অপ্রস্তুত বাণিজ্য মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীর উপচেপড়া ভিড়  

অর্থনীতি

02 January, 2022, 12:30 pm
Last modified: 02 January, 2022, 12:38 pm
নতুন বছরের প্রথম দিনটি সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় ঢাকা ও এর আশেপাশের অনেকেই তাদের পরিবার নিয়ে এসেছিলেন বাণিজ্য মেলা উপভোগ করতে। কিন্তু মেলার অপ্রস্তুত অবস্থা দেখে হতাশ হতে হয়েছে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের।

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার প্রথম দিনেই ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের ভিড়ে মুখরিত হয়েছে পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী এক্সিবিশন সেন্টারের বাণিজ্যমেলা প্রাঙ্গণ। তবে মানুষের উপস্থিতি প্রত্যাশার চেয়ে বেশি থাকলেও ক্রেতারা হতাশ অপ্রস্তুত মেলা নিয়ে।

শনিবার সকালে ২৬ তম বাণিজ্য মেলা উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুপুরের পর থেকেই বাড়তে থাকে ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের উপস্থিতি। নতুন বছরের প্রথম দিনটি সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় ঢাকা ও এর আশেপাশের অনেকেই তাদের পরিবার নিয়ে এসেছিলেন বাণিজ্য মেলা উপভোগ করতে। 

মেলার প্রধান গেট দিয়ে ঢুকতেই শোনা যায় বিভিন্ন স্টল তৈরীর হাতুড়ির টুংটাং আওয়াজ। বাইরের ২/৩ টি প্যাভিলিয়ন বাদে কোনো স্টলই তেমন প্রস্তুত ছিল না। কোনো স্টলে রং করতে কিংবা পণ্য সাজাতেই ব্যস্ত দেখা যায় স্টলের কর্মচারীদের। মূল ভবনের ভেতরেও অধিকাংশ স্টলই ছিল অপ্রস্তুত।

কিন্তু আয়োজক কমিটি বলছে, অন্য বছরের তুলনায় এবার মেলায় মানুষের উপস্থিতি বেশি হবে এবং বিক্রিও ভালো হবে।

মেলার এই অপ্রস্তুত অবস্থার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রতিবছরই প্রথমে এরকম অপ্রস্তুত থাকে মেলা। প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের জন্য ৩/৪ টি স্টল প্রস্তুত করা হয়। সেই তুলনায় এবছর অনেক স্টলই প্রস্তুত বলে জানান তারা।

তেজগাঁও থেকে পুরো পরিবারসহ মেলায় এসেছেন জেসমিন আক্তার। তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, "এত দূর থেকে আসার পরে দেখছি অধিকাংশই অপ্রস্তুত। অনেক দোকান খুললেও তাদের বিক্রি শুরু হয়নি৷ পরিবারসহ এতো টাকা ভাগা দিয়ে এসে কি লাভ হলো!"

তিনি আরও বলেন, তেমন কোনো দোকান না খোলায় সবাইকে নিয়ে খেতে আসলাম, কিন্তু এখানে খাবারের ক্যান্টিনও পুরোপুরি চালু হয়নি। আধাঘন্টা ধরে খাবার নিতে পারিনি। ঘুরতে আসলেও তো বিপদে পড়তে হবে।

মতিঝিল থেকে পরিবারসহ মেলায় আসা শামসুল আলম বলেন, "বছরের প্রথম দিন শনিবার হওয়ায় ভিড় থাকবে সেটা বুঝে আয়োজকদের সকল প্রস্তুতি থাকাটা দরকার ছিল। একদিকে রাস্তার বেহাল দশা আবার মেলা অপ্রস্তুত এতে পরিবার নিয়ে অস্বস্তিতেই পড়তে হয়েছে।"

প্রাণের সেলস এক্সিকিউটিভ ইমাম আশিক, "আমরা যে আশঙ্কা করেছিলাম লোকজন হবে না কিন্তু উপস্থিতি ভালোই হচ্ছে। এখানে সবচেয়ে বড় যে সমস্যা হচ্ছে যাতায়াত। আমাদের নিজেদের আসতেও বেগ পেতে হয়। যাতায়াত ব্যবস্থা আর একটু ভালো করলে সবার জন্য একটু সুবিধা হতো।"

ক্যান্টিনের দায়িত্বে থাকা পর্যটন কর্পোরেশন ডেপুটি ম্যানেজার মোতাহারুল ইসলাম বলেন, আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত ছিলাম না। তাই খাবার তৈরি ও সরবরাহে একটু সমস্যা হচ্ছে। আগামীকাল থেকে আমরা পুরোপুরি প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। আমাদের তাৎক্ষণিকভাবে তৈরী করে দিতে হয় তাই একটু সময় লাগে। তবে যে পরিমাণ চাহিদা আছে সেটা পূরণ করা সম্ভব।

মেলার আয়োজক কমিটির পরিচালক ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর সচিব মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন, আমাদের ১৬০০ পুলিশ ও ট্রাফিক সদস্য রয়েছে। পাশাপাশি র্যাব, ডিবিসহ সাদা পোশাকে আইন শৃঙ্খলার সদস্যরা রয়েছেন।

তিনি আরও জানান, মেলায় ১৪৭ টি বিল্ডিং ক্যামেরা এবং রাস্তায় অতিরিক্ত ৬০ টি সিসি ক্যামেরা দেওয়া হয়েছে। দুই ফ্লোর মিলে ৫০০ গাড়ি সব মিলে ১৩০০ গাড়ি পার্কিং করতে পারবে এখানে।

দূরত্বের কারণে কোনো প্রভাব পড়বে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি টিবিএসকে বলেন, রাস্তার অধিকাংশ স্থানই ক্লিয়ার হয়ে গিয়েছে। শেরে বাংলা নগরের থেকে এখানে লোকজনের আনাগোনা বেশি হবে।

অধিকাংশ স্টল অপ্রস্তুতের বিষয়ে তিনি বলেন, আগামীকাল রাতের মধ্যে আশাকরি পুরো মেলা প্রস্তুত হয়ে যাবে। আগের মেলার থেকে এবারের মেলায় প্রায় অর্ধেক স্টল হয়েছে। আমাদের বরাদ্দের পরেও অনেকে স্টল নেওয়ার জন্য আবেদন করেছিল কিন্তু আমরা দেইনি। মানুষের চলাচলে যাতে সুবিধা হয় তাই স্টল কম বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.