প্রকল্পে বৈদেশিক সহায়তার অর্থ ব্যবহার যেভাবে বাড়ছে 

অর্থনীতি

সাইফুদ্দিন সাইফ  
08 November, 2022, 12:25 am
Last modified: 08 November, 2022, 03:50 pm
চলতি অর্থবছেরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বৈদেশিক সহায়তা বরাদ্দ রয়েছে ৯৩ হাজার কোটি টাকা। যদিও সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে, মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলি পুরো অর্থবছরের জন্য নির্ধারিত বরাদ্দের মধ্যে ৭ হাজার ৯৪১ কোটি টাকার সামান্য বেশি ব্যবহার করতে পেরেছে।

গত অর্থবছরের চেয়ে চলতি অর্থবছরে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলির বৈদেশিক সহায়তার অর্থ ব্যয় বেড়েছে। দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে আরও বেশি বৈদেশিক সহায়তার অর্থছাড় নিশ্চিত করতে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নির্দেশনা ও বিশেষজ্ঞদের আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে এ ঘটনা প্রত্যক্ষ করা যাচ্ছে। এতে করে, উন্নয়ন কাজ কিছুটা গতি লাভ করেছে বলেও মনে করা হচ্ছে।

ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে অস্থিতিশীল বৈশ্বিক জ্বালানি বাজার। এতে দেশে গ্যাস ও বিদ্যুতের সংকট গভীরতর হচ্ছে। এ বাস্তবতায়, বৈদেশিক সহায়তা ব্যবহারের পরিমাণ বেশি হচ্ছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রকল্পগুলোয়। 

এদিক থেকে শীর্ষ পারফর্মার বিদ্যুৎ বিভাগ। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই- সেপ্টেম্বর সময়ে তারা প্রকল্প সহায়তার ২ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকার এক-পঞ্চমাংশের বেশি ব্যবহার করেছে।  

এরপর রয়েছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ এবং বাংলাদেশ রেলওয়ে। তারা যথাক্রমে বৈদেশিক তহবিল ছাড়ের ১৪% ও ১১% ব্যবহার করেছে। তাদের প্রকল্পে মোট বৈদেশিক অর্থ বরাদ্দ ছিল যথাক্রমে ১৪২ এবং ১ হাজার ১৮১ কোটি টাকা। এসব তথ্য জানা গেছে, সরকারের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)-র প্রতিবেদন সূত্রে। 

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলির কর্মকর্তারাও প্রকল্প বাস্তবায়নে কিছুটা উন্নতি দেখছেন। এজন্য উন্নয়ন প্রকল্পকে অগ্রাধিকার দেওয়ার মাধ্যমে বিদেশি তহবিল যথাযথভাবে ব্যবহার নিশ্চিত করতে– সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে আসা নির্দেশনা প্রধান অবদান রেখেছে বলে মনে করছেন তারা। 

তারা বলেছেন, দেশে এই মুহূর্তে বৈদেশিক মুদ্রার তীব্র প্রয়োজনীয়তা দেখা যাচ্ছে। এই সময়ে, উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিশ্রুত বৈদেশিক তহবিল দ্রুত ছাড়করণের উদ্দেশ্যে প্রকল্পের কাজ ত্বরান্বিত করতে হবে। এজন্য প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলিকে আরও দক্ষ হতে হবে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, যেসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ প্রকল্প বাস্তবায়নে পিছিয়ে রয়েছে তাদের সাথে বৈঠক করবে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়।  

দেশের অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা দীর্ঘদিন ধরেই, সময় ও ব্যয় সংকোচনের জন্য বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলির দক্ষতা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে আসছেন।  কারণ, ব্যয় ও সময়ক্ষেপণ বাড়লে তাতে দেশের মুদ্রা রিজার্ভের ওপর চাপ পড়ে– বর্তমানে দ্রুত নিঃশেষিতও হয়ে আসছে মুদ্রা রিজার্ভ। সাথে ভবিষ্যতে বৈদেশিক ঋণের কিস্তি পরিশোধের চাপ বাড়ছে। 

সরকারের হয়ে দ্বিপাক্ষিক এবং বহুপাক্ষিক উন্নয়ন অংশীদারদের সাথে কাজ করে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি)। সংস্থাটির কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রতিশ্রুত অর্থছাড় এবং নতুন বিদেশি ঋণ আলোচনার জন্য সময়মত প্রকল্প বাস্তবায়ন– একটি প্রধান পূর্বশর্ত।

তারা জানান, রিজার্ভ ঘাটতি পূরণে বৈদেশিক উৎসের সহায়তা অপরিহার্য, কারণ মোট ব্যয় হওয়া বৈদেশিক সহায়তার প্রায় ৩০ শতাংশ অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভে যোগ হয়– স্থানীয় পণ্য ও পরিষেবা ক্রয়ের মাধ্যমে। 
 
গতি বাড়ছে, তবে ধীর লয়ে

সাধারণত, অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে প্রকল্পের কাজে ধীরগতি থাকে; তবে বাস্তবায়নকারী সংস্থা এ গতি ধরে রাখলে, অর্থবছরের শেষদিকে বাস্তবায়নকাজ পর্যায়ক্রমে গতিলাভ করে। কর্মকর্তারা জানান, তহবিল ছাড় আগের চেয়ে সহজ হওয়ায় এখন এ প্রবণতা বদলাচ্ছে।

২০১৯-২০ অর্থবছরে যখন করোনাভাইরাস বৈশ্বিক মহামারি হয়ে ওঠেনি– তখন জুলাই-সেপ্টেম্বর মেয়াদে বৈদেশিক সহায়তার ব্যবহার ছিল মাত্র ৬ শতাংশ।  কিন্তু, মহামারির বিস্তার লাভ করার পর– পরের অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে এই হার সর্বোচ্চে পৌঁছায়। ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে বৈদেশিক সহায়তার ব্যবহার বেড়ে দাঁড়ায় ৮ শতাংশে। পরের অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে এই হার কমলেও, ৭ শতাংশের বেশিই ছিল। এবং চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে তা উল্লম্ফন করে ৮.৬৩ শতাংশে উন্নীত হয় বলে জানিয়েছে আইএমইডি'র প্রতিবেদন।

এই হারটি লক্ষ করলে দেখা যায়, মহামারিকালেও অব্যাহত ছিল বিদেশি অর্থায়নের উন্নয়ন প্রকল্প। তবে সব মন্ত্রণালয়ের ক্ষেত্রে প্রবণতাটি এক রকম ছিল না। কিছু মন্ত্রণালয় ভালো পারফর্ম করেছে– তাদের কেউ কেউ মোট বরাদ্দের ২০ শতাংশ পর্যন্ত ব্যবহার করেছে। কিন্তু, অন্যরা পিছিয়ে পড়ে। এমনকী প্রথম প্রান্তিকে পাওয়া বরাদ্দের ১ শতাংশও ব্যবহার করতে পারেনি তারা। এসময় যেসব সংস্থার প্রকল্প এক হাজার কোটি টাকা বা তার চেয়ে বেশি ছিল– তাদের প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।

পরিকল্পনা বিভাগের সচিব মো. মামুন আল রশিদ টিবিএস'কে বলেন, বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে বৈদেশিক অর্থায়নের প্রকল্প বাস্তবায়নকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার।  বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পের বাস্তবায়ন গতি বাড়াতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলিকে বার বার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর ফলে বেশ কিছু মন্ত্রণালয় ও বিভাগের বৈদেশিক সহায়তার অর্থ ব্যবহার বেড়েছে।

তিনি আরো বলেন, যেসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এখনও বৈদেশিক অর্থছাড় বাড়াতে পারেনি, তাদের নিয়ে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত হয়েছে। 

কিছু মন্ত্রণালয় ও বিভাগ অন্যদের চেয়ে কেন এগিয়ে

ভালো পারফর্ম করা প্রকল্পগুলির কর্মকর্তারা বলছেন, এখানে দক্ষতা এবং গুরুত্ব দেওয়াটাই মূল বিষয়। 

বৈদেশিক ঋণ ব্যবহারের দক্ষতার বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা) মো. নুরুল আলম বলেন, কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী প্রকল্প বাস্তবায়ন করা গেলে, বৈদেশিক ঋণের অর্থছাড়ে কোনো সমস্যা হয় না। বর্তমানে বিদ্যুৎ বিভাগের বেশিরভাগ প্রকল্পই মসৃণভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে। 'প্রকল্প মনিটরিং ব্যবস্থায় যেসব টুলস রয়েছে, সেগুলো-ও ঠিকমতো কাজ করছে'। 

যেমন নিয়মিত প্রকল্প বাস্তবায়নকারী এবং প্রকল্পের স্টিয়ারিং কমিটির সভা হচ্ছে। এসব সভায় চলমান প্রকল্পের কোনো সমস্যা থাকলে তা চিহ্নিত করে তাৎক্ষণিকভাবে তার সমাধান করা হচ্ছে। এসব প্রকল্প মনিটরিং টুলস ঠিক থাকলে বাস্তবায়ন কাজ এবং বৈদেশিক অর্থছাড় বাধাগ্রস্ত হবে না বলে মনে করেন তিনি।

বৈদেশিক সহায়তার অর্থ ব্যবহারে মাত্র ০.০২ শতাংশ নিয়ে তলানিতে রয়েছে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়।

চলতি অর্থবছরে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় বৈদেশিক সহায়তার অংশ থেকে ২ হাজার ৮৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। কিন্তু, ২০২২-২৩-এর প্রথম তিন মাসে, মন্ত্রণালয়টি মাত্র ৬০ লাখ টাকা ব্যবহার করতে পেরেছে, যা ছিল বরাদ্দের মাত্র ০.০২ শতাংশ।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন এমন একটি প্রকল্প হলো– মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প। এতে ৮০০ কোটি টাকা বৈদেশিক সহায়তা থাকলেও, ব্যবহারের অগ্রগতি একেবারেই শূন্য। এর কারণ হিসেবে প্রকল্পটি এখনও বৈদেশিক সাহায্য ব্যয় করার পর্যায়ে পৌঁছায়নি বলে জানান প্রকল্প পরিচালক মীর জাহিদ।

তবে অর্থবছরের বাকি সময়ে তারা ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি।

২০১৯-২০ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর মেয়াদে মোট বরাদ্দের ৫.৮৯ শতাংশ ব্যবহার করা হয়, সে তুলনায় চলতি অর্থবছরের একই সময়ে তা হয়েছে ৮.৬৩ শতাংশ। যদিও এ তিন মাসে, মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলি পুরো অর্থবছরের জন্য নির্ধারিত ৯৩ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ৭ হাজার ৯৪১ কোটি টাকার সামান্য বেশি ব্যবহার করতে পেরেছে।

ইআরডির কর্মকর্তারা বলেন, চলতি অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৫% বেশি বৈদেশিক সহায়তার অর্থছাড় হয়েছে। এরপরও, সক্ষমতার অভাবে অনেক মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এসব তহবিল ব্যবহারে পিছিয়ে আছে।

যেমন বৈদেশিক সহায়তার মাত্র ৩.৫৭ শতাংশ ব্যবহার করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।

তহবিল ব্যবহারে বিলম্বের কারণ জানতে চাইলে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. খুরশিদ ইকবাল রেজভি বলেন, 'আমরা কিছু যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করেছি, কিন্তু এখনো বিল পরিশোধ করিনি। এ কারণে প্রথম প্রান্তিকে বৈদেশিক সহায়তার অংশ থেকে ব্যয় কম দেখানো হয়েছে। আমরা দ্বিতীয় প্রান্তিকে এটি সমন্বয় করব'।

সেতু বিভাগ বরাদ্দকৃত বৈদেশিক সাহায্যের মাত্র ২.৫% ব্যবহার করেছে। এর কর্মকর্তারা বলছেন, ঢাকা-আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ের কাজ এখনও শুরু না হওয়ায়, তাদের বিদেশি তহবিল ব্যয় করার প্রয়োজন হয়নি। অন্যদিকে, কর্ণফুলী টানেল প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানোর প্রক্রিয়া এখনও শেষ হয়নি, ফলে বৈদেশিক তহবিল থেকে ব্যয়ের ক্ষেত্রে ধীরগতি রয়েছে।

তবে চলতি অর্থবছরের বাকি সময়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে তাদের বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক সহায়তা ব্যয়ের প্রয়োজন হবে বলে আশাপ্রকাশ করেন তারা। 

ইআরডি'র কর্মকর্তারা জানান, প্রতি অর্থবছরই বৈদেশিক সহায়তা ব্যবহার বাড়াতে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয়। উন্নয়ন সহযোগী ও বাস্তবায়ন সংস্থার কর্মকর্তাদের নিয়ে অর্থবছরের বিভিন্ন সময় বৈঠক করে চলমান প্রকল্পের সমস্যা চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হয়। তারপরও বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পে অর্থছাড়ে খুব বেশি অগ্রগতি হচ্ছে না।

গত ১২-১৩ সেপ্টেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়– বিশ্বব্যাংক, প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলি ও ইআরডির এক ত্রিপক্ষীয় বৈঠক। এতে ধীরে বাস্তবায়ন কাজ শুরু, প্রকল্প প্রস্ততির অভাব, সরকারি সংস্থাগুলির মধ্যে সমন্বয়ের অভাবসহ নানান সমস্যা চিহ্নিত করা হয়। এসব কারণে দাতাসংস্থাটির অর্থছাড়েও বিলম্ব হচ্ছে।

বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বৈঠকে আলোচিত অন্যান্য সমস্যাগুলি হলো- প্রকল্পের জটিল কারিগরি নকশা, বাস্তবায়নের জন্য জটিল সাংগঠনিক ব্যবস্থা, প্রকল্পে কর্মকর্তা নিয়োগের ঘাটতি, প্রকল্প বিবরণীতে নানান ভুলত্রুটি থাকা এবং অপর্যাপ্ত এডিপি (বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি) বরাদ্দ।  

এদিকে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) এক নথিতে বলা হয়েছে, এদেশে উন্নয়ন সহযোগীটির দুই-তৃতীয়াংশ বিনিয়োগ হয়েছে অবকাঠামো প্রকল্পে। এসব প্রকল্পে বিপুল ক্রয় প্রক্রিয়া জড়িত থাকে। একারণে ক্রয় প্রক্রিয়ায় বিলম্ব প্রকল্প বাস্তবায়নে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

উল্লেখ্য, বর্তমানে মোট বৈদেশিক সহায়তার ৫৬ শতাংশই দিচ্ছে  বিশ্বব্যাংক ও এডিবি।

প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলির দাবি, উন্নয়ন সহযোগীদের আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণেও অনেক সময় অর্থছাড়ে দেরি হয়। যেমন, প্রকল্পের নানান পর্যায়ে তাদের থেকে অনুমতি পেতে অনেক কালক্ষেপণ হয়।

প্রকল্পে কেন আরও গতি আনা দরকার

বিশ্বব্যাপী বৈদেশিক মুদ্রার সংকটের এ সময়ে বৈদেশিক (প্রকল্প) সহায়তার বরাদ্দ ব্যয় করা গেলে–তা রিজার্ভের জন্য কিছুটা সহায় হতো বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) কর্মকর্তারা জানান, মোট ব্যয় হওয়া বৈদেশিক সহায়তার প্রায় ৩০ শতাংশ অর্থ সরাসরি রিজার্ভে যোগ হয়।রিজার্ভে যোগ হওয়া এই অংশকে বলা হয়– রিইম্বারসেবল প্রজেক্ট এইড (আরপিএ) 

চলতি অর্থবছেরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বৈদেশিক সহায়তা বরাদ্দ রয়েছে ৯৩ হাজার কোটি টাকা। এ হিসাবে প্রায় ২৭ হাজার ৯০০ কোটি টাকা সমমূল্যের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভে যোগ হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।

কিন্তু, বাস্তবায়ন সক্ষমতার অভাব এবং উন্নয়ন সহযোগীদের আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে, প্রত্যাশীত হারে– বৈদেশিক সহায়তার অর্থ ব্যয় করা সম্ভব হয় না।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ-উপদেষ্টা এ বি মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, সময়মতো প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে না পারার কারণে বৈদেশিক সহায়তার অর্থ ব্যয় করা সম্ভব হয় না। 'বর্তমান পরিস্থিতিতে বৈদেশিক সহায়তার বরাদ্দ ব্যয় বাড়ানো গেলে, তা আমাদের রিজার্ভের জন্য কিছুটা সহায়ক হবে'।
 
 
 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.