২ লাখ টাকা বা তার নীচে সঞ্চয়পত্র কিনতে ই-টিন লাগবে না 

অর্থনীতি

03 June, 2021, 08:20 pm
Last modified: 03 June, 2021, 08:24 pm
বর্তমানে এক লাখ টাকার ওপর সঞ্চয়পত্র কিনতে ই-টিন দরকার হয় 

ক্ষুদ্র সঞ্চয়কারীদের বিনিয়োগে উৎসাহী করতে ২ লাখ বা তার কম পরিমাণ টাকার সঞ্চয়পত্র কিনতে ট্যাক্স আইডেনটিফিকেশন নাম্বার বা ই-টিন লাগবে না। বর্তমানে এই সীমা ১ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনলে ই-টিন দিতে হয়।

নতুন অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী আ হ মুস্তাফা কামাল জানান, "২ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনলে ই-টিন লাগবে। এছাড়া ডাকঘর সঞ্চয়ের (পোস্টাল সেভিংস একাউন্ট) ক্ষেত্রেও ২ লাখ টাকার বেশি হলে ই-টিন লাগবে।" ক্ষুদ্র সঞ্চয়কারীদের উৎসাহ দিতেই এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। 

বাজেটে নেয়া এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ। দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডাকে তিনি বলেন, ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের বেশির ভাগই আয়করের আওতায় পড়েন না। তাই তাদের পক্ষে ই-টিন করা কষ্টকর। 

তিনি মনে করেন, এই উদ্যোগ নেওয়ার ফলে তারা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগে উৎসাহী হবেন এবং ভালো রিটার্নও পাবেন। বলেন, বর্তমানে ব্যাংক আমানতের সুদহার এত কম যে ওই দিকে সঞ্চয়কারীরা ছুটতে চাইছেন না।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ, সিপিডি এর সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, এটি ভালো উদ্যোগ। এতে ক্ষুদ্র সঞ্চয়কারীরা উৎসাহী হবে।  

তবে সঞ্চয়পত্রের সুদ জনিত ব্যয় কমিয়ে আনতে তথা বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করার চেষ্টার অংশ হিসেবে ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের মত প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের ক্ষেত্রেও বিনিয়োগসীমা বেঁধে দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। এছাড়া, ভিন্ন নামে কিংবা সীমার অতিরিক্ত সঞ্চয়পত্র বিক্রি হচ্ছে কিনা- সেটিও নজরে রাখতে বলেছেন।  

সঞ্চয়পত্র কেনা নিরুৎসাহিত করতে গেল বছরের ডিসেম্বরে বিনিয়োগের সীমা বেঁধে দেয়া হয়। পেনশনার সঞ্চয়পত্র বাদে অন্য তিন ধরনের সঞ্চয়পত্রে একক নামে ৫০ লাখ এবং যৌথ নামে ১ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করা যাচ্ছে না। আগে এই সীমা ছিল একক নামে সর্বোচ্চ ১ কোটি ৫৫ লাখ এবং যৌথ নামে ২ কোটি ১৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ করা যায়। 

৫ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র কেনার ক্ষেত্রে ব্যক্তি পর্যায়ে বিনিয়োগ সীমা থাকলেও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে বিনিয়োগের কোন সীমা নেই।

বর্তমানে পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, পরিবার সঞ্চয়পত্র, তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ও পেনশনার সঞ্চয়পত্র—এ চার ধরনের সঞ্চয়পত্র চালু রয়েছে। এছাড়াও আছে ডাকঘর সঞ্চয়পত্র। এসব সঞ্চয়পত্রে মুনাফার হার ধরন ভেদে ৯ শতাংশ থেকে ১১.৫ শতাংশের বেশি। 

ব্যাংকে স্থায়ী আমানত (এফডিআর) রাখলে তার বিপরীতে জরুরি প্রয়োজনে ২ দিনের নোটিশে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ নেওয়া যায়। কিন্তু সঞ্চয়পত্র জামানত রেখে কোনো ব্যাংক ঋণ নেওয়া যায় না।

সঞ্চয়পত্র হারালে, চুরি হলে, পুড়ে গেলে বা অন্য কোনোভাবে নষ্ট হলে প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্নের পর ডুপ্লিকেট কপি পাওয়া যায়। সব ধরনের সঞ্চয়পত্রে এক বছর পার হওয়ার আগেই কেউ ভাঙাতে চাইলে কোনো মুনাফাই দেওয়া হয় না। শুধু মূল টাকা নিতে হয়।

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.