ডলার প্রতি ১০২ টাকা পাবেন এক্সপোর্টাররা
এক্সপোর্টাররা এখন থেকে এক্সপোর্ট প্রসিডের ডলারের বিপরীতে আরো ১ টাকা বেশি পাবেন।
রোববার অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেইন এক্সচেঞ্জ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) এর এক অনলাইন সভায় এক্সপোর্টারদের ডলারের বিপরীতে ১০২ টাকা রেট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
উক্ত সভায় দেশের সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের এমডিরা অংশ নেন। আজ সোমবার (২ জানুয়ারি) থেকেই এ রেট কার্যকর করবে ব্যাংকগুলো।
সর্বশেষ গত ৩০ নভেম্বর এক সভায় এক্সপোর্ট প্রসিডে ডলারের দাম ১০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০১ টাকা করা হয়েছিল, যেটি ৪ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয়।
সে হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে এক্সপোর্ট প্রসিডের ডলারের দাম বাড়ালেন ব্যাংকাররা।
তবে রেমিট্যান্সের ডলারের দাম না বাড়িয়ে ১০৭ টাকাতেই রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এবিবির চেয়ারম্যান এবং ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন টিবিএসকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, "সোমবার থেকে এক্সপোর্ট প্রসিডের ডলার এনক্যাশ করার ক্ষেত্রে রেট ১ টাকা বাড়িয়ে ১০২ টাকা দেওয়া হবে।"
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি ব্যাংকের এমডি টিবিএসকে বলেন, "কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে আমাদের যে নির্দেশনা দেওয়া হয়, সেটিই এবিবি ও বাফেদার সভা করে বেসরকারি ব্যাংকের এমডিদের অবহিত করা হয়। সেভাবেই সভা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্তটি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।"
"এছাড়া এক্সপোর্ট প্রসিডে ডলারের দাম বাড়ানোর কারণে ব্যাংকগুলোর ডলারের কেনা দামও বাড়বে। ফলে সেটি ইমপোর্ট সেটেলমেন্টে ডলারের দাম কিছুটা বাড়িয়ে দেবে," বলেন তিনি।
এক্সপোর্ট প্রসিডে ডলারের দাম বাড়ানোকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বিজিএমইএ প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসান। তিনি টিবিএসকে বলেন, "আমাদের অন্য অনেক দেশের সঙ্গে রপ্তানিতে প্রতিযোগিতা করতে হয়। এখন এই পর্যায়ে রপ্তানির পরিমাণ বাড়ানো কঠিন হলেও আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।"
"ব্যাংকগুলো এক্সপোর্ট প্রসিডে ডলারের দাম বাড়ানোতে এই খাত উৎসাহিত হবে।"
অবশ্য এক্সপোর্ট প্রসিডে ডলারের দাম ১ টাকা বাড়ালেও সেটি রপ্তানিকারকদের জন্য খুব বেশি উপকারে আসবে না বলে দাবি করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রপ্তানিকারকদের এক নেতা।
তিনি বলেন, "এক্সপোর্টের জন্য ১০২ টাকা পেলেও আমদানির ক্ষেত্রে আমাদের ১০৭-১০৮ টাকা করে ডলার কিনতে হয়। অর্থাৎ, প্রাইসে ৫/৬ টাকার পার্থক্য থেকে যায়। এটি সর্বোচ্চ ৩ টাকা হলে আমাদের জন্য ভালো হয়।"
গত ১১ সেপ্টেম্বর বাফেদা ও এবিবির এক সভায় এক্সপোর্ট প্রসিডে ডলারের দাম ৯৯ টাকা ও রেমিট্যান্সে ১০৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়। অবশ্য পরে দুই দফায় রেমিট্যান্সের ডলারের দাম কমিয়ে ১০৭ টাকা করা হয়।
সভার দিনই কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের নির্ধারিত ৯৫ টাকা রেটে ব্যাংকগুলোর নিজেদের মধ্যে ডলার কেনাবেচার বাধ্যবাধকতাটি তুলে দিলে সচল হয় ইন্টারব্যাংক লেনদেন। পরদিন ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ইন্টারব্যাংক এক্সচেঞ্জে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিজেদের ডলার বিক্রির দামের বদলে ইন্টারব্যাংক লেনদেনে ডলারের দামের হাইয়েস্ট ও লোয়েস্ট রেট ওয়েবসাইটে পাবলিশ করতে থাকে।
অক্টোবরে এক্সপোর্ট প্রসিডে ডলারের দাম ০.৫০ টাকা বাড়িয়েছিল এবিবি ও বাফেদা। পরে ৬ নভেম্বর এক্সপোর্ট প্রসিডে ডলারের দাম ১০০ টাকা করা হয়। নভেম্বরের শেষে রপ্তানিকারকদের ডলারের রেট আরো ১ টাকা বাড়ায় ব্যাংকগুলো।
রোববার বাফেদার করা ৫৭টি ব্যাংকের ডলার কেনার ওয়েটেড অ্যাভারেজ রেট বিশ্লেষণ করে জানা যায় ব্যাংকগুলো সর্বনিম্ন ১০১ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১০৬.৫০ টাকা করে ডলার কিনেছে।
কেনার এই রেট থেকে সর্বোচ্চ ১ টাকা প্রফিট যোগ করে এলসি সেটেলমেন্টে ডলার বিক্রি করে ব্যাংকগুলো।