আসামে শর্টস পরায় পা ঢেকে পরীক্ষা দিতে বাধ্য করা হলো কিশোরীকে

আন্তর্জাতিক

টিবিএস ডেস্ক
17 September, 2021, 07:10 pm
Last modified: 17 September, 2021, 07:14 pm
"তারা কোভিড নিয়মকানুন পরীক্ষা করলো না, মাস্ক পরেছে কিনা বা তাপমাত্রাও পরীক্ষা করলো না... অথচ কে শর্টস পরে এসেছে, তা দেখতে ব্যস্ত হয়ে গেল।"

ভারতের আসামে শর্টস পরে পরীক্ষা দিতে আসায়, ১৯ বছর বয়সী এক কিশোরীকে পরীক্ষার হলে ঢুকতে বাধা দিয়েছেন দায়িত্বরত শিক্ষক। তাই পর্দা দিয়ে নিজের পা ঢেকে পরীক্ষা দিতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। 

স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, জুবলী তামুলি নামের ওই শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যে নিজের বাবার সাথে আসামের তেজপুর শহরে আসেন।     

জুবলী জানান, পরীক্ষার হলে ঢোকার সময় নিরাপত্তারক্ষীরা তাকে বাধা না দিলেও, দায়িত্বরত শিক্ষক তাকে হলে ঢুকতে বাধা দেন। এসময় তার বাবা তার জন্য ট্রাউজার কিনতে ছুটে যান। কিন্তু পরীক্ষার সময় নির্ধারিত থাকায়, তিনি বাধ্য হয়ে পর্দা দিয়ে পা পেঁচিয়ে হলে প্রবেশ করেন।  

এই ঘটনাকে নিজের জীবনের 'সবচেয়ে অপমানজনক অভিজ্ঞতা' বলে আখ্যা দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জুবলী। 

পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে দাঁড়ানো সাংবাদিকদের তিনি প্রশ্ন করেন, "শর্টস পরা কি কোনো অপরাধ? সব মেয়েরাই তো শর্টস পরে। আর তারা যদি শর্টস পরার নিয়ম না রাখতে চায়, তাহলে পরীক্ষার নির্দেশনাবলিতে তা উল্লেখ করেনি কেন?"

বুধবার একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত, 'গিরিজানন্দা চৌধুরী ইনস্টিটিউট অব ফার্মাসিউটিক্যাল সায়েন্সেস' কেন্দ্রে এই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।  

ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী আরও বলেন, "তারা কোভিড নিয়মকানুন পরীক্ষা করলো না, মাস্ক পরেছে কিনা বা তাপমাত্রাও পরীক্ষা করলো না... অথচ কে শর্টস পরে এসেছে, তা দেখতে ব্যস্ত হয়ে গেল।"

জুবলী তামুলি জানান, পরীক্ষার নির্দেশাবলিতে কোনো ড্রেস কোড উল্লেখ ছিল না। দায়িত্বরত শিক্ষককে তিনি তার বাবার সাথে কথা বলতে অনুরোধ করলেও, শিক্ষক কোনো সাড়া দেননি।  

আসামের এই ঘটনায় দ্রুত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় উঠে। অনেকেই শিক্ষকের এই আচরণকে 'জঘন্য', 'হাস্যকর' ও 'মোরাল পুলিশিং এর চরম পর্যায়' বলে অভিহিত করেছেন।   

ভারতে প্রায়ই নারী ও মেয়েদের পোশাকের ব্যাপারে নানা নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে পশ্চিমা পোশাক রীতি অনুসরণ করাকে নৈতিক অবক্ষয় হিসেবে ধরা হয়।

গত মার্চে উত্তরাখন্ডের মুখ্যমন্ত্রী তিরাথ সিং রাওয়াতকে 'নারীবিদ্বেষ' এর দায়ে অভিযুক্ত করা হয়। কারণ তিনি 'রিপড জিন্স' পরায় এক নারীকে নিয়ে কটূক্তি করেছিলেন।   

এ ধরনের মানহানিকর ঘটনা অনেক ভারতীয় নারীকে মৃত্যুর মুখেও ঠেলে দিয়েছে। চলতি বছরের জুলাইয়ে উত্তর প্রদেশের এক বর্ধিষ্ণু পরিবারে, ১৭ বছর বয়সী মেয়েকে পিটিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ আসে। কারণ ওই কিশোরীর 'জিন্স' পরে ঘুরে বেড়ানো তার পরিবার পছন্দ করতো না।

  • সূত্র: বিবিসি          

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.