পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ১২,৫০০ টাকা চূড়ান্ত করল সরকার গঠিত বোর্ড

তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের জন্য মালিকপক্ষের প্রস্তাব করা ১২ হাজার ৫০০ টাকা ন্যূনতম মজুরিই চূড়ান্ত করেছে নিম্নতম মজুরি বোর্ড। এ মজুরি বিক্ষোভরত শ্রমিকদের দাবির প্রায় অর্ধেক।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) নিম্নতম মজুরি বোর্ডের ৬ষ্ঠ সভার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে এ মজুরি নিয়ে কথা বলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে পোশাক শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম মজুরি ৮ হাজার টাকা থেকে ৫৬ শতাংশ বাড়িয়ে ১২ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সভার পর পোশাক শ্রমিকদের প্রতিনিধি সিরাজুল ইসলাম রনি বলেন, 'আরএমজি শিল্পের বাস্তবতা এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার আলোকে শ্রমিকরা বোর্ডের সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন।'
তবে সভায় পোশাক শ্রমিকদের রেশন দেওয়ায় বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে সরকার তাদের জন্য ফ্যামিলি কার্ড চালু করার পরিকল্পনা করছে বলে জানান মন্নুজান সুফিয়ান।
আন্দোলনরত পোশাক কর্মীদের কাজে ফেরার আহ্বানও জানান তিনি।
এর আগে আজ শ্রমিকদের জন্য ১২ হাজার ৪৮০ টাকা ন্যূনতম মজুরির প্রস্তাব দেয় দেশের তৈরি পোশাক খাতের মালিকপক্ষ।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) মজুরি বোর্ডের সভায় মালিকপক্ষ এই প্রস্তাব দিয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান।
প্রসঙ্গত, ন্যূনতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা করার দাবিতে গত সপ্তাহখানেক যাবত দেশের পোশাকশ্রমিকেরা আন্দোলন করে আসছেন। অন্যদিকে মালিকপক্ষ প্রথমে ন্যূনতম মজুরি ১০ হাজার ৪০০ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব করেছিল।
এ নিয়ে গত ৩০ অক্টোবর আশুলিয়া, সাভার ও গাজীপুরের কয়েকটি শিল্পাঞ্চলে পুলিশ ও তৈরি পোশাক শ্রমিকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষে অন্তত দুইজন নিহত এবং প্রায় ৪০ জন আহত হয়।
পরে ঢাকার আশুলিয়ায় ৩টি কারখানা ভাঙচুর ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মারধরের অভিযোগে আশুলিয়া থানায় পৃথক ৩টি মামলা দায়ের করে সংশ্লিষ্ট কারখানা কর্তৃপক্ষ।
মামলাগুলোতে উসকানি ও ভাঙচুরের অভিযোগে শ্রমিক সহ দেড় হাজার ব্যক্তিকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
২০১৩ সালে পোশাক খাতের ন্যূনতম মজুরি ৭৬ শতাংশ বাড়িয়ে ৫ হাজার ৩০০ টাকা করেছিল নিম্নতম মজুরি বোর্ড। এরপর ২০১৮ সালে ন্যূনতম মজুরি তার চেয়ে প্রায় ৫১ শতাংশ বাড়িয়ে ৮ হাজার টাকা করা হয়।