কোভ্যাক্সের মতোন করে বৈশ্বিক এক খাদ্য-জোট গঠনে বাংলাদেশকে চায় ফ্রান্স 

অর্থনীতি

05 April, 2022, 12:20 am
Last modified: 05 April, 2022, 09:39 am
আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ার গরিব দেশগুলোতে খাদ্য সরবরাহ করতে এই উদ্যোগে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ চায় ফ্রান্স

ভ্যাকসিন সরবরাহের কোভ্যাক্স জোটের মতোই খাদ্যের মজুদের জন্য বৈশ্বিক খাদ্য জোট গড়ে তোলার আলোচনা চলছে আন্তর্জাতিক মহলে। দাম অস্থিতিশীল এমন দেশগুলোতে খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে আর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে ভবিষ্যৎ খাদ্য ঘাটতির আশঙ্কার কারণে প্রধান প্রধান ফসল উৎপাদনকারী দেশগুলোতে উদ্বৃত্ত ফসল থেকে এ মজুদ গড়ে তোলা হবে।

গত ২৪ মার্চ জি-৭ সম্মেলনে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ 'ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার রেসিলিয়েন্স মিশনে'র (এফএআরএম) এ ধারণা সামনে আনেন। ধনী দেশগুলোও সম্মতি দিয়েছে এতে। বিষয়টি নিয়ে এখন জি-২০'র মতো বড় জোটে আলোচনা শুরু হবে। চীন ও ভারতের মতো বড় দুটি খাদ্যশস্য উৎপাদক ও ক্রেতা দেশ আছে এ জোটে।

আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ার গরিব দেশগুলোতে খাদ্য সরবরাহ করতে এই উদ্যোগে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ চায় ফ্রান্স। গত ২৭ মার্চ ঢাকায় নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত জ্যঁ ম্যাহা শুজ এনিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নোট ভারবাল পাঠিয়েছেন।

"কৃষি উৎপাদন বাড়াতে আর সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোতে সরবরাহ নিশ্চিত করতে আমাদের সহযোগীদের সঙ্গে একত্রে একটি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারি আমরা," বলা হয় ওই চিঠিতে।

এই উদ্যোগে সম্পৃক্ত হওয়ার বিষয়ে কৃষি, খাদ্য ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে আগামী ১০ এপ্রিলের মধ্যে মতামত জানাতে বলে চিঠি পাঠিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

উদ্যোগটির আওতায় খাদ্য উৎপাদনকারী দেশগুলো স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বেশি খাদ্য উৎপাদন করবে। উদ্বৃত্ত খাদ্য কোভ্যাক্সের মতো একটি বৈশ্বিক সরবরাহ জোটের আওতায় খাদ্য ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোকে সরবরাহ করবে।

টেকসই খাদ্য উৎপাদনে বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও সহনশীল কৃষি ভ্যালু চেইন নিশ্চিত করবে এই উদ্যোগ।

ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, গ্রেট গ্রিন ওয়াল ও প্ল্যান্ট প্রোটিন ইনিশিয়েটিভের মতো বড় পরিসরের কর্মসূচির গতি বাড়িয়ে গ্রামীণ উন্নয়ন ও আফ্রিকায় কৃষি খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

এই পরিকল্পনার আরেকটি দিক হলো- কৃষি কাঁচামালের ওপর নিষেধাজ্ঞা না দেওয়ার ব্যাপারে বহুপাক্ষিক অঙ্গীকার আদায় করা। কোভিড-১৯ সংকটের সময় রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার কারণে ভ্যাকসিনের রপ্তানি বাধার মতো জটিলতা এড়াতে এ পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।

ফার্ম টু ফর্কের মতো পরিকল্পনার ধারণাও যুক্ত হবে এতে। ফার্ম টু ফর্কে ২০৩০ সালের মধ্যে কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের ব্যবহার ৫০ ও ২০ শতাংশ কমিয়ে আনার কথা বলা হয়েছে।

জরুরি সরবরাহ প্রয়োজন এমন দেশগুলোতে সরবরাহের বরাদ্দ নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) এবং খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সহায়তা চাইবে ফ্রান্স।

শুক্রবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন-চীনের সম্মেলনে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের সঙ্গে এনিয়ে আলোচনা হয়। আগামী ৮ এপ্রিল খাদ্য ও কৃষি সংস্থার বিশেষ বৈঠকেও এনিয়ে আলোচনা হবে।

রাশিয়া-ইউক্রেনের মতো দেশের যুদ্ধের মতো গুরুতর সংকট খুব কমই হতে পারে বৈশ্বিক খাদ্য বাজারের জন্য। গত পাঁচ বছরে বিশ্বের ৩০ শতাংশ গম, ১৭ শতাংশ ভুট্টা, পশুখাদ্যের অন্যতম উপাদান যবের ৩২ শতাংশ, ৭৫ শতাংশ সূর্যমুখী বীজ তেল রপ্তানি করেছে দেশ দুটি।

নিষেধাজ্ঞার কারণে খাদ্যশস্য রপ্তানি করতে পারছে না রাশিয়া। অন্যদিকে, রাশিয়া কৃষ্ণ সাগর অবরুদ্ধ করে রাখায় সমুদ্রপথে রপ্তানি করতে পারছে না ইউক্রেন। অন্য দেশে রেলপথে রপ্তানি করার মতো পর্যাপ্ত রেলগাড়িও নেই দেশটির।

এদিকে খাদ্য অনিশ্চয়তার মুখে থাকা দেশগুলোকে সাম্প্রতিক সময়ের দাম বৃদ্ধি আরও খাদের কিনারে ঠেলে দেবে।

গত পাঁচ বছর প্রায় স্থিরাবস্থানে থাকার পর মহামারিকালে বিশ্বে ক্ষুধার্ত জনসংখ্যা ১৮ শতাংশ বেড়ে আগের ৭২ কোটি থেকে দাঁড়িয়েছে ৮১ কোটি ১০ লাখে।  

জাতিসংঘ জানিয়েছে, শুধুমাত্র বিশ্বব্যাপী খাদ্য বাজারে যুদ্ধের প্রভাবে অতিরিক্ত ৭৬ থেকে এক কোটি ৩১ লাখ মানুষকে অনাহারে পড়তে হতে পারে।

আর্মেনিয়া, মঙ্গোলিয়া, কাজাখস্তান এবং ইরিত্রিয়ার মতো কয়েকটি দেশ পারতপক্ষে তাদের সমস্ত গম রাশিয়া এবং ইউক্রেন থেকে আমদানি করতো। এখন তাদের অবশ্যই অন্য উৎসের সন্ধান করতে হবে। কিন্তু তাদের তুরস্ক, মিশর, বাংলাদেশ এবং ইরানসহ অনেক বড় ক্রেতা দেশের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হচ্ছে, শেষোক্তরাও তাদের গম চালানের ৬০ শতাংশের বেশি যুদ্ধরত দুই দেশ থেকে সংগ্রহ করেছে।    

বিশ্বের সবচেয়ে বড় গম উৎপাদক ও ভোক্তা হলো-  চীন। এশীয় অর্থনৈতিক পরাশক্তিটি খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিশ্ববাজার থেকে চলতি বছর যতোটা ধারণা করা হয়েছিল, তার চেয়েও বেশি ক্রয় করবে। ফলে বাংলাদেশসহ অন্য আলোচ্য দেশগুলোকে আরো ছোট সরবরাহের জন্যই নিজেদের মধ্যে দরাদরির প্রতিযোগিতায় নামতে হবে।

গত ৫ মার্চ চীন সরকার জানিয়েছে, গেল বছরের ভয়াবহ বন্যার কারণে দেশটির এক-তৃতীয়াংশ গম ফসলের বীজ বপন পিছিয়ে গেছে। আসন্ন ফসল সংগ্রহের মৌসুমে তাই ফলনের চিত্র হতাশাজনক হতে চলেছে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানি, গ্যাস ও খাদ্যপণ্যের ক্রমবর্ধমান দামের প্রভাব বাংলাদেশেও পড়তে শুরু করেছে।

আগামী দিনেও যুদ্ধের প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

বাংলাদেশও এখন খাদ্য আমদানির বিকল্প উৎস খুঁজছে

বাংলাদেশ রাশিয়া থেকে গম আমদানিতে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। এ বাস্তবতায়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (পিএমও) দেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিকল্প উৎস থেকে পর্যাপ্ত গম ও ভুট্টা আমদানি করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে পরামর্শ দিয়েছে।

নাম প্রকাশের শর্তে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "যদি গম আমদানি বাধাগ্রস্ত হয়, তার প্রভাব পড়বে চালের ওপর। চালের দাম বাড়লে তা গরিবের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যেতে পারে। এ অবস্থায় হাওরে আগাম বন্যায় ফসলের ক্ষতি হলে- তা বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আরও ঝুঁকি সৃষ্টি করবে।"

"২০১৭ সালে আগাম বন্যায় হাওরের ফসলহানি হওয়ার পরও খাদ্য সংকটে পড়েছিল বাংলাদেশ। ওই সময় রোহিঙ্গা সংকটের মধ্যেও চাল আমদানির জন্য বাংলাদেশের খাদ্যমন্ত্রীকে মিয়ানমার সফর করতে হয়েছিল"- যোগ করেন তিনি।     

দরিদ্র আফ্রিকান এবং আরব দেশগুলিতে খাদ্যের ক্রমবর্ধমান দাম দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক ও রাজনৈতিক উত্থানের একটি অনুঘটক হয়ে দাঁড়িয়েছে, এ সংকট এড়াতে এসব দেশের অনেকেই রুটির মতো প্রধান খাবারে ভর্তুকি দেয়। মূল্যস্ফীতি ইতোমধ্যেই মরক্কোতে বিক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। সুদানে নতুন করে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে, বিক্ষোভ দমনে সরকারের সহিংসতার পথ বেছে নেওয়াও আগুনে ঘি ঢালছে। 

ইয়েমেন, সিরিয়া, দক্ষিণ সুদান এবং ইথিওপিয়াসহ দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের দ্বারা প্রভাবিত দেশগুলিতে এরমধ্যেই দেখা দিয়েছে অনাহার পরিস্থিতির জরুরি অবস্থা। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, তাদের অবস্থা আরো দ্রুত অবনতির দিকে এগিয়ে চলেছে। 

আফগানিস্তানে, ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে মানবিক সঙ্কট ইতিমধ্যেই তীব্র হয়েছে। দেশটির অর্ধেকের বেশি জনসংখ্যা বা প্রায় দুই কোটি ৩০ লাখ আফগানের নেই পর্যাপ্ত খাবার, যুদ্ধ তাদের মুখে খাবার তুলে দেওয়াকে আরো কঠিন করে তুলেছে।  

দক্ষিণ এশিয়ার দেশ শ্রীলঙ্কা কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি। বৈদেশিক মুদ্রার তীব্র ঘাটতি এবং খাদ্য ও জ্বালানির ঘাটতি চাল ও দুধসহ মৌলিক খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। দ্বীপ দেশটি ক্রমবর্ধমান মূল্য এবং উচ্চ বৈদেশিক ঋণের দ্বিগুণ ক্ষতির চাপে পিষ্ট হচ্ছে।

খুব ভালো একটি উদ্যোগ

বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন টিবিএসকে বলেন, বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর জন্য বিকল্প উৎস থেকে খাদ্য সংগ্রহের চেষ্টা- অবশ্যই খুব ভালো একটি উদ্যোগ।  

ঘূর্ণিঝড় সিডর ও পরপর দু'টি বন্যার কারণে ২০০৮ সালে বাংলাদেশ চরম খাদ্য সংকটে পড়ে। ওই সময় টাকা নিয়ে ঘুরেও চাল আমদানি করা সম্ভব হয়নি। কারণ, ভারত, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশ দফায় দফায় চাল রপ্তানির ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ করে দিয়ে কার্যত রপ্তানি বন্ধ করে দেয়।

"খাদ্যপণ্যের চড়া দামের কারণে তৎকালীন সরকার ভাতের ওপর চাহিদা কমাতে বেশি করে আলু খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া ছাড়াও 'অপারেশন ডাল-ভাত' চালু করেছিল। এ ধরনের উদ্যোগ থাকলে বাংলাদেশ তখন খাদ্য সংকট কাটাতে পারতো"- উল্লেখ করেন জাহিদ হোসেন।

তিনি বলেন, উদ্যোগটি ভালো হলেও অনেক সময় ক্ষমতাধর দেশগুলো তা মানতে চায় না। যুদ্ধকালীন সময়ে তারা উদ্বৃত্ত খাদ্যপণ্য রপ্তানি না করে মজুদ করে রাখে। ফলে খাদ্য ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর সংকট আরও ঘনীভূত হয়। 

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার এমন পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য একটি কাঠামো রয়েছে, তবে তা কার্যকর নয়। সেক্ষেত্রে নতুন উদ্যোগ কতটা ফলপ্রসূ হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে বলে জানান তিনি।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) পরিচালক ড. আব্দুর রাজ্জাক টিবিএসকে বলেছেন যে, 'ফার্ম' উদ্যোগটি স্পষ্টতই রাশিয়া-ইউক্রেন দ্বন্দ্বের প্রতিক্রিয়া যা এখন বিশ্বব্যাপী খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খলকে হুমকির মুখে ফেলেছে এবং তা নিয়ে বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তার উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।

উদ্দেশ্যের পরিপ্রেক্ষিতে, উদ্যোগটি সময়োপযোগী এবং ফরাসি প্রস্তাবের কিছু অংশও অনুসরণ করার মতো বলে মন্তব্য করেন তিনি।

"তবে, এই পর্যায়ে উদ্যোগটির মাত্র কয়েকটি ব্যাপারে বিশদ জানা যাচ্ছে এবং এটির বাস্তবায়ন সম্ভবত পরিকল্পনার চেয়ে অনেক বেশি জটিল হবে"-  উল্লেখ করেন তিনি। 

আব্দুর রাজ্জাক জানান, প্রস্তাবের বাণিজ্য ভিত্তির অধীনে, কোন দেশগুলি খাদ্যের কৌশলগত মজুদ ধারণ করে- যা মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করা যাবে তা স্পষ্ট নয়। 

এছাড়াও, মজুদ প্রকাশের পদ্ধতিগুলি অস্পষ্ট থাকে। মজুদ ধারণকারী দেশগুলি তাদের বাজারকে ব্যবহার করে দাম নিয়ন্ত্রণ করবে নাকি এর কিছু অংশ সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত উন্নয়নশীল দেশগুলিতে পাঠানো হবে সেবিষয়েও স্বচ্ছতা না থাকার উল্লেখ করেন তিনি। 

তবে উদ্যোগটিতে 'এগ্রিকালচারাল মার্কেট ইনফরমেশনে সিস্টেম'- এর মাধ্যমে কৃষি বাজারের উৎপাদন, মূল্য এবং বাণিজ্য বিধিনিষেধের সর্বশেষ তথ্যাবলীর প্রাপ্যতা একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিশ্চিত করার আহ্বান রয়েছে।   
 
 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.