এবার আমাজন জঙ্গলেও করোনার থাবা

আন্তর্জাতিক

টিবিএস ডেস্ক
26 June, 2020, 12:15 pm
Last modified: 26 June, 2020, 01:37 pm
জানা যাচ্ছে, ব্রাজিলের জনপদের কাছাকাছি থাকা আদিবাসী গ্রামগুলো এখন ফাঁকা। সেখানকার হাজার হাজার আদিবাসীরা গভীর জঙ্গলে পালিয়ে যাচ্ছে। করোনা থেকে বাঁচলেও গভীর জঙ্গলের অন্য অনেক বিপদ তাদের প্রাণসংশয়ের কারণ হয়ে উঠতে পারে। এমনটাই মনে করা হচ্ছে।

ব্রাজিলের আমাজন জঙ্গলে আদিবাসীদের একটি গ্রাম ক্রুজইরিনহো। সেই গ্রাম এখন ফাঁকা। করোনা মহামারীর হাত থেকে রক্ষা পেতে ওই গ্রামের সবাই আমাজনের গভীরে চলে গিয়েছেন।

আরেকটি গ্রাম উমারিয়াকাও। ক্রুজইরিনহো থেকে সেখানে নৌকায় যেতে সময় লাগে প্রায় এক সপ্তাহ। মিজুরানা উপজাতিদের বাস সেখানে। মোট ৩২ টি পরিবারের মধ্যে ২৭ টি আরো গভীর জঙ্গলে চলে গিয়েছে।

হ্যাঁ, মহামারীর কবল থেকে রক্ষা পাননি আমাজন জঙ্গলের আদিবাসীরাও। ব্রাজিলের ইনডিজেনাস পিপলস অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত আমাজনের সাত হাজার ৭০০ জন আদিবাসী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গিয়েছেন ৩৫০ জন।

টাইম ম্যাগাজিনের এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেল। 

জানা যাচ্ছে, ব্রাজিলের জনপদের কাছাকাছি থাকা আদিবাসী গ্রামগুলো এখন ফাঁকা। সেখানকার হাজার হাজার আদিবাসীরা গভীর জঙ্গলে পালিয়ে যাচ্ছে।

পেরু ও কলম্বিয়া সীমান্তের কাছে থাকা উত্তর ব্রাজিলের পাঁচ হাজার হেক্টর এলাকা জুড়ে ছড়ানো আদিবাসী গ্রামগুলো প্রায় ফাঁকা। গ্রামে ঢোকার পথে রাস্তার ওপর টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে হাতে আঁকা চিহ্ন। সেই চিহ্ন বুঝিয়ে দিচ্ছে, আদিবাসী এলাকা এখন অনির্দিষ্টকালের জন্য ফাঁকা।

করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ার পর থেকে ওইসব অঞ্চলে কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আদিবাসীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার নিশ্চিত করতে জন্য কাজ করছিল। কিন্তু এখন ব্রাজিলেও ভাইরাসের প্রকোপ বেড়েছে কয়েকগুণ। ফলে সেইসব স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যদের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। এমন সময় আদিবাসীরা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন। তাই গভীর অরণ্যে পালিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় নেই তাদের কাছে। 

তবে আদিবাসীদের মধ্যে রোগ ছড়ানোর প্রবণতা এই প্রথম নয়। এর আগেও হাম, ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো রোগের ভাইরাস হানা দিয়েছে মূল জনপদ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা আদিবাসীদের ডেরায়। সেসব ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা তৈরি হয়েছিল আদিবাসীদের মধ্যে।

তবে করোনা একেবারে আলাদা জাতের শত্রু। অনেক বেশি মারাত্মক। এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারেনি বিজ্ঞানও। আদিবাসীরা তাই ভাইরাসের আক্রমণ ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে। প্রাণঘাতী ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচতে পালিয়ে যাচ্ছেন আরও গভীর জঙ্গলে। করোনা থেকে বাঁচলেও গভীর জঙ্গলের অন্য অনেক বিপদ তাদের প্রাণসংশয়ের কারণ হয়ে উঠতে পারে। এমনটাই আশঙ্কা করা হচ্ছে।

 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.