আমদানিকারকরা ডলার সংকটে এলসি খুলতে না পারায় বন্দরগুলোয় আটকে আছে ৬৫০টি কার 

অর্থনীতি

19 December, 2022, 07:05 pm
Last modified: 19 December, 2022, 07:13 pm
বারভিডার সভাপতি মো. হাবিব উল্লাহ ডন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, ‘গত ৪০ বছর ধরে আমরা রিকন্ডিশন গাড়ি আমদানি করি। কখনোই এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। আমরা সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কাছে প্রায় দেড় মাস আগে গাড়ি আমদানির প্রোফরমা ইনভয়েস (পি.আই) জমা দেই। আমরা শতভাগ মার্জিন দিতে প্রস্তুত থাকলেও তারা ডলার দিতে পারেনি। এরমধ্যে বেশ কিছু গাড়ি ঋণপত্র পাঠানোর আগেই জাহাজীকরণ হয়ে স্থানীয় বন্দরে এসেছে’। 

চালান আসার পর ঋণপত্র খুলতে না পারায় চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর থেকে ৬৫০টি কার ছাড়করণে বিপাকে পড়েছেন রিকন্ডিশন গাড়ির আমদানিকারকেরা। ডলার সংকটের কারণে এর আগে রিকন্ডিশন গাড়ির ক্ষেত্রে এলসি ছাড়া আমদানির সুযোগ দেওয়া হয়। 

বাংলাদেশের রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানিকারক ও ডিলার সমিতি– বারভিডা জানিয়েছে,  জাপান থেকে আনা এসব কারের অধিকাংশই বেশ কয়েকটি এলসির আওতায় বাংলাদেশে আনার কথা ছিল।  জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সে অনুসারে কিছু চালান এলেও, পরে ডলার সংকটের কারণে বাকি গাড়িগুলোর এলসি খুলতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। ফলে  রপ্তানিকারক  প্রতিষ্ঠানগুলোর চুক্তির বাধ্যবাধকতার কারণে এলসি ছাড়াই ৬৫০টি রিকন্ডিশন গাড়ি নিয়ে আসতে বাধ্য হন তারা। নাহলে রপ্তানিকারক দেশে গাড়িগুলো ক্র্যাপ বা ভাঙ্গারি হিসেবে বিক্রি করে দিতে হতো। 

দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সাথে আলাপকালে এখাতের ব্যবসায়ীরা বলেছেন, রিকন্ডিশন কারের ক্ষেত্রে চালান আসার পরও এলসি খোলা যায়, কিন্তু ডলার সংকটের কারণে তারা এলসি খুলতে পারেননি। আর সেজন্যই নজিরবিহীন এই সমস্যার মধ্যে পড়েছেন। 

বারভিডার সভাপতি মো. হাবিব উল্লাহ ডন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'গত ৪০ বছর ধরে আমরা রিকন্ডিশন গাড়ি আমদানি করি। কখনোই এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। আমরা সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কাছে প্রায় দেড় মাস আগে গাড়ি আমদানির প্রোফরমা ইনভয়েস (পি.আই) জমা দেই। আমরা শতভাগ মার্জিন দিতে প্রস্তুত থাকলেও তারা ডলার দিতে পারেনি। এরমধ্যে বেশ কিছু গাড়ি ঋণপত্র পাঠানোর আগেই জাহাজীকরণ হয়ে স্থানীয় বন্দরে এসেছে'। 

বিষয়টি গত ১২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে জানিয়ে তার সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। 

এদিকে চলতি মাসের শুরুর দিকে সমুদ্র বন্দর দুটির কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে ন্যূনতম জরিমানা করে গাড়ি খালাসের অনুরোধ করে বারভিডা। 

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, 'গত দু'মাস যাবত সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোতে প্রোফরমা ইনভয়েস (পি.আই) এবং শতভাগ মার্জিন দিয়েও এল.সি খুলতে বিলম্ব হচ্ছে। এরমধ্যে বেশ কিছু গাড়ি ঋণপত্র প্রেরনের পূর্বেই জাহাজীকরণ হয়ে স্থানীয় বন্দরে অবতরণ করেছে। এক্ষেত্রে নিয়মের ব্যতয় ঘটেছে বলে আমরাও মনে করি। যদিও আমদানি নীতি লংঘনের বিষয়টি অনিচ্ছাকৃত' ।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, গাড়িগুলো বন্দরে পড়ে থাকায় প্রতিদিন বন্দরে রাখার চার্জ (স্টোর রেন্ট) যোগ হচ্ছে। আবার এক মাসের মধ্যে ডেলিভারি না নিলে নিলামে ওঠার আশঙ্কা রয়েছে। পুনঃরপ্তানির সুযোগ থাকলেও, তাতে ব্যাপক লোকসান হবে।    

ব্যাংকাররা বলেছেন, দেশের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ পড়তির দিকে থাকার অবস্থায় তারা গাড়ি আমদানির জন্য ডলার সরবরাহ করতে পারছেন না।  

ব্যাংক এশিয়ার নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন,  'আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো লোকসানের ঝুঁকিতে থাকলেও– দেশের সংকটকালীন সময়ে আমাদের বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনার বাইরে (এলসি খোলার বিষয়ে) যাওয়ার সুযোগ নেই'।
 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.