দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ এক লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা: অর্থমন্ত্রী

অর্থনীতি

টিবিএস রিপোর্ট 
22 June, 2022, 11:10 pm
Last modified: 22 June, 2022, 11:12 pm
এর বাইরে উচ্চ আদালতের (স্থগিতাদেশ) নির্দেশের কারণে ২১ হাজার ৪৬ কোটি টাকা আদায় করা যাচ্ছে না বলেও জানান অর্থমন্ত্রী।

২০২২ সালের মার্চ পর্যন্ত দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ২৬ হাজার ৩৮৯ কোটি টাকা বলে বুধবার (২২ জুন) জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

এর বাইরে উচ্চ আদালতের (স্থগিতাদেশ) নির্দেশের কারণে ২১ হাজার ৪৬ কোটি টাকা আদায় করা যাচ্ছে না বলেও জানান অর্থমন্ত্রী।

ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের উত্থাপিত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব তথ্য দেন।

ক্ষমতাসীন দলের আরেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচারের সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। অর্থ পাচারের পরিমাণ নির্ধারণ অত্যন্ত দুরূহ বিষয়।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ থেকে বিদেশে অর্থ পাচার বিষয়ে বিভিন্ন উন্নয়ন ও গবেষণা সংস্থা নানান ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করে পাচারকৃত অর্থের পরিমাণ সম্পর্কে প্রাক্কলন করে থাকে, যার যথার্যথতা ওই সব প্রতিষ্ঠানও দাবি করে না। তাই এসব সংস্থার প্রতিবেদনে বাংলাদেশ থেকে কী পরিমাণ অর্থ পাচার হয়, সে বিষয়ে পরস্পর-বিরোধী তথ্য দেখা যায়। তবে দেশ থেকে অর্থ পাচারের মাত্রা বা পরিমাণ যা–ই হোক না কেন, পাচারের সম্ভাব্য উৎসগুলো বন্ধ করার পাশাপাশি অর্থ পাচার রোধ এবং পাচারকৃত অর্থ দেশে ফেরত আনার বিষয়ে সরকার বদ্ধপরিকর এবং এ লক্ষ্যে সরকারের সব সংস্থা একযোগে কাজ করে যাচ্ছে।

মুস্তফা কামাল বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই পাচারকৃত অর্থ দেশে ফেরত আনার বিষয়ে সচেষ্ট ও তৎপর রয়েছে। ইতোমধ্যে ২০১২ সালের ২০ নভেম্বর সিঙ্গাপুরে পাচারকৃত ২০ লাখ ৪১ হাজার সিঙ্গাপুরি ডলার ফেরত আনা হয়েছে।

"বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচারের কিছু সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারের আইনগত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইউই) পাচারকারী বা পাচারকৃত অর্থের বিষয়ে বিদেশি আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা থেকে তথ্য সংগ্রহ করে ক্ষেত্রমত দুর্নীতি দমন কমিশন, বাংলাদেশ পুলিশের সিআইডি, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ বিভিন্ন তদন্তকারী সংস্থাকে সরবরাহ করে আসছে। বিদেশে ফ্ল্যাট বা বাড়ি কেনা অথবা অন্য কোনো পদ্ধতিতে অর্থ পাচারবিষয়ক বেশ কিছু মামলা বর্তমানে দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তাধীন। এ ছাড়া বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) দায়েরকৃত পাচার–সংশ্লিষ্ট বেশ কিছু মামলা চলমান রয়েছে।"

সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য রুমানা আলীর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার মতো দেউলিয়া হয়ে যাবে না। বাংলাদেশের অর্থনীতি শক্তিশালী ও মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক চলকগুলো অনেক শক্তিশালী।

এ প্রসঙ্গে মুস্তফা কামাল আরও যোগ করেন যে, "শ্রীলঙ্কার বেশিরভাগ বৈদেশিক ঋণ বাণিজ্যিক ও সার্বভৌম বন্ডে নেওয়া- যেগুলোর সুদহার বেশি ও পাঁচ বছরে সুদসহ পরিশোধ করতে হয়। অন্যদিকে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধকাল অনেক বেশি এবং স্বল্প সুদে নেওয়া।"

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.