রেমিট্যান্স পাঠাতে ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোয় প্রবাসীদের আগ্রহ বাড়ছে

অর্থনীতি

06 April, 2021, 12:00 pm
Last modified: 06 April, 2021, 12:03 pm
২০২০ সাল শেষে মোট রেমিট্যান্সের  প্রবাহের ৪০ শতাংশের বেশি মাধ্যম ছিল ইসলামী ব্যাংক। ২০১৯ সালে এই হার ছিল ৩৫ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরে শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে সাধারণ ব্যাংকগুলোর তুলনায় ৫ শতাংশ বেশি রেমিট্যান্স এসেছে।  

সাধারণ ব্যাংকের (কনভেনশনাল) চেয়ে ইসলামী ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোয় প্রবাসীদের আগ্রহ বাড়ছে। গেল বছর শেষে ২০১৯ সালের তুলনায় ইসলামী ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৪৬ শতাংশ বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। ২০১৯ সালে এই প্রবৃদ্ধি ছিল মাত্র ১২ শতাংশ। 

অন্যদিকে ২০২০ সাল শেষে মোট রেমিট্যান্সের  প্রবাহের ৪০ শতাংশের বেশি মাধ্যম ছিল ইসলামী ব্যাংক। ২০১৯ সালে এই হার ছিল ৩৫ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরে শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে সাধারণ ব্যাংকগুলোর তুলনায় ৫ শতাংশ বেশি রেমিট্যান্স এসেছে।  

গত রবিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন বিশ্লেষণে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।  

গেল বছরের ডিসেম্বর শেষে রেমিট্যান্স আহরণে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে সাধারণ ব্যাংকগুলোর ইসলামিক ব্যাংকিং শাখায়। ২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৫০০ শতাংশ বেড়ে এই মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ২৮৪ কোটি টাকা। 

অন্যদিকে সাধারণ ব্যাংকগুলোর ইসলামিক উইন্ডোগুলোর মাধ্যমে ২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে প্রায় ৩৬ কোটি টাকা রেমিট্যান্স এসেছে যা তার আগের বছরের তুলনায় ৮০ শতাংশ বেশি। 

গেল বছরের ডিসেম্বর শেষে ৯টি বেসরকারি কনভেনশনাল ব্যাংকের ইসলামিক ব্যাংকিং শাখার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯টি। এছাড়া ১৪টি সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের ১৯৮টি ইসলামিক ব্যাংকিং উইন্ডো আছে। 

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) এর সহযোগী অধ্যাপক মো. আলমগীর দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, গেল বছর তার আগের বছরের তুলনায় রেমিট্যান্স বেশি আসায় এর একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

এছাড়া গেল দুই বছর ধরে কনভেনশনাল ব্যাংকগুলোর ইসলামিক ব্যাংকিং শাখা ও উইন্ডো বাড়ছে। এসব ব্যাংক নানাভাবে গ্রাহক আকর্ষণ করার চেষ্টা করছে। আবার রেমিট্যান্স বিপরীতে ২ শতাংশের স্থলে অনেক ব্যাংক ৩ শতাংশও দিয়েছে। 

এছাড়াও করোনার ফলে অনেক প্রবাসী নিজস্ব ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেও ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন করতে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। এসব কারণেই শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স প্রেরণ এবং অংশগ্রহণ বাড়ছে বলে তার অভিমত।   

গেল বছর ইসলামী ব্যাংকগুলোতে আমানতের স্থিতি ১৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩ লাখ ২৭  হাজার কোটি টাকা। ২০১৯ সাল শেষে অবশ্য আমানতের বৃদ্ধির হার ছিল ১৮ শতাংশ। সে হিসেবে গেল বছর আমানতের প্রবৃদ্ধি ২ শতাংশ কমেছে। 

অন্যদিকে ২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে ইসলামী ব্যাংকগুলোর মোট ঋণ বিতরণের পরিমাণ ৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৯৪ হাজার কোটি টাকার বেশি। ২০১৯ সালেও ঋণ বিতরণে একই ধরনের প্রবৃদ্ধি ছিল।  

গেল বছর আমানতের ৪৭ ভাগই ছিল মেয়াদী আমানত। অন্যদিকে প্রায় ৪৪ শতাংশ ঋণ বিতরণ করা হয়েছে ব্যবসা-বাণিজ্যখাতে। এছাড়া ২৩ শতাংশের বেশি বিতরণ করা হয়েছে শিল্পখাতের ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল হিসেবে। 

এদিকে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী কৃষিঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে ভালো অবস্থানে আছে ইসলামি ব্যাংকগুলো। গেল বছর লক্ষ্যমাত্রার ১০৭ শতাংশ ঋণ বিতরণ  হয়েছে, যা ২০১৯ সালে ছিল ৭১ শতাংশ। 

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা  হয়, সাধারণ ব্যাংকগুলোর মত ইসলামী ব্যাংকও কোভিডের নেতিবাচক অভিঘাত মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের পাশাপাশি অনলাইন ব্যাংকিং সুবিধা চালু রাখা এবং কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। 

গেল বছর শেষে ইসলামী ব্যাংক ও সাধারণ ব্যাংকগুলোর ইসলামিক ব্যাংকিং শাখা ও উইন্ডোগুলোতে জনবল সংখ্যা প্রায় তিন হাজার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮,৭৮৪ জনে।

বাংলাদেশে ইসলামিক ব্যাংকিং তথা শরিয়াভিত্তিক  ব্যাংকিং সেবা জনপ্রিয় হচ্ছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যাংকিং সেবার এক চতুর্থাংশ ইসলামী ব্যাংকগুলোর হাতে। 
 
 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.