলিশকে জানালে প্রথমবারের মতো আইনের নজরে আসে সে।
পুলিশ কর্মকর্তারা সিনাগার ফোনটি আটক করে দেখতে পান যে সে তার প্রতিটি নিপীড়নের ফিল্ম করেছে, সেখানে কয়েকশ’ ঘণ্টার ফুটেজ খুঁজে পান তারা।
এই আবিষ্কারের ফলে ব্রিটিশ ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি ধর্ষণ ঘটনার তদন্ত শুরু হয়।
সহকারী চিফ কনস্টেবল ম্যাবস হুসেইন বলেন, সিনাগার অপরাধের প্রকৃত পরিমাণ সম্ভবত কখনোই জানা যাবে না। তারা ধারণা করছেন, ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই অপরাধ করে আসছে সিনাগা।
তদন্তকারীরা সিনাগার ম্যানচেস্টার ফ্ল্যাটে চুরি হওয়া ফোন, আইডি কার্ড এবং ঘড়ির মতো ভিডিওগুলো খুঁজে পান। এছাড়া ভিডিওগুলো থেকে বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগীকে সনাক্ত করেন তদন্ত কর্মকর্তারা।
ম্যানচেস্টারের ক্রাউন কোর্টে ১৮ মাস জুড়ে চলে সিনাগার বিচার।
ব্রিটেনের পুলিশ বলছে, তাদের কাছে প্রমাণ রয়েছে যে, এভাবে কমপক্ষে ১৯০ জনকে আটক করেছে সিনাগা।
এর আগেও ২০১৮ সালের গ্রীষ্মে এবং বসন্তে আরও দুটি বিচারে ২০ বছর যাবজ্জীবনের সাজা পেয়েছে এই বর্বর মানসিকতার সিনাগা।
এরপর তাকে চারটি পৃথক পৃথক বিচারে মোট ৪৮ জন ভুক্তভোগীর বিরুদ্ধে ১৩৬টি ধর্ষণ, আটটি গণধর্ষণের চেষ্টা, ১৪টি যৌন নিপীড়ন এবং অন্যান্য অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
পরে কমপক্ষে ৩০ বছর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেন বিচারক।