বেইজিংয়ের কাছে ‘রুলস অব অরিজিন’ শিথিল চায় ঢাকা

অর্থনীতি

16 November, 2020, 02:05 pm
Last modified: 16 November, 2020, 06:13 pm
চীনে আয়োজিত বিভিন্ন ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ফেয়ারে অংশ নিতে বাংলাদেশ যেন ফ্রি স্পেস বরাদ্দ পায়, সে বিষয়েও চীনা কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করবে ঢাকা।

স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে চীনের দেওয়া শুল্কমুক্ত সুবিধার সুযোগ যাতে বাংলাদেশ ভোগ করতে পারে, সেজন্য রুলস অব অরিজিনের শর্ত শিথিল করার প্রস্তাব দেবে বাংলাদেশ। স্থানীয়ভাবে ২৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন করা বাংলাদেশি পণ্যকে চীনের কাছে শুল্কমুক্ত সুবিধা চাইবে ঢাকা। 

বিদ্যমান বিধান অনুযায়ী, চীনে শুল্কমুক্ত সুবিধা পেতে বাংলাদেশি পণ্যকে কমপক্ষে ৪০ শতাংশ মূল্য সংযোজনের শর্ত রয়েছে।

চলতি নভেম্বর মাসে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ-চীন ফরেন অফিস কনসালটেনশন বৈঠকে এ সুবিধা চাইবেন বাংলাদেশি কর্মকর্তারা।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, বাংলাদেশের উচিত চীনের কাছে এশিয়া-প্যাসিফিক ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্টের (এপিটিএ) রুল অব অরিজিন শিথিল করার অনুরোধ জানানো।

স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে চীন বাংলাদেশের ৮ হাজার ৫৪৯টি পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিয়েছে। ওই তালিকায় চিনি অন্তর্ভুক্ত করেনি দেশটি। মেঘনা গ্রুপ চীনে চিনি রপ্তানি করে। চীন যাতে চিনি রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়, সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি লিখেছে মেঘনা। চীনের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ প্রস্তাবও দেওয়া হবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি পণ্য আমদানি করে চীন থেকে। দেশটি থেকে ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশের আমদানির পরিমাণ ১১ হাজার ৫৩৬ মিলিয়ন ডলার। একই সময়ে চীনে বাংলাদেশ রপ্তানি করেছে ৬০০ মিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ, দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ প্রায় ১১ বিলিয়ন ডলার। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১২.৮২ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশ থেকে কাঁচা পাট, জুট ইয়ার্ন, পাটজাতপণ্য, লেদার, চিংড়িসহ ফ্রোজেন ফিশ, ওভেন গার্মেন্টস, টেক্সটাইল ফেব্রিক্স, প্লাস্টিক ওয়াস্ট, ক্যামেরা পার্ট, পিভিসি ব্যাগ রপ্তানি হয় সবচেয়ে বেশি। অন্যদিকে, চীন থেকে কটন, কটন ইয়ার্ন, ফেব্রিক্স, থ্রেড, বয়লার, মেশিনারি, যন্ত্রপাতি আমদানি করে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের চামড়াজাত পণ্য, আইপি, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, অ্যাগ্রো প্রসেসিং ফুডস, শিপ বিল্ডিং ও হাই ভ্যালু অ্যাডেড টেক্সটাইলখাতে বাংলাদেশ চীনকে জয়েন্ট ভ্যাঞ্চার ইন্ডাস্ট্রি স্থাপনের প্রস্তাব দেবে।

এছাড়া, বাংলাদেশের রেডিমেড গার্মেন্টের জন্য একটি ফ্যাশন ডিজাইন ইনস্টিটিউট করতে চীনের কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা ও লেদার সেক্টরের জন্য একটি ডিজাইন ইনস্টিটিউট করার প্রস্তাবও দেওয়া হবে চীনকে। 

চীনে আয়োজিত বিভিন্ন ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ফেয়ারে অংশ নিতে বাংলাদেশ যেন ফ্রি স্পেস বরাদ্দ পায়, সে বিষয়েও চীনা কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করবে ঢাকা।

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.