পুতিন-বাইডেন সম্মেলনে সাত সমুদ্রের পার্থক্য, আশার সম্ভাবনাও কম 

আন্তর্জাতিক

টিবিএস ডেস্ক
16 June, 2021, 09:20 pm
Last modified: 17 June, 2021, 03:29 pm
বৈঠকের আগে উভয় প্রেসিডেন্ট আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, এই বৈঠক যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে আরো স্থিতিশীল ও সহজে অনুমেয় সম্পর্ক স্থাপনে সহায়ক হবে। তবে আশাবাদ সত্ত্বেও পরমাণু অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ, যুক্তরাষ্ট্রে সাইবার হামলা, ইউক্রেনের সংঘাতসহ মার্কিন নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের মতো নানা বিষয়ে উভয় পক্ষের অবস্থানে যোজন যোজন পার্থক্যও রয়েছে।

সুইজারল্যান্ডের রাজধানী জেনেভার ডে লা গ্রাঞ্জে পার্কের মাঝামাঝি অবস্থিত ১৮ শতকে নির্মিত অভিজাত এক ভিলা। পাশেই আছে স্বচ্ছ নীল জলরাশির হৃদ। এমন মনোরোম পরিবেশেই আজ দুই বিশ্বশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার রাষ্ট্রপতিরা বৈঠকের জন্য একত্রিত হয়েছেন। 

চলতি বছরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলা হচ্ছে দুই নেতার এ কূটনৈতিক বৈঠককে। আলোচনায় প্রাধান্য পাবে ভূ-রাজনৈতিক নানান ইস্যুতে উত্তেজনা হ্রাস। 

এনিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের টানা পাঁচজন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় যোগ দিচ্ছেন পুতিন। ইতঃপূর্বে, ওবামা প্রশাসনে ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকাকালে ২০১৬ সালে পুতিনের সাথে বৈঠক করেছিলেন বাইডেন। এবার রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবেই তিনি আলোচনায় যোগ দিলেন। 

বৈঠকের আগে উভয় প্রেসিডেন্টই আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, এই বৈঠক যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে আরো স্থিতিশীল ও সহজে অনুমেয় সম্পর্ক স্থাপনে সহায়ক হবে। তবে আশাবাদ সত্ত্বেও পরমাণু অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ, যুক্তরাষ্ট্রে সাইবার হামলা, ইউক্রেনের সংঘাতসহ মার্কিন নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের মতো নানা বিষয়ে উভয় পক্ষের অবস্থানে যোজন যোজন পার্থক্যও রয়েছে।  

আনুষ্ঠানিক সম্ভাষণের মধ্য দিয়েই সুইস ভিলায় বৈঠক শুরু হয় আজ বুধবার (১৬ জুন)। 

এসময় বাইডেনের বিপরীতে আসন গ্রহণ করে পুতিন তার উদ্দেশ্যে বলেন, "মি. প্রেসিডেন্ট আজকে আমার সঙ্গে আলোচনার জন্য আপনি যে উদ্যোগ নিয়েছেন তাকে স্বাগত জানাচ্ছি।"  

বৈঠকের আগে বাইডেন জানান, তিনি দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা ও পারস্পরিক স্বার্থের দিক খুঁজে বের করার চেষ্টা করবেন তিনি। "এজন্য সবসময় মুখোমুখি আলোচনায় যোগ দেওয়াই কার্যকরী," তিনি বলেছেন। তবে উভয় প্রেসিডেন্টের সহযোগীরা এই বৈঠক থেকে বেশি কিছু প্রত্যাশা করা হচ্ছে না বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন। 

বাইডেন প্রশাসনের শীর্ষ এক কর্মকর্তা গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, "এখান থেকে বড় কিছু প্রত্যাশা করা উচিত হবে না।" 

পুতিনের পররাষ্ট্রনীতি উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ বলেন, "তাদের মধ্যে কোনো ব্যাপারে সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।"

এর আগে ২০১৪ সালে রাশিয়ার ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখলের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের মারাত্মক অবনতি ঘটে। তারপর ২০১৫ সালে সিরিয়ায় বাশার আল আসাদ বাহিনীর পক্ষে যুদ্ধ অংশ নেয় রাশিয়া। তারপর ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মস্কোর হস্তক্ষেপের অভিযোগ আনেন মার্কিন রাজনীতিক  ও গোয়েন্দারা। তবে মস্কো শেষোক্ত অভিযোগটি বরাবরি নাকচ করে দিয়েছে।   

বাইডেন ক্ষমতাগ্রহণের পরও সম্পর্ক খারাপ হতেই থাকে। গত মার্চে পুতিনকে 'খুনী' বলে সম্বোধন করেন বাইডেন। এই মন্তব্যের পর ওয়াশিংটনে নিযুক্ত নিজ রাষ্ট্রদূতকে তলব করে রাশিয়া। এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রও মস্কোতে নিযুক্ত নিজেদের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে।  

এত কিছুর পরও পৃথিবীর প্রধান দুই পারমাণবিক অস্ত্রধর দেশের মধ্যে আলোচনার গুরুত্ব একেবারে হারিয়ে যায়নি। 

জ্যেষ্ঠ এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, "জাতীয় স্বার্থকে রক্ষা করে কীভাবে নানা ক্ষেত্রে একযোগে কাজ করা যায়, তারা দুজনে (বাইডেন-পুতিন) মিলে সেসব নির্ধারণের চেষ্টা করবেন। এরফলে বিশ্ব আরো নিরাপদ হবে।" 
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেশকভ বলেছেন, "কূটনৈতিক মিশন প্রধানদের সঙ্গে কেমন আচরণ করা উচিত- সেবিষয়ে উভয় রাষ্ট্রপতিকেই একটি সিদ্ধান্তে আসতে হবে।"

সূত্র: রয়টার্স 
 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.