ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের শনাক্তে ব্যাংকগুলোকে বিশেষ ইউনিট গঠনের নির্দেশ

অর্থনীতি

টিবিএস রিপোর্ট
12 March, 2024, 08:20 pm
Last modified: 12 March, 2024, 10:12 pm
এই ইউনিটে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এর দুই ধাপের নিচের কর্মকর্তারা প্রধান হবেন। এর মূল কাজ হবে কোন খেলাপি গ্রাহক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা কি না- তা শনাক্ত করা।

ব্যাংকখাতের সুশাসন বাড়াতে ও খেলাপি ঋণ কমাতে এবার প্রকৃত খেলাপি গ্রাহকদের তালিকা চাইছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

আজ মঙ্গলবার (১২ মার্চ) কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতা শনাক্তকরণ এবং তাদের বিরুদ্ধে গৃহীত ব্যবস্থা নিয়ে সার্কুলার জারি করেছে।

সার্কুলারে 'ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতা শনাক্তকরণ ইউনিট' নামে পৃথক একটি ইউনিট আগামী ৯ এপ্রিলের মধ্যে গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

এই ইউনিটে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এর দুই ধাপের নিচের কর্মকর্তারা প্রধান হবেন। এর মূল কাজ হবে কোন খেলাপি গ্রাহক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা কি না- তা শনাক্ত করা।

কোন গ্রাহক খেলাপি হলে তার ৩০ দিনের মধ্যে সে ইচ্ছাকৃত খেলাপি গ্রাহক কিনা তা এ ইউনিট নির্ধারণ করবে। তবে এই সময়ের মধ্যে নির্ধারণ করতে না পারলে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের অনুমোদন নিয়ে আরও ৩০ দিন সময় বাড়ানো যাবে।

ইচ্ছাকৃত খেলাপি গ্রাহকদের তালিকা তিন মাস পরপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে পাঠাতে হবে। সেখানে গ্রাহকের নাম উল্লেখপূর্বক কি কারণে ইচ্ছাকৃত খেলাপি হয়েছে তা উল্লেখ করতে হবে। এবং তাকে ব্যাংক কর্তৃক চিঠি দিয়েছে কিনা তাও স্পষ্ট করতে হবে।

তবে ইউনিটগুলো চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে কার্যক্রম শুরু করবে। 

সার্কুলারে বলা হয়, কোনো ব্যাংক এসব নির্দেশনা লঙ্ঘন করলে বা ইচ্ছাকৃতভাবে বর্ণিত নির্দেশনা লঙ্ঘন করেছে মর্মে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট বিবেচিত হলে ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে উক্ত লঙ্ঘনের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে অন্যূন ৫০ লাখ টাকা এবং অনধিক ১ কোটি টাকা জরিমানা করবে। যদি উক্ত লঙ্ঘন অব্যাহত থাকে, তাহলে উক্ত লঙ্ঘনের প্রথম দিনের পর প্রত্যেক দিনের জন্য অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক আইএমএফ এর নির্দেশনার আলোকে ২০২৬ সালের মধ্যে খেলাপি ঋণ ৮ শতাংশে নামিয়ে আনতে চাচ্ছে। এরই লক্ষ্যে সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকগুলোর যথাক্রমে ১০ শতাংশ ও ৫ শতাংশের নিচে খেলাপি ঋণ নামিয়ে আনতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকখাতের সুশাসন বাড়াতে ও খেলাপি ঋণ কমতে ১৭টি রোডম্যাপ নিয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম একটি ছিল খেলাপি ঋণগ্রহীতা শনাক্তকরণ ও তাদের বিরুদ্ধে গৃহীত পদক্ষেপ।

ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুসারে, কোনো খেলাপি গ্রাহককের নিজের, তার পরিবারের সদস্যের, স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির অনুকূলে নেয়া ঋণ পরিশোধের সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও পরিশোধ না করলে তিনি ইচ্ছাকৃত খেলাপি গ্রাহক হবেন।

কোন ঋণ গ্রাহক ব্যাংক কিংবা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হতে জালিয়াতি, প্রতারণা বা মিথ্যা তথ্য প্রদানের মাধ্যমে নিজের, তার পরিবারের সদস্যের, স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানীর নামে ঋণ সুবিধা গ্রহণ করে– তাহলে তিনি ইচ্ছাকৃত খেলাপি গ্রাহক। 

এছাড়া, কোন গ্রাহক ব্যাংক কিংবা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে যে উদ্দেশ্যে ঋণ সুবিধা গ্রহণ করেছিলেন সে উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশ্যে উক্ত ঋণ সুবিধা ব্যবহার করলে এবং তিনি খেলাপি গ্রাহক হলে ইচ্ছাকৃত খেলাপি গ্রাহক হবেন।

কোন গ্রাহক ঋণের বিপরীতে দেয়া জামানত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লিখিত পূর্বানুমতি ব্যতীত হস্তান্তর করলে, এবং তার নেয়া ঋণ খেলাপি হলে ইচ্ছাকৃত খেলাপি হিসেবে নির্ধারণ করা হবে।

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.