করোনাভাইরাসের নতুন স্ট্রেইন সম্পর্কে কী জানা গেছে?

আন্তর্জাতিক

টিবিএস ডেস্ক
21 December, 2020, 12:55 pm
Last modified: 21 December, 2020, 12:59 pm
যুক্তরাজ্যে সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের নতুন স্ট্রেইন শনাক্ত হয়েছে। তবে অভিযোজিত এই স্ট্রেইন একদম নতুন নয়। নভেম্বরে লন্ডনের এক-চতুর্থাংশ শনাক্ত রোগীই এই স্ট্রেইন দ্বারা আক্রান্ত হন।

কোভিড-১৯ মহামারির জন্য দায়ী সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের নতুন স্ট্রেইনের সন্ধান পাওয়ার পর গত শনিবার যুক্তরাজ্যের লন্ডনসহ দেশটির আরও কিছু অংশে লকডাউন জারি করা হয়েছে। 

বিশেষজ্ঞদের মতে নতুন এ স্ট্রেইন আগের চেয়ে ৭০ গুণ বেশি সংক্রামক। দেশটিতে বিগত কয়েকদিনে সংক্রমণের হার বৃদ্ধির কারণও নতুন এই স্ট্রেইন বলেই ধারনা করা হচ্ছে। নতুন সংক্রমণের অন্তত ৬০ শতাংশই এই স্ট্রেইনের সংক্রমণের ফলাফল। 

নতুন স্ট্রেইন নিয়ে উদ্বেগের কারণ কী? 

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভাইরাসের অভিযোজিত নতুন এই স্ট্রেইন তুলনামূলক অধিক সংক্রামক। অভিযোজিত নতুন স্ট্রেইনের মানবদেহে সংক্রমণের সক্ষমতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। অভিযোজিত নতুন স্ট্রেইনে ভাইরাসের কিছু অংশে পরিবর্তন আসাই চিন্তার কারণ। ভাইরাস স্পাইক প্রোটিনের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করে, নতুন স্ট্রেইনের ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিন কিছুটা পরিবর্তিত হয়েছে। নতুন স্ট্রেইন দ্রুত গতিতে আগের সংস্করণগুলোকে প্রতিস্থাপিত করছে। 

এখনো এর প্রভাব সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যাচ্ছেনা, একারণেই পূর্ব সতর্কতা হিসেবে আবারও লকডাউন জারি করা হয়েছে। 

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন, "এখনও নিশ্চিতভাবে কিছু বলার সময় আসেনি, তবে আমরা দেখতে পাচ্ছি নতুন সংস্করণের ভাইরাসটি দ্রুতগতিতে সংক্রমিত হচ্ছে। এব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি রাখা জরুরি।"

নতুন স্ট্রেইন কি একদম নতুন?

প্রকৃতপক্ষে গত সেপ্টেম্বরেই প্রথম নতুন এই স্ট্রেইনের সন্ধান পাওয়া যায়। নভেম্বরে লন্ডনের এক-চতুর্থাংশ শনাক্ত রোগীই এই স্ট্রেইন দ্বারা আক্রান্ত হন। এই স্ট্রেইন দ্বারা আক্রান্তের সংখ্যা ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে দুই-তৃতীয়াংশ হয় বলে জানানো হয় বিবিসির এক প্রতিবেদনে। 

ইউনিভার্সিটি অব নটিংহামের ভাইরোলজিস্ট জোনাথন বল জানান, "ভাইরাসের সংক্রমণ হার বৃদ্ধি পেয়েছে কিনা এব্যাপারে নিশ্চিত মত দেয়ার জন্য দুর্ভাগ্যজনকভাবে এখনো পর্যাপ্ত তথ্য নেই।"

যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য দেশে সংক্রমণ

উত্তর আয়ারল্যান্ড ছাড়া পুরো যুক্তরাজ্যেই নতুন স্ট্রেইনের সংক্রমণের প্রমাণ মিলেছে। তবে লন্ডন, ইংল্যান্ডের পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডেই এ স্ট্রেইনের সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি। অন্যান্য অঞ্চলে এখনো সংক্রমণের হার কম। 

ভাইরাসের জেনেটিক কোড নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান নেক্সটস্ট্রেইন জানিয়েছে, যুক্তরাজ্য থেকেই ডেনমার্ক ও অস্ট্রলিয়ায় নতুন স্ট্রেইনের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। 

নেদারল্যান্ডেও নতুন স্ট্রেইনের সংক্রমণের প্রমাণ মিলেছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় একইভাবে অভিযোজিত নতুন স্ট্রেইন শনাক্ত হলেও, যুক্তরাজ্যের স্ট্রেইনের সাথে তা সম্পর্কিত নয়। 

এটি কি আগের চেয়েও প্রাণঘাতী?

নতুন স্ট্রেইন আগের চেয়ে প্রাণঘাতী এমন কোনো প্রমাণ মেলেনি এখনও। তবে সংক্রমণের ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ায় অধিক হারে সংক্রমণই যথেষ্ট চিন্তার কারণ। 

নতুন স্ট্রেইনের কারণে যদি কম সময়ে অধিক মানুষ আক্রান্ত হয়, তাহলে আরও বেশি মানুষের জন্য হাসপাতাল সেবার প্রয়োজন হতে পারে। 

নতুন স্ট্রেইনের বিরুদ্ধে কি ভ্যাকসিন কাজ করে?

এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী বলা যায়, নতুন বৈশিষ্ট্যের এই স্ট্রেইনের বিরুদ্ধেও ভ্যাকসিন কাজ করবে। এখন পর্যন্ত অনুমোদিত বা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন পাওয়া ভ্যাকসিনগুলো এই স্ট্রেইনের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দিতে সক্ষম। 

  • সূত্র: বিবিসি, হিন্দুস্তান টাইমস 
     

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.