আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র: তালেবান

আন্তর্জাতিক

টিবিএস ডেস্ক
11 October, 2021, 02:45 pm
Last modified: 11 October, 2021, 02:57 pm
এর আগে শনিবার আফগানিস্তানে আইএসের নিয়ন্ত্রণে ওয়াশিংটনের সহযোগিতা প্রত্যাখ্যান করে তালেবান।

অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে থাকা আফগানিস্তানকে মানবিক সহায়তা দিতে সম্মত হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু দেশটির নতুন শাসকদের রাজনৈতিক স্বীকৃতি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে তারা। রোববার এ তথ্য জানায় তালেবান।

কাতারের দোহায় প্রথমবারের মতো সরাসরি বৈঠকে বসে যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবান। বৈঠক শেষে এই বিবৃতি আসে।

তবে, তালেবান একটি সুনির্দিষ্ট বিবৃতি দিলেও মার্কিন বিবৃতিটি স্পষ্ট ছিল না। তারা জানায়, উভয়পক্ষই "আফগান জনগণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিশালী মানবিক সহায়তার বিধান নিয়ে আলোচনা করেছে।"

এর আগে রোববার রাতে, নিরাপত্তা আশঙ্কার কথা উল্লেখ করে কাবুলের সেরেনা হোটেলের আশেপাশের এলাকা অবিলম্বে ত্যাগ করার জন্য তাদের নাগরিকদের সতর্ক করে যুক্তরাষ্ট্র। এ ঘটনার পরই আলোচনায় বসে তারা।

তালেবান জানিয়েছে, কাতারের দোহায় অনুষ্ঠিত আলোচনা 'ভালো হয়েছে'। এ আলোচনায় আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তা পাঠানোর কথা জানায় যুক্তরাষ্ট্র।

তবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়টি স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, তাদের আলোচনা কোনোভাবেই তালেবানের স্বীকৃতির সাথে যুক্ত নয়। নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দেবে না তারা।

এদিকে, তাদের আলোচনাকে 'অকপট এবং পেশাদার' বলে আখ্যায়িত করেছেন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস। এছাড়া, তালেবানকে কথার পরিবর্তে তাদের কাজের মাধ্যমে বিচার করা হবে বলে আবারও উল্লেখ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

এক বিবৃতিতে প্রাইস বলেন, "নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসবাদ জনিত উদ্বেগের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে মার্কিন প্রতিনিধিদল। মার্কিন নাগরিকসহ বিদেশী এবং আমাদের আফগান অংশীদারদের জন্য নিরাপদ প্রস্থানের পাশাপাশি আফগান সমাজের সকল ক্ষেত্রে নারীদের অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিতের লক্ষ্যে মানবাধিকারের উপর নজর দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।"

আলোচনার সময় তালেবানের অন্তর্বর্তীকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রকে আশ্বস্ত করে বলেন, "আফগান মাটি অন্য দেশের বিরুদ্ধে হামলা চালানোর জন্য উগ্রপন্থীরা ব্যবহার করতে পারবে না।" 

এদিকে গত শনিবার, আফগানিস্তানে ক্রমবর্ধমান সক্রিয় ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠীর (আইএস) নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে ওয়াশিংটনের সহযোগিতা প্রত্যাখ্যান করেছে তালেবান।

তালেবানের শত্রু গোষ্ঠীটি সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি হামলার দায় স্বীকার করেছে। এর মধ্যে রয়েছে শুক্রবারের আত্মঘাতী বোমা হামলা। সে হামলায় ৪৬ জন সংখ্যালঘু শিয়া মুসলমান নিহত হন। ইসলামিক স্টেটকে আফগানিস্তান থেকে উদ্ভূত সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী হুমকি বলে মনে করে ওয়াশিংটন।

"আমরা স্বাধীনভাবে দায়েশ (আইএস) মোকাবেলা করতে সক্ষম," শাহীন বলেন।

ফাউন্ডেশন ফর ডিফেন্স অব ডেমোক্রেসি'র সিনিয়র ফেলো বিল রোগিও বলেন, "আমেরিকার নিয়ন্ত্রণ থেকে বেরিয়ে আসার জন্য ২০ বছর লড়াই করেছে তালেবান। তারা অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাবর্তন চাইবে না।"

তিনি আরও বলেন, "আইএসকেপি-র কার্যক্রম থামানোর জন্য প্রয়োজনীয় সকল জ্ঞান এবং সরঞ্জাম রয়েছে তালেবানের।"

রোজিও জানান, তালেবানরা তাদের লড়াইয়ে পাকিস্তান এবং ইরানে আশ্রয়ের সুবিধা পেলেও, সেই সুযোগ নেই আইএসের। তবে তিনি উল্লেখ করেন, আল-কায়েদাকে দীর্ঘদিন ধরে সমর্থন দেওয়ার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সন্ত্রাস দমন বিরোধী অংশীদার হিসেবে থাকার অবকাশ নেই তালেবানের।

যুক্তরাষ্ট্রে নাইন-ইলেভেন হামলা চালানোর আগে তালেবানরা আল-কায়েদাকে আশ্রয় দিয়েছিল। এর ফলেই ২০০১ সালে আফগানিস্তানে মার্কিন আক্রমণের মাধ্যমে তালেবান সরকার উৎখাত করা হয়।

তালেবান যাতে মার্কিন এবং অন্যান্য দেশের নাগরিকদের ত্যাগের অনুমতি দেয়, সে বিষয়ে আলোচনার কথা ছিল এ বৈঠকে। এ বিষয়ে বিস্তারিত না জানিয়ে তালেবান বলেছে, "বিদেশী নাগরিকদের নীতিগত চলাচলকে সহজতর করবে" তারা।

  • সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.