ব্যবসা সম্প্রসারণে ৩২৬ মিলিয়ন ডলার বিদেশি ঋণগ্রহণের অনুমোদন পেয়েছে ২০টি প্রতিষ্ঠান

অর্থনীতি

22 June, 2022, 12:05 am
Last modified: 22 June, 2022, 04:18 pm
অনুমোদন পাওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই রপ্তানিমুখী টেক্সটাইল ও স্পিনিংখাতের। এছাড়া, ইস্পাত, বিদ্যুৎ, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, প্লাস্টিক ও সিরামিক খাতের কোম্পানিও বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ নিয়ে ব্যবসা সম্প্রসারণ করছে।  

রাশিয়া-ইউক্রেন চলমান যুদ্ধে বিশ্বজুড়ে অস্থিরতার মধ্যেও আকিজ গ্রুপ, বেক্সিমকো, আরএফএল, আবুল খায়ের ও এনভয় গ্রুপের মতো বৃহৎ প্রতিষ্ঠানগুলো বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ নিয়ে মূলধনী যন্ত্রপাতি (ক্যাপিটাল মেশিনারিজ) আমদানি করে ব্যবসা সম্প্রসারণ করছে। এ ঘটনা বাংলাদেশের অর্থনিতির জন্য একটি সুসময়ের ইঙ্গিতও দিচ্ছে।  

চলতি মাসে এ ধরণের ২০টি কোম্পানির আবেদনের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন দেশের ব্যাংক ও মাল্টিলেটারেল সংস্থা থেকে ৩৫২ মিলিয়ন ডলারের ঋণ নেওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. ফজলে কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বেসরকারিখাতে বিদেশি ঋণ অনুমোদন সংক্রান্ত বাছাই কমিটি, বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ৩,২৭৫ কোটি টাকা।

অনুমোদন পাওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই রপ্তানিমুখী টেক্সটাইল ও স্পিনিংখাতের। এছাড়া, ইস্পাত, বিদ্যুৎ, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, প্লাস্টিক ও সিরামিক খাতের কোম্পানিও বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ নিয়ে ব্যবসা সম্প্রসারণ করছে।  

গত ৫ জুন কমিটির অনুমোদিত ৩৫২ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে ১১টি কোম্পানির নতুন বিনিয়োগ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে ব্যয় হবে ৩২৬ মিলিয়ন ডলার। কমিটির সভার কার্যবিবরণী থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

এছাড়া, আটটি কোম্পানি কোভিডের সময় ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য বিদেশ থেকে ঋণ নিয়ে ক্যাপিটাল মেশিনারি আমদানি করেছে। কিন্তু কোভিডকালে রপ্তানি আয় কমে যাওয়ায় সময়মত ওইসব বিদেশি ঋণ পরিশোধ করতে পারেনি। তারা এখন পুনঃঅর্থায়ন (রিফাইন্যান্সিং) সুবিধা নিয়ে ২৫.৪৩ মিলিয়ন ডলারের ম্যাচুরিটি এক্সটেনশন সুবিধার অনুমোদন পেয়েছে।

মোবাইল অপারেটর বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশন লিমিটেড সারা দেশে তাদের পরিষেবার মান উন্নত করতে কমিটির কাছ থেকে ২০০ মিলিয়ন ডলার ঋণের অনুমোদন পেয়েছে।

এর আগে টেলিকম অপারেটরটি জানিয়েছিল যে, নিজেদের সেবার মান বাড়াতে তারা চলতি বছরের শেষ নাগাদ দেশব্যাপী ৩,০০০ নতুন বেজ স্টেশন নির্মাণের পরিকল্পনা করছে। এর আওতায় আগামী চার বছরে নিজস্ব নেটওয়ার্ক আরও উন্নতকরণ ও সম্প্রসারণে ৪,৮৭০ কোটি টাকা বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে কোম্পানিটি। যার মাধ্যমে দেশের ৯০ শতাংশ জনসংখ্যাকে কাভারেজের আওতায় আনতে পারবে। এতে অন্য দুটি বৃহৎ বেসরকারি মোবাইল অপারেটরের সাথে পূর্ণ প্রতিযোগী সক্ষমতা তৈরি হবে বাংলালিংকের। 

বাংলালিংক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তিতে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান- চীনের জেডটিই কর্পোরেশনের কাছ থেকে মূলধনী যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম আমদানি করবে। গত এপ্রিলে স্থানীয় মুদ্রায় কোম্পানিটির ১,২০০ কোটি টাকার সিন্ডিকেটেড লোন অনুমোদন পেয়েছে।

এর আগে দেওয়া এক বিবৃতিতে বাংলালিংক দাবি করে যে, সই হওয়া চুক্তির আওতায় জেডটিই-র তৈরি নিজ শ্রেণীতে সেরা পণ্য ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে আগামী পাঁচ বছরে নিজস্ব নেটওয়ার্ক সক্ষমতা বাড়াবে।

বাংলালিংকের প্যারেন্ট কোম্পানি ভিওন সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে প্রায় ১০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে, যা স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে হওয়া অন্যতম শীর্ষ পুঁজি লগ্নীর ঘটনা।   

বিদেশ থেকে ঋণ নেওয়ার বর্তমান বিধান অনুযায়ী, ডেবট টু ইক্যুইটি রেশিও (সম্পদ ও দেনা) ৭০:৩০ এর মধ্যে থাকতে হয়। ২০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে এই অনুপাত শিথিল করার অনুরোধ করে বাংলালিংক, যা অনুমোদন করেছে কমিটি। 

তবে কমিটি বলেছে, জনসাধারণের কাছে শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে বাংলালিংককে তাদের মোট পরিশোধিত মূলধনের কমপক্ষে ১০ শতাংশের সমান মূলধন সংগ্রহ করতে হবে। ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিং বা আইপিও'র মাধ্যমে তা ২০২৪ সালের ডিসেম্বর নাগাদ করার কথা বলা হয়েছে।  

ঋণ অনুমোদন সংক্রান্ত বাছাই কমিটি বলেছে, জনসাধারণের কাছে শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে বাংলালিংককে তাদের মোট পরিশোধিত মূলধনের কমপক্ষে ১০ শতাংশের সমান মূলধন সংগ্রহ করতে হবে। ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিং বা আইপিও'র মাধ্যমে তা ২০২৪ সালের ডিসেম্বর নাগাদ করার কথা বলা হয়েছে।  

ব্যবসা সম্প্রসারণে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) থেকে ১১ মিলিয়ন ডলার ঋণ নেওয়ার অনুমতি পেয়েছে শতভাগ রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠান এনভয় টেক্সটাইলস লিমিটেড। কোম্পানিটি তাদের বিদ্যমান ক্যাপাসিটি বাড়াতে ঋণের অর্থে ক্যাপিটাল মেশিনারি ও যন্ত্রপাতি আমদানি করবে।

এনভয় গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুস সালাম মুর্শেদি দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "আমাদের স্পিনিং, ইয়ার্ন ডাইং, ফেব্রিক্সসহ সব ইউনিট রয়েছে। কোভিডকালে সময়মত পণ্য সরবরাহ করার মাধ্যমে ক্রেতাদের আস্থা অর্জন করায় এখন রপ্তানি অর্ডার আরও বাড়ছে। তাই, রপ্তানি বাড়াতে বৈদেশিক ঋণ নিয়ে বিদ্যমান ইউনিটগুলোর আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।"  

স্থানীয় এবং বৈদেশিক উভয় চাহিদা পূরণের জন্য, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের একটি সহযোগী সংস্থা- আরএফএল ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড যুক্তরাজ্য ভিত্তিক ব্রিটিশ ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পিএলসি থেকে ২৩ মিলিয়ন ডলার ঋণ নেওয়ার অনুমোদন পেয়েছে।

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল টিবিএসকে বলেন, "অভ্যন্তরীণ ও রপ্তানি চাহিদা মেটাতে আমাদের গ্রুপ মোবাইল হ্যান্ডসেট, রেফ্রিজারেটর, এয়ারকন্ডিশনারসহ বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য উৎপাদন বাড়াতে আরএফএল ইলেক্ট্রনিক্স এর বিভিন্ন ইউনিট সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে।"  

তবে কোন ইউনিট সম্প্রসারণে ঋণের অর্থ ব্যয় হবে তা সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি তিনি। 

বেক্সিমকো নামে অধিক পরিচিত বাংলাদেশ এক্সপোর্ট- ইমপোর্ট কোম্পানি লিমিটেড জার্মানির আইএনজি ব্যাংক থেকে ৩৩ মিলিয়ন ইউরো ঋণ নেওয়ার অনুমোদন চেয়ে আবেদন করেছিল, যা অনুমোদন করেছে কমিটি। ঋণের অর্থ থেকে ২৯.৩৩ মিলিয়ন ইউরো জার্মানির সাপ্লায়ার টেক্সটিমা এক্সপোর্ট ইমপোর্ট জিএমবিএইচ'কে পরিশোধ করবে বেক্সিমকো। বাকিটা এক্সপোর্ট ক্রেডিট এজেন্সি প্রিমিয়াম হিসেবে দেওয়া হবে ইউলার হারমিস এজি'কে।
 
মূলত গাজীপুরের কাশিপুরে অবস্থিত বেক্সিমকো গ্রুপের টেক্সটাইল কম্পোজিট (স্পিনিং, ওভেন, ডেনিম, নিট ফেব্রিক ডাইং অ্যান্ড ফিনিশিং) সুইং অ্যান্ড পিপিই ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্টারপ্রাইজের জন্য এ ঋণ নেওয়া হবে।          

আকিজ সিরামিক্স লিমিটেড ১৮টি বিলের ম্যাচুরিটি এক্সটেনশনের জন্য ৯.০৮ মিলিয়ন ইউরোর রিফাইন্যান্সিং এর আবেদন অনুমোদন করেছে কমিটি।
ময়মনসিংহের ত্রিশালে আকিজ গ্রুপের এই অঙ্গপ্রতিষ্ঠান টাইলস ও স্যানিটারিওয়্যার উৎপাদন করছে। 

কমিটির কাছে আবেদনে আকিজ সিরামিক্স বলেছে, কোম্পানিটি তাদের বার্ষিক উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতে চায়। একারণে প্রকল্পটির বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি করতে আনসেন্স পেয়েবল অ্যাট সাইট (ইউপিএএস) এলসি খুলেছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের তারিখ এক বছর পিছিয়ে যাওয়ার অনুমান করা হলেও, এরমধ্যেই ইউপিএএস ঋণপত্রের বিপরীতে দায় সৃষ্টি করা হয়েছে। মেয়াদি ঋণের রিপেমেন্ট শিডিউলের সাথে আকিজ সিরামিক্সের অর্থ প্রবাহ সমন্বয় করতে ইউপিএএস- এর এক বছর মেয়াদ বৃদ্ধির প্রয়োজন ছিল। 

আবুল খায়ের প্রসেসিং লিমিটেড সৌদি আরবের দ্য ইসলামিক করপোরেশন ফর দ্য ডেভেলপমেন্ট অব দ্য প্রাইভেট সেক্টর (আইসিডি) থেকে ২২.৫০ মিলিয়ন ইউরো ঋণ প্রস্তাব সংশোধনের অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। গত বছরের জুনে এই ঋণের অনুমোদন পেয়েছিল কোম্পানিটি।

আবুল খায়ের গ্রুপ জানিয়েছে, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) থেকে বিদেশি ঋণের অনুমোদন পাওয়ার পর কোম্পানিটি তাদের ঋণদাতা আইসিডির সাথে যোগাযোগ করেছে। সে অনুসারে বাণিজ্যিক ও আইনি প্রক্রিয়ার উদ্যোগও নিয়েছে আইসিডি। তারা আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় আইনি পরামর্শকও নিয়োগ করেছে। তবে এই প্রক্রিয়া ও নথিপত্র চূড়ান্তকরণে দীর্ঘ সময় লেগে যায় কোভিড-১৯ সংক্রান্ত বিধিনিষেধ এবং সংশ্লিষ্ট টিমের সদস্যদের ওপর এর প্রভাবের কারণে।  

একইসময় মেশিনারি আমদানির পেমেন্টের তারিখ এসে যায়। ফলে কোম্পানিটিকে নির্দিষ্ট তারিখে আর্থিক খেলাপি এড়াতে নিজস্ব চলতি মূলধন থেকে সকল দায় পরিশোধ করতে হয়।

এছাড়া, ওশেন নিটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিজ, আর্গন স্পিনিং লিমিটেড, ইয়ুথ স্পিনিং মিলস লিমিটেড এবং ওয়ে এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমেটেড ব্যবসা সম্প্রসারণে বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ গ্রহণের অনুমোদন পেয়েছে। অন্যদিকে, প্রস্তাবিত ম্যাচিউরিটির মেয়াদ বৃদ্ধির অনুমোদন পেয়েছে মতিন স্পিনিং মিলস, কলম্বিয়া ওয়াশিং প্লান্টস লিমিতেড, বঙ্গ বিল্ডিং মেটারিয়ালস লিমিটেড এবং টোটাল ফুড প্রসেসিং প্রাইভেট লিমিটেড। 

বিদেশি ঋণের অনুমোদন পাওয়া কোম্পানিগুলোর গ্যারান্টার স্থানীয় ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক এবং ব্র্যাক ব্যাংক।

ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট এর নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, বাংলাদেশের বেসরকারিখাতের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ প্রায় ১৮ বিলিয়ন ডলার। বেসরকারিখাতের ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য নতুন করে বিদেশি ঋণের অনুমোদন দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা আছে।

তিনি বলেন, চলমান বিশ্ব পরিস্থিতির মধ্যে বেসরকারিখাতে নতুন বিনিয়োগ কিংবা বিদ্যমান বিনিয়োগ সম্প্রসারণ নিঃসন্দেহে ভাল খবর। এতে রপ্তানি বাড়ার পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। 

"তবে যেহেতু এই মুহূর্তে আমাদের ব্যালেন্স অব পেমেন্ট ঘাটতিতে রয়েছে, তাই শুধু রপ্তানিমুখী শিল্প সম্প্রসারণে বিদেশি ঋণ নেওয়ার অনুমোদন দেওয়া যৌক্তিক হবে।"

বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটির নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম তুরস্ক থেকে মোবাইল ফোনে টিবিএসকে বলেন, যুদ্ধ, মন্দাসহ যেকোন দূর্যোগকালেও দেশ-বিদেশে ব্যবসার নতুন নতুন সুযোগ তৈরি হয়। সেসব সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যবসায়ীরা ব্যবসা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করছেন। নিশ্চয় বিনিয়োগকারীরা সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই বিদেশ থেকে ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করছেন।    

 

 

 
 
 
 
 
 
 

 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.