করোনায় আক্রান্ত হলেন দুইবার, দ্বিতীয় দফায় সংক্রমণের মাত্রা তীব্র

আন্তর্জাতিক

টিবিএস ডেস্ক
14 October, 2020, 10:50 am
Last modified: 14 October, 2020, 10:54 am
পুনরায় সংক্রমণের ঘটনা সচরাচর দেখা যায় না। সারাবিশ্বে নিশ্চিত আক্রান্ত ৩৭ মিলিয়নে পুনরায় আক্রান্তের সংখ্যা নগন্য।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন নাগরিক দুই দফায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, চিকিৎসকরা জানিয়েছেন দ্বিতীয় বার সংক্রমণের প্রভাব আরও প্রকটভাবে দেখা গেছে এক্ষেত্রে।

শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় ২৫ বছর বয়সী এই রোগীর হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়, বর্তমানে তিনি সুস্থ আছেন।

ল্যানসেট ইনফেকশাস ডিজিজের গবেষণা প্রকাশিত হওয়ার পর করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে শরীরের কেমন প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে ওঠে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। নেভাডা অঙ্গরাজ্যের ওই রোগীর কোনো ধরনের শারীরিক জটিলতাও ছিল না।

কখন কী হয়েছিল 

২৫ মার্চ থেকে তার গলাব্যথা, কাশি, মাথাব্যথা, বমি ভাব ও ডায়রিয়ার মতো উপসর্গ দেখা যায়। ১৮ এপ্রিল তিনি প্রথমবারের মতো পজিটিভ শনাক্ত হন। ২৭ এপ্রিলের মধ্যেই তার উপসর্গের প্রকোপ কমে আসে। ৯ ও ২৬ মে দুইটি টেস্টে নেগেটিভ শনাক্ত হয়। তবে ২৮মে থেকেই আবার জ্বর, মাথাব্যথা, বমিভাব, মাথা ঘোরা, কাশি ও ডায়রিয়ার মতো উপসর্গ দেখা যায়। এবং ৫ জুন তিনি দ্বিতীয় বারের মতো করোনা পজিটিভ শনাক্ত হন। দ্বিতীয় বার তার রক্তে অক্সিজেনের অভাব দেখা যায়, শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। 

বিজ্ঞানীরা বলছেন তিনি দ্বিতীয় দফায় সংক্রমিত হয়েছেন, প্রথমবার আক্রান্তের ভাইরাসের সুপ্ত অবস্থায় থেকে দ্বিতীয় বার সংক্রমণ ঘটিয়েছে এমনটা হয়নি এক্ষেত্রে। দুইবার সংক্রমণের ভাইরাসের জেনেটিক কোড পরীক্ষা করে তারা একথা জানান।

ইউনিভার্সিটি অব নেভাডার ড.মার্ক পানডোরি জানান, 'আমাদের গবেষণা থেকে দেখা যায়, একবার সংক্রমণ হলেই যে তা পরবর্তীতে সংক্রমণের হাত থেকে সুরক্ষা দিবে এমন নয়। পুণরায় সংক্রমণের সম্ভাবনা আমাদেরকে কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতার প্রকৃতি বুঝতে সাহায্য করবে।'

তিনি জানান, একবার সংক্রমিত হয়ে সুস্থ হয়ে গেছেন এমন সকলেরই উচিৎ মাস্ক পরা, হাত ধোয়া ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার মতো স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে চলা।

তবে পুনরায় সংক্রমণের ঘটনা সচরাচর দেখা যায় না। সারাবিশ্বে নিশ্চিত আক্রান্ত ৩৭ মিলিয়নে পুনরায় আক্রান্তের সংখ্যা নগন্য। হংকং, বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ডেও এধরণের ঘটনায় দ্বিতীয় বারের সংক্রমণ গুরুতর ছিলনা। ইকুয়েডরের একজন রোগীর সংক্রমণের প্রকৃতি অনেকটা মার্কিন ওই রোগীর মতোই ছিল, তবে তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়নি।

একবার করোনা সংক্রমিত হলে পরবর্তীতে মানবদেহ ভাইরাসটির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলে, ফলে দ্বিতীয় বার সংক্রমণের মাত্রা মৃদু হয় এমনটাই ধারণা করা হচ্ছে। তবে নেভাডার ওই রোগী কেন দ্বিতীয় বার আরও বেশি অসুস্থ হয়ে যান বিষয়টি এখনো অস্পষ্ট। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন পরবর্তীতে হয়তো বেশি মাত্রার ভাইরাস দ্বারা সংক্রমণ ঘটে। এছাড়াও প্রাথমিক রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার প্রতিক্রিয়ায় এমনটা হতে পারে এই সম্ভাবনাও আছে। ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রেও এব্যাপারটি দেখা যায়।

ইউনিভার্সিটি অব ইস্ট অ্যাঙ্গলিয়ার অধ্যাপক পল হান্টার গবেষণাটির ব্যাপারে জানান, দুইবার সংক্রমণের মধ্যকার স্বল্প সময় এবং দ্বিতীয় সংক্রমণ গুরুতর হওয়া বেশ উদ্বেগজনক। 

তিনি জানান, 'এ পর্যন্ত ৩৭ মিলিয়নের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। এতো কম সময়ের ব্যবধানে দুইবার আক্রান্ত হওয়া এবং দ্বিতীয়বারের সংক্রমণ প্রকট হওয়ার মতো ঘটনা দুর্লভ, নাহয় তা আমাদের নজরে আসতো। টিকাদান কর্মসূচির ওপর গবেষণার এই ফলাফলের প্রভাব আছে কিনা তা বলার সময় হয়নি এখনো। তবে আমরা এই ভাইরাস সংক্রমণ ও অনাক্রম্যতা সম্পর্কে এখনো অনেক কিছুই জানিনা তাই নির্দেশ করছে এই ফলাফল।'
 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.