শহর থেকে ‘ঘরে ফেরা’ মানুষ পাবে সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা ঋণ

অর্থনীতি

টিবিএস রিপোর্ট
04 January, 2022, 11:15 am
Last modified: 04 January, 2022, 11:38 am
তহবিলের আওতায় তিন বছর মেয়াদে সর্বোচ্চ ৬ শতাংশ সুদে সর্বনিম্ম ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ বিতরণ করতে পারবে ব্যাংকগুলো।

কোভিড-১৯ মহামারি ও অন্যান্য কারণে শহর থেকে গ্রামে ফিরে যাওয়া জনগোষ্ঠীদের জন্য 'ঘরে ফেরা' স্কিমের আওতায় সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা ঋণ দিবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সোমবার দেশে কার্যরত সকল তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা বরাবর কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ বিষয়ে একটি সার্কুলার জারি করেছে।

এ স্কিমের নাম দেওয়া হয়েছে, 'কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র্য বিমোচনে 'ঘরে ফেরা' মানুষের জন্য ৫০০ কোটি টাকার তহবিল'। তবে এই তহবিলের পরিমাণ প্রয়োজনে আরও বৃদ্ধি করা হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

তহবিলের আওতায় তিন বছর মেয়াদে সর্বোচ্চ ৬ শতাংশ সুদে সর্বনিম্ম ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ বিতরণ করতে পারবে ব্যাংকগুলো।

২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ নির্ধারণ করা হলেও গ্রাহক পর্যায় থেকে আদায় কার্যক্রম স্কিমের মেয়াদ পরবর্তী সময়েও অব্যাহত থাকবে।

রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংক এবং বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর মধ্যে যেসব ব্যাংক আলোচ্য কর্মসূচিতে অংশ নিতে ইচ্ছুক ব্যাংকগুলোকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিভাগে আবেদন করতে হবে।

এ স্কিমের আওতায় অংশগ্রহণকারী ব্যাংকসমূহ বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নির্ধারিত ০ দশমিক ৫ শতাংশ সুদে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা পাবে। তবে ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে কোনো নিরাপত্তা জামানত নেওয়া যাবে না।

একইসঙ্গে এ স্কিমের আওতায় বিতরণকৃত ঋণের মধ্যে নারী ঋণ গ্রহিতা ও উদ্যোক্তাদেরকে ন্যূনতম ১০ শতাংশ ঋণ দিতে হবে।

২ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণে ৩ মাস গ্রেস পিরিয়ডসহ পরিশোধের মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ ২৪ মাস। ২ লাখ টাকার বেশি তবে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণে ৬ মাস গ্রেস পিরিয়ডসহ পরিশোধের সময় হবে সর্বোচ্চ ৩৬ মাস।

ঋণ বিতরণকারী ব্যাংকগুলো শাখা, উপশাখা, এজেন্ট, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ বিতরণ ও আদায় করতে পারবে। প্রয়োজনে আউটসোর্সিং ফ্যাসিলিটেটর (শাখা প্রতি একজন) নিয়োগ করে তাদের মাধ্যমে গ্রাহক ফ্যাসিলিটেটরের কাজ করতে পারবে।

তবে, এ ঋণ প্রদান কার্যক্রমে এনজিও, ক্ষুদ্র ঋণ প্রতিষ্ঠান বা অনুরূপ অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানকে ফ্যাসিলিটেটর এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে না।

ঋণ গ্রহণকারী খেলাপি না হলে ঋণ পরিশোধের পর পুনরায় নতুন ঋণ নিতে পারবে। তবে এ স্কিমের আওতায় গৃহীত ঋণ কোনোভাবেই গ্রাহকের পুরাতন ঋণ সমন্বয়ের জন্য ব্যবহার করা যাবে না।

স্বল্প পুঁজির স্থানীয় ব্যবসা ও পরিবহনখাতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি যানবাহন ক্রয়সহ ক্ষুদ্র প্রকৌশল শিল্প, মৎস্য চাষ, গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি পালন, তথ্য প্রযুক্তি সেবাকেন্দ্র, অন্যান্য সেবা উৎসারী কার্যক্রম, বসতঘর নির্মাণ বা সংস্কার, সবজি ও ফলের বাগান, কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয় ও ফসল বিপণনে জড়িতরা এই তহবিল থেকে ঋণ পাবেন।

এছাড়া গ্রামীণ অর্থনীতিতে গতিসঞ্চার করে এমন কার্যক্রম, যেমন ছোট ছোট ব্যবসা, বিশেষ করে ধান ভাঙানো, চিড়া ও মুড়ি তৈরি, নৌকা ক্রয়, মৌমাছি পালন, সেলাই মেশিন ক্রয়, কৃত্রিম গহনা তৈরি, মোমবাতি তৈরি, শারীরিক প্রতিবন্ধী ও দরিদ্র মহিলাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয় এমন কাজের জন্যও এই স্কিমের আওতায় ঋণ গ্রহণ করতে পারবে।

এসব ক্ষেত্রে সরকারি সংস্থা থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা অগ্রাধিকার পাবেন বলে সার্কুলারে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.