কানাডায় ২০৩৪ সাল পর্যন্ত শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে বাংলাদেশ

অর্থনীতি

27 August, 2023, 11:20 pm
Last modified: 28 August, 2023, 12:27 pm
বাংলাদেশ ২০২৩ সাল থেকে লিস্ট-ডেভেলপমেন্ট কান্ট্রি ট্যারিফ (এলডিসিটি) স্কিমের আওতায় কানাডায় সম্পূর্ণ শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা ভোগ করছে। এলডিসিটি স্কিম জিপিটির আওতায় পড়ে। 

জুন মাসে কানাডার পার্লামেন্টে পাশ হওয়া একটি বিল অনুযায়ী বাংলাদেশ ২০৩৪ সাল পর্যন্ত কানাডার বাজারে শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা পাবে। 

২০২৬ সালে এলডিসি বা স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে উত্তরণ হওয়ার পর সমস্ত উন্নয়নশীল দেশের জন্য শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা বাড়িয়েছে কানাডা সরকার, যা থেকে বাংলাদেশ উপকৃত হবে।

উন্নয়নশীল দেশগুলোকে জেনারেল প্রেফারেনশিয়াল ট্যারিফ (জিপিটি) স্কিমের আওতায় শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা প্রদান অব্যাহত রাখার উদ্যোগ নিয়েছে কানাডা সরকার। এ স্কিমের আওতায় পোশাক আইটেম উৎপাদনের নিয়ম শিথিল করাসহ অন্যান্য পণ্যকেও দেশটিতে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দেওয়া হবে। 

নতুন এই স্কিমে শিল্পের শ্রম ও পরিবেশগত কমপ্লায়েন্সের ওপর ভিত্তি করে এই বাজার প্রবেশাধিকার সুবিধাগুলোকে সম্প্রসারিত করার প্রস্তাবও রাখা হয়েছে।

এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, কানাডার পার্লামেন্ট গত ৮ জুন একটি ফাইন্যান্স বিল পাশ করেছে; সেখানে জিপিটি স্কিমটির মেয়াদ ২০৩৪ সালের শেষ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।'

তিনি বলেন, এই নীতিগত সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের শিল্পকে নিরাপদ, পরিচ্ছন্ন, সবুজ এবং আরও টেকসই কর্মক্ষেত্রে রূপান্তরিত করার পাশাপাশি দেশের সামগ্রিক অবকাঠামো উন্নয়নে অবদান রাখবে।

'এখন আমাদের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার সময় এসেছে,' বলেন তিনি।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের ১১তম বৃহৎ রপ্তানি অংশীদার ছিল কানাডা। ওই অর্থবছরে দেশটিতে ১.৭২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ। এছাড়া উত্তর আমেরিকার দেশটি বাংলাদেশের পোশাকের অন্যতম প্রধান বাজারও। 

২০২২-২৩ অর্থবছরে কানাডায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক (আরএমজি) রপ্তানি ১.৫৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে, যা ২০২১-২২ অর্থবছরে ১.৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছিল। অর্থাৎ আগের অর্থবছরের তুলনায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশটিতে বাংলাদেশের রপ্তানি বেড়েছে ১৬.৫৫ শতাংশ। 

ফারুক হাসান বলেন, বাংলাদেশের এই বাজারে আরও প্রবেশের বড় সম্ভাবনা আছে। বাংলাদেশের উচিত জিপিটি প্লাস সুবিধা নিয়ে দেশটিতে রপ্তানি আরও বাড়ানোর লক্ষ্য নেওয়া। পাশাপাশি আমাদের প্রচেষ্টা ও রিসোর্সকে এই সম্ভাবনার সর্বোচ্চ সুফল আদায় করার প্রচেষ্টার ওপর কেন্দ্রীভূত করা উচিত।

বাংলাদেশ ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে লিস্ট-ডেভেলপমেন্ট কান্ট্রি ট্যারিফ (এলডিসিটি) স্কিমের আওতায় কানাডায় সম্পূর্ণ শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা ভোগ করছে। এলডিসিটি স্কিম জিপিটির আওতায় পড়ে। 

ফারুক হাসান জানান, জিপিটি স্কিম প্রতি ১০ বছর পরপর নবায়ন করা হচ্ছে। স্কিমটির বর্তমান সংস্করণের মেয়াদ ২০২৪ সালের শেষের দিকে শেষ হবে। 

তিনি আরও বলেন, এলডিসি উত্তরণ কার্যকর হওয়ার পরে মসৃণ রূপান্তর অর্জনের জন্য বিজিএমইএ প্রধান বাণিজ্য অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করছে।

'এলডিসি থেকে উত্তরণের পর শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা অব্যাহত রাখার বিষয়ে আমরা অস্ট্রেলিয়া সরকারের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি,' বলেন তিনি।

শাশা ডেনিমস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামস মাহমুদ টিবিএসকে বলেন, এটা বাংলাদেশের জন্য ভালো খবর, কারণ বাংলাদেশ এখন কানাডার বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার ভোগ করছে। 

শামস মাহমুদ বলেন, 'তবে বাংলাদেশ যেহেতু এলডিটিসি-এর আওতায় পড়েছে, তাই আমাদেরকে রুস অভ অরিজিনের শর্ত মেনে চলতে হয়েছে। এ নিয়ম অনুসারে, জিএসপি সুবিধা পেতে ২৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন দেখাতে হয়েছে।'

এখন জিপিটি প্লাস চালু হওয়ার পর এসব বিধিনিষেধ উঠে যাবে বলে জানান তিনি।

শামস মাহমুদ বলেন, এই পরিবর্তনগুলো বাংলাদেশের জন্য আশাব্যঞ্জক, কারণ বাংলাদেশ এ শিল্পের সামাজিক, পরিবেশগত ও নিরাপত্তার সমস্ত মানদণ্ড পূরণ করে বলে দৃঢ়ভাবে দেখিয়ে আসছে।

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.