ডলারের বিপরীতে আরো কমলো টাকার মান

অর্থনীতি

টিবিএস রিপোর্ট
29 June, 2022, 09:45 am
Last modified: 29 June, 2022, 10:12 am
মঙ্গলবার ৯৩.৪৫ টাকা রেটে ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

ডলারের বিপরীতে আরো ৫০ পয়সা কমেছে টাকার মান। গতকাল মঙ্গলবার ৯৩.৪৫ টাকা রেটে ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগের দিন সোমবার বিক্রি হয়েছিল ৯২.৯৫ টাকা রেটে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম টিবিএসকে এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মঙ্গলবার বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ৪২ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চলতি জুন মাসে এ পর্যন্ত রিজার্ভ থেকে প্রায় ১.৪৮ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করা হয়েছে। 

জানুয়ারি মাসের শুরুতে ডলারের বিনিময়মূল্য ২০ পয়সা বাড়িয়ে ৮৬ টাকা করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরপর থেকে ডলারের বিপরীতে টাকা কেবল দুর্বলই হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রায় ছয় মাসে ডলারের দাম বেড়েছে ৭.৬৫ টাকা বা ৮.৯২%।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। তবে বৈশ্বিক পরিস্থিতিকে তো আর অস্বীকার করা যাবে না। আমদানি ব্যয় অনেক বেড়েছে, রপ্তানি আয় বাড়লেও আমদানি ব্যয় বাড়ার তুলনায় কম। রেমিট্যান্সও আসছে কম। রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

আমদানি করা জ্বালানীসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম পরিশোধ করতে রিজার্ভ থেকে ডলার সহায়তা দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চলতি অর্থবছরে ৭.৫ বিলিয়নের বেশি ডলার বিক্রি করা হয়েছে। ক্রমাগত ডলার বিক্রি করায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪২ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে।

এদিকে, ব্যাংকগুলোতে ডলার নিয়ে অস্থিরতা এখনো চলছে বলে জানা গেছে। বেশ কয়েকটি ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মঙ্গলবার মানি এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো থেকে ডলার সংগ্রহ করতে ৯৯ টাকা রেট পর্যন্ত দিতে হয়। একারণে এলসি সেটেলমেন্টের ক্ষেত্রেও ডলারের দাম বেশি ধরতে হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি বেসরকারি ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধান টিবিএসকে বলেন, "সব ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধানেরা মিলে এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো থেকে ডলার কেনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত রেটের চেয়ে বেশি দাম দিবে না বলে ঠিক করেছিল। তবে বেশিরভাগ ব্যাংকই এই সিদ্ধান্ত মানছে না।"

তিনি আরো বলেন, "আজকে (মঙ্গলবার) বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত ৯৩.৪৫ টাকা রেটে আমি এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো থেকে কোনো ডলার পাইনি। একটি এক্সচেঞ্জ হাউজ থেকে আমাকে ৯৮.৫০ টাকা রেট অফার করেছে। এই রেটে ডলার কিনলে আমাদেরকে বিভিন্ন চাপে পড়তে হয়। তাই, আমি কোনো ডলার কিনিনি।"

বেশ কয়েকটি ট্রেজারি বিভাগের প্রধানের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, "আগে যেসব এলসি খোলা হয়েছিল, সেগুলো এখন সেটেলমেন্ট করতে হচ্ছে। তাই, প্রায় প্রতিটা ব্যাংকই এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো থেকে প্রতিযোগিতা করে ডলার সংগ্রহ করছে। চাহিদা বেশি থাকায়, দামও বাড়ছে। তবে নতুন এলসি খোলা স্থিতিশীল রয়েছে এখন।"

এদিকে খোলাবাজারে ডলারের দাম পড়তির দিকে। একদিনের ব্যবধানে ডলারের দাম ৪০ পয়সা কমেছে এ বাজারে। রাজধানীর মতিঝিল, পল্টন ও বাইতুল মোকাররম এলাকার মানি চেঞ্জারগুলো গতকাল মঙ্গলবার ৯৭.৫০ থেকে ৯৭.৬০ টাকা রেটে ডলার বিক্রি করেছে। কেনার ক্ষেত্রে তারা রেট দিয়েছে ৯৭ থেকে ৯৭.২০ টাকা। এর আগে সোমবার ৯৭.৬০ টাকা দরে ডলার কিনে ৯৮ টাকা দরে ডলার বিক্রি হয়েছিল কার্ব মার্কেটে। 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.