এলসি সেটেলমেন্ট হচ্ছে রেকর্ড ১০৯ টাকায় 

অর্থনীতি

টিবিএস রিপোর্ট
04 August, 2022, 10:05 am
Last modified: 04 August, 2022, 11:26 am
ইন্ডাস্ট্রি সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আমদানি এলসি সেটেলমেন্টের ক্ষেত্রে এই দামটি স্মরণকালের মধ্যে রেকর্ড।

চলমান ডলার সংকটের কারণে আমদানি এলসি সেটেলমেন্টে ডলারের দাম ঊর্ধ্বমুখী ধারায় রয়েছে। বুধবার ব্যাংকগুলো সর্বনিম্ন ১০৫ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০৯ টাকায় প্রাইভেট এলসি সেটেলমেন্ট করেছে।

ইন্ডাস্ট্রি সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আমদানি এলসি সেটেলমেন্টের ক্ষেত্রে এই দামটি স্মরণকালের মধ্যে রেকর্ড।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃতীয় প্রজন্মের একটি বেসরকারি ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধান টিবিএসকে বলেন, 'মূলত এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো থেকে ডলার সংগ্রহ করতে খরচ বেশি হওয়ায় আমদানি এলসি সেটেলমেন্টের ক্ষেত্রেও আমাদের দাম বেশি নিতে হচ্ছে। এছাড়া তাদের কাছ থেকে চাহিদামতো ডলারও পাওয়া যাচ্ছে না।' 

ডলার সংগ্রহের জন্য সব ব্যাংকই এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোর কাছে যাওয়ায় দাম বাড়ছে উল্লেখ করে এ ব্যাংকার বলেন, 'এতোদিন কোনো ব্যাংকের ডলার প্রয়োজন হলে অন্য ব্যাংকের কাছ থেকে ডলার সংগ্রহ করা হতো। সে পথটি এখন একরকম বন্ধ। তাই ব্যাংকগুলোর নিজস্ব উৎসের বাইরে ডলার সংগ্রহ করার একমাত্র মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো থেকে রেমিট্যান্সের ডলার কেনা। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।'  

রপ্তানি পেমেন্ট এনক্যাশ করাতে রপ্তানিকারকরা দাম বেশি চাচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।

একটি সরকারি ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের কর্মকর্তা জানান, 'ডলার সংকটের কারণে কিছু কিছু পেমেন্টে দেরি হলেও আমরা সব পেমেন্টই করতে পারছি। এখন পর্যন্ত ডিফল্টার হওয়া বা পেমেন্ট করতে না পারার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। খাদ্যপণ্য বা সরকারি কেনাকাটার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত রেটই নিচ্ছি আমরা।'

এদিকে বুধবার রিজার্ভ থেকে ৯৪.৭০ টাকা ইন্টারব্যাংক এক্সচেঞ্জ রেটে ৪০ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। খাদ্যপণ্য, জ্বালানীসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দায় মেটাতে এই ডলারগুলো বিক্রি করা হয়। চলতি অর্থবছরের ১ জুলাই থেকে এ পর্যন্ত ১.২ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিক্রি করা হয়েছে রিজার্ভ থেকে। গত মঙ্গলবার দিনশেষে রিজার্ভ ছিল ৩৯.৫৪ বিলিয়ন ডলার।

এছাড়া খোলাবাজারে ডলারের দাম বেড়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে শুরু করা মনিটরিং অব্যাহত রেখেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বুধবারও বাংলাদেশ ব্যাংকের বেশ কয়েকটি প্রতিনিধি দল মানি চেঞ্জার প্রতিষ্ঠানগুলো ইন্সপেকশন করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম টিবিএসকে বলেন, এখন পর্যন্ত ১০৪টি মানি চেঞ্জার প্রতিষ্ঠান ইন্সপেকশন করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৫টির কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে এবং ৪২টিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে ৯টি মানি চেঞ্জারকে শাট ডাউন করার জন্যও বলা হয়েছে।

খোলাবাজারে ডলারের দাম বেড়ে আবার ১০৮ টাকা

খোলাবাজারে ডলারের দাম ১০৭-১০৮ টাকার মধ্যে উঠানামা করছে গত কয়েকদিন ধরে। বুধবার মানি চেঞ্জারগুলো ডলার ১০৭ টাকায় কিনে ১০৮ টাকায় বিক্রি করেছে। আগের দিন মঙ্গলবার ১০৬ টাকায় কিনে ১০৭ টাকায় বিক্রি করেছিল তারা।

উল্লেখ্য, গত ২৬ জুলাই রেকর্ড ১১২ টাকায় পৌঁছেছিল কার্ব মার্কেটের ডলারের দাম।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি মানি চেঞ্জারের কর্মকর্তা টিবিএসকে বলেন, 'প্রতিদিনই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি দল আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শন করছে। এসব কারণে ব্যবসায়ীদের অনেকেই কেনাবেচা বন্ধ রাখছেন। বেশিরভাগ ক্রেতাই ডলার কিনতে আসছেন। তবে আমরা কেনার মতো ডলার পাচ্ছি কম।'  
 
 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.