ধ্বস নেমেছে দেশের হজ সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়

অর্থনীতি

কামরান সিদ্দিকী
28 July, 2020, 07:40 pm
Last modified: 29 July, 2020, 04:22 am
সৌদি সরকারের বিদেশি ধর্মীয় পর্যটক আগমন বন্ধের সিদ্ধান্ত হক ইন্টারন্যাশনাল ট্যুরসের মতো দেশের ১,২৩৮টি হজ এজেন্সিকে কঠিন আঘাত করে। ফলে হজ ব্যবসায় হওয়া বার্ষিক পাঁচ হাজার কোটি টাকার লেনদেন বঞ্চিত হয়েছে তারা। হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এ তথ্য জানিয়েছে।

১৯৯৯ সাল থেকে হজ এবং উমরা সেবা দিয়ে আসছে চট্টগ্রাম ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান- হক ইন্টারন্যাশনাল ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস। কিন্তু, চলতি বছর ব্যবসায় নজিরবিহীন ধ্বসের পাহাড় চাপা পড়ে প্রতিষ্ঠানটি।

প্রতিবছর ২০০-৪০০ পুন্যার্থী হক ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে হজ করতে যেতেন। তবে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে চলতি বছর ১৭০ জন হাজিকে সৌদি আরবে পাঠাতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। 

কোভিড-১৯ বিস্তার রোধে সৌদি আরব আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারী এবং বিদেশি হাজিদের আগমন নিষিদ্ধ করার ফলেই ব্যবসার সুযোগ বঞ্চিত হয় প্রতিষ্ঠানটি।  

চলতি বছরে হজে শুধু সৌদিতে বসবাসকারী নানা দেশের নাগরিকদের কিছু সংখ্যককে হজ পালনের সুযোগ দিচ্ছে সেখানকার কর্তৃপক্ষ।

সৌদি সরকারের এ সিদ্ধান্ত হক ইন্টারন্যাশনাল ট্যুরসের মতো দেশের ১,২৩৮টি হজ এজেন্সিকে কঠিন আঘাত করে। ফলে হজ ব্যবসায় হওয়া বার্ষিক পাঁচ হাজার কোটি টাকার লেনদেন বঞ্চিত হয়েছে তারা। হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এ তথ্য জানিয়েছে।  

শুধু মূল হজের ব্যবসা নয়, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বছরব্যাপী উমরার ব্যবসাও। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি উমরা বন্ধের সৌদি নির্দেশের পর এপর্যন্ত এক হাজার ১৭৫ কোটি টাকার লেনদেন কমেছে দেশের হজ সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর। 

''চলতি বছর মূল হজ যাত্রার আনুমানিক ৫ কোটি ১০ লাখ টাকার ব্যবসা হারিয়েছি। তবে আশার কথা হলো; নিবন্ধন বাতিল না করায় এসব হাজি আগামী বছর হজে যাবেন'' বলছিলেন হক ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী মাহমদুল হক পিয়ারু। 

''সারা বছর উমরা পালনের সুযোগ থাকলেও, বাংলাদেশের সিংহভাগ উমরা হজপালনকারী নভেম্বর থেকে এপ্রিল- এই সময়ে সৌদিতে যান। প্রতি মৌসুমে আমার এজেন্সির মাধ্যমে ৫০০ থেকে ৮০০ জন উমরা যাত্রী সৌদি যান। কিন্তু, কোভিড-১৯ জনিত কারণে গত ডিসেম্বর থেকে এপর্যন্ত মাত্র ১৫০ জনকে পাঠাতে পেরেছি।'' 

মাহমদুল আরও জানান, তার একটি ট্র্যাভেল এজেন্সির ব্যবসাও ছিল। কিন্তু, বিগত কয়েক মাস ধরে ওই প্রতিষ্ঠানের ১১ জন কর্মচারী এবং অন্যান্য রক্ষণাবেক্ষণ খরচ নির্বাহ করা কঠিন হয়ে উঠছিল। তাই আপাতত এজেন্সিতে তালা ঝুলছে। 

তুর্কি গণমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড সূত্রে জানা যায়, ইসলামিক বর্ষপুঞ্জির রজব, শাবান এবং রমজান মাসে সবচেয়ে বেশি মানুষ উমরা পালন করেন সারা বিশ্ব থেকে। তাই অর্থনৈতিক লাভের বিবেচনায় মূল হজের পর এ মৌসুমেই বেশি ব্যস্ততা থাকে হজ সহযোগী ব্যবসাগুলোর।   

সাম্প্রতিক ইতিহাসে মহামারির কারণে প্রথমবারের মতো সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে বিদেশিদের ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। মহামারি নিয়ন্ত্রণে চালু করা কঠোর বিধি-নিষেধের আওতায় সেখানে ধর্মীয় পর্যটনও বন্ধ রাখা হয়েছে। 

টিআরটি সূত্রে আরও জানা গেছে, এপর্যন্ত সৌদিতে এক লাখ ৬০ হাজার জন করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন, মারা গেছেন ১৩শ' জন। তবে সম্প্রতি সংক্রমণ পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হওয়ায় গত ২১ জুন থেকে দেশব্যাপী লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.