ডলারের সরবরাহ বাড়াতে গভর্নরের সঙ্গে ব্যাংকারদের বৈঠক

রপ্তানি আয়ের তুলনায় আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি ও টানা রেমিট্যান্সের প্রবাহ কমতে থাকায় তীব্র সংকটে পড়েছে দেশের ডলার বাজার। চাহিদা অনুযায়ী ডলার সাপ্লাই বাড়াতে রবিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে বিভিন্ন আবেদন নিয়ে বসেন ব্যাংকাররা।
এদিন বিকেলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের সঙ্গে দ্য অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (এবিবি) এবং বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেডা) এক বৈঠকে মার্কেটে ডলারের সাপ্লাই বাড়াতে বেশ কিছু দাবি জানায়।
বৈঠকে থাকা ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, ডলারের সাপ্লাই বাড়ানোর বিষয়ে গভর্নরের সঙ্গে ব্যাংকারদের কথা হয়েছে। এছাড়া চলতি অর্থবছরে রেমিট্যান্সের প্রবাহ কমছে তাই রেমিট্যান্সকে কিভাবে বাড়ানো যায় সে বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে।'
'ডলারের চাহিদা এখন নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না তবে ডলারের সাপ্লাই যদি বাড়ানো যায় তাহলে মার্কেটে ব্যালেন্স তৈরি হবে এবং ডলারের রেট স্থিতিশীল হবে। সভায় ডলারের সাপ্লাই বাড়াতে সকল ব্যাংক একযোগে কাজ করবে বলে সম্মত হয়েছে,' বলেন তিনি।
রোববার দেশে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার কিনতে খরচ করতে হয় ৯২ টাকা। যদিও গত সোমবার (৬ জুন) এক ডলার বিক্রি করেছে ৯১ টাকা ৯৫ পয়সায়। তার আগে ৫ জুন ছিল ৯১ টাকা ৫০ পয়সা, ৪ জুন ৮৯ টাকা ৯০ পয়সা। তারও আগে গত ৩১ মে ছিল ৮৯ টাকা।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, 'সভায় ডলারের সাপ্লাই বাড়ানোর জন্য বলা হয়েছে। আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার কিছু আয় বাকি পড়ে আছে, এগুলো দ্রুত কীভাবে নিয়ে আসা যায়, সে বিষয় নিয়েও আলাপ হয়েছে। সাপ্লাই সাইডটি কীভাবে আরো ভালো করা যায়, এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।' তবে ডলারের রেট নির্ধারণ নিয়ে কোনো কথা হয়নি বলে তিনি উল্লেখ করেন।
গত সপ্তাহের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ ৪১.৭০ বিলিয়ন ডলার। যা গত বছরের আগস্টে ছিল ৪৮ বিলিয়ন ডলার। চলতি অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রায় ৭ বিলিয়ন ডলার ব্যাংকগুলোর কাছে বিক্রি করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মতে, উচ্চ আমদানি ব্যয় এবং নিম্ন রপ্তানি আয় সহ চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে দেশের বাণিজ্য ঘাটতি ২৭.৫৬ বিলিয়ন ডলারের ঐতিহাসিক উচ্চতায় পৌঁছেছে।
এদিকে, মে মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ ১৩ শতাংশ কমে গিয়ে ১.৮৮ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়ায়। এপ্রিলে এর পরিমাণ ছিল ২.০১ বিলিয়ন ডলার; অর্থাৎ মে মাসের রেমিট্যান্স প্রবাহ আগের মাসের তুলনায় ৬.২৩% কমেছে।
এছাড়াও চলতি অর্থবছরের (জুলাই-মে) ১১ মাসে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯.১৯ বিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ১৫.৯৪% কম।