লকডাউনে কর্মহীন পরিবহন শ্রমিকদের নগদ সহায়তা দেবে সরকার 

অর্থনীতি

12 May, 2021, 09:30 am
Last modified: 12 May, 2021, 09:31 am
নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদেরও নগদ সহায়তা দেওয়ার একটি প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য পাঠিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

কোভিড-১৯ প্রতিরোধে চলমান লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়া সড়ক ও নৌপরিবহন খাতের শ্রমিকদের ২৫০০ টাকা করে নগদ সহায়তা দেবে সরকার। এজন্য জেলা প্রশাসকদের কাছে পরিবহন শ্রমিকদের তালিকা চেয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। পরিবহনখাতের যেসব শ্রমিক ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে নগদ সহায়তা পেয়েছেন, তাদের বাদ দিয়ে বাকিদের এ সহায়তা দেওয়া হবে।  

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'চলমান লকডাউনের শুরু থেকে দূরপাল্লার গণপরিবহনসহ লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে এসব যানবাহনে কর্মরত ড্রাইভার, হেল্পার ও সুপারভাইজারদের আয়ের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া, একই জেলার ভেতরে চলাচলের সুযোগ দেওয়া হলেও এ ধরণের যানবাহনে যাত্রী সংখ্যা খুবই কম। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সড়ক ও নৌখাতের পরিবহন শ্রমিকদের নগদ সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে'।  

'গতবছর এবং এ বছর ৩৫ লাখ কর্মহীন দরিদ্রদের ২৫০০ টাকা করে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে নগদ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। ওই ৩৫ লাখের মধ্যে পরিবহন শ্রমিকরাও রয়েছেন। তাদেরকে বাদ দিয়ে বাকি পরিবহন শ্রমিকদের তালিকা জেলা প্রশাসকদের কাছে চাওয়া হয়েছে। তালিকা পাওয়ার পর মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস এর মাধ্যমে এ সহায়তা দেওয়া হবে। এতে আরও কয়েক সপ্তাহ লাগতে পারে', যোগ করেন ওই কর্মকর্তা। 

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের তথ্য অনুযায়ী, দেশে পরিবহন শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৫০ লাখ। লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় শ্রমিক সংগঠনগুলো সরকারের কাছ থেকে নগদ সহায়তা দাবি করে আসছে। তবে সরকারের হিসাবে পরিবহন খাতে নিয়োজিত শ্রমিকের সংখ্যা এর প্রায় অর্ধেক।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর একটি জরিপ অনুযায়ী, দেশের সড়ক পরিবহন খাতে মোট শ্রমিকের সংখ্যা ৩১.৭৮ লাখ। এর মধ্যে যাত্রীবাহী পরিবহনে কর্মী সংখ্যা ২৮.৫৭ লাখ। আর যাত্রীবাহী পরিবহনের মধ্যে বিভিন্ন ধরণের যাত্রীবাহী বাসে কর্মী সংখ্যা ২.২৬ লাখ। বাকিরা টেম্পু, অটোরিক্সা, রাইডশেয়ারিং, রিকশা, ভ্যান, নসিমন-করিমন, রেন্ট-এ-কার, ট্যাক্সিক্যাবের সঙ্গে সংযুক্ত।  

বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, দেশে নৌখাতে যান্ত্রিক-অযান্ত্রিক মিলিয়ে যাত্রীবাহী পরিবহনের সংখ্যা ১.৭৪ লাখ, তাতে কর্মরত শ্রমিক রয়েছেন ৩.০৩ লাখ।  

অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদেরও নগদ সহায়তা দেওয়ার একটি প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য পাঠিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। তাতে শিক্ষকদের ৫০০০ টাকা করে এবং কর্মচারীদের ২৫০০ টাকা করে নগদ সহায়তার প্রস্তাব করা হয়েছে। নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরকার থেকে বেতন না পাওয়ায় তাদের এ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।  

অর্থবিভাগের হিসাব অনুযায়ী, ব্যানবেইজের তালিকাভুক্ত নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা ১.৭০ লাখ, যাদের সহায়তা দিতে সরকারের ব্যয় হবে ৭৫ কোটি টাকা, যা কোভিড মোকাবিলায় থোক বরাদ্দ থাকা ১০ হাজার কোটি টাকার তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে।  

গত বছর লকডাউনের সময়ও এসব শিক্ষক-কর্মচারীরা একই হারে সহায়তা পেয়েছিলেন। ওই সময় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে এই অর্থ সংস্থান করা হয়েছিল।  
 
 
 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.