ডেমরায় সিটি হাইটেক পার্কে বিনিয়োগ ৫,০০০ কোটি টাকা; কর্মসংস্থান হবে ১৫,০০০

অর্থনীতি

টিবিএস রিপোর্ট
19 August, 2021, 06:10 pm
Last modified: 19 August, 2021, 07:32 pm
১১৫ একর জমিতে তৈরি হবে এই হাইটেক পার্ক।

রাজধানীর ডেমরায় প্রায় ১১৫ একর জমিতে সিটি হাইটেক পার্ক স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পুরো পার্কটি ডেভেলপ করবে সিটি গ্রুপ। বেসরকারি এই হাইটেক পার্কটি চালু হলে প্রায় ১৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে সিটি গ্রুপের পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

এর আগে গত ৩১ মে 'সিটি হাইটেক পার্ক'কে বেসরকারি হাইটেক পার্ক হিসেবে ঘোষণা করে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ। এর ফলে এই পার্কে বিনিয়োগকারীরা ১৪টি প্রণোদনা সুবিধাসহ বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ থেকে ওয়ান-স্টপ সার্ভিস পাবে। 

আজ (বৃহস্পতিবার) এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সিটি গ্রুপকে পার্ক ডেভেলপার হিসেবে স্বীকৃতি দেয় বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সভাকক্ষে আজ ওই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. বিকর্ণ কুমার ঘোষ এবং সিটি হাইটেক পার্ক লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. হাসান।

বিজ্ঞপিতে আরও জানানো হয়, বর্তমানে সিটি গ্রুপ বাংলাদেশের মোট চাহিদার এক তৃতীয়াংশ ভোগ্য পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহ করে আসছে। প্রতিযোগিতাপূর্ণ বাজার ব্যবস্থায় ব্যবসা-বাণিজ্যের বহুমূখীকরণের লক্ষ্যে সিটি গ্রুপ সম্প্রতি হাইটেক পার্ক স্থাপনে আগ্রহী হয়েছে। গত মে মাসে পার্ক স্থাপনের অনুমতি পাওয়ার পর মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন, ফিজিবিলিটি স্টাডি ও পরিবেশগত সমীক্ষা পরিচালনার জন্য ইতোমধ্যেই সিটি গ্রুপ কাজ শুরু করেছে।

বৃহস্পতিবারের এই চুক্তির মাধ্যমে হাইটেক পার্ক ডেভেলপার হিসাবে সিটি গ্রুপ অফ-সাইট ও অন-সাইট সকল প্রকার সুযোগ সুবিধার উন্নয়ন, মাটি ভরাট, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি সরবরাহ, স্ট্যান্ডার্ড বিল্ডিং নির্মাণ, পার্কের অভ্যন্তরে প্রশস্ত রাস্তা, লেক, উন্নতমানের ফুড কোর্ট, এসটিপি স্থাপনসহ পার্ক ডেভেলপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব কাজ করার সুযোগ পাবে। এছাড়া পার্কে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার জন্য সকল আধুনিক সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম বলেন, 'সিটি গ্রুপের মতো বড়ো প্রতিষ্ঠান হাইটেক পার্ক স্থাপনে এগিয়ে আসায় দেশের অন্য কোম্পানিগুলোও উৎসাহিত হবে।'

বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. বিকর্ণ কুমার ঘোষ বলেন, 'দেশে এই মুহূর্তে ৫টি হাইটেক পার্ক বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত এবং আরও তিনটি পার্ক উদ্বোধনের অপেক্ষায়। গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে ৩৫৫ একর জমিতে বিভিন্ন কোম্পানি কাজ করছে। এখান থেকে উৎপাদিত পণ্য বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। এখন পর্যন্ত হাইটেক পার্কসমূহে ১৪০টির অধিক স্থানীয় স্টার্টআপ কোম্পানিকে বিনামূল্যে স্পেস/কো-ওয়ার্কিং স্পেস বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ আইটি ইন্ডাস্ট্রির জনবলের চাহিদার দিক বিবেচনা করে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মধ্যমে আইসিটি খাতে দক্ষ জনবল তৈরি হয়েছে ২৮,৫০০ জন। বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আইসিটি খাতে ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রায় ২১,০০০ জনের প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।'

সিটি গ্রুপকে প্রাইভেট হাইটেক পার্ক ঘোষণা দেয়ায় বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়ে সিটি হাইটেক পার্ক লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. হাসান বলেন, 'যেসব ইলেকট্রনিক্স এবং প্রযুক্তিপণ্য বাংলাদেশে তৈরি করার কথা কেউ চিন্তাও করতে পারেননি, আমরা সেগুলো তৈরি করব। মাইক্রো প্রসেসর, চিপ ডিজাইন, সার্কিট ডিজাইন, মোবাইল, ল্যাপটপ, টিভি, ফ্রিজ উৎপাদন/সংযোজন, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল এন্ড টেকনোলজি কনসালটেনশন র্ফাম, নেটওয়ার্কি, ডাটা সেন্টার, সাইবার সিকিউরিটি, প্রোগ্রামিং, প্রজেক্ট ম্যানেজেমেন্ট, মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য ট্রেনিং ইনস্টিটিউট স্থাপনসহ আইটি শিল্প ইউনিট স্থাপনে দেশি বিদেশি বিনিয়োগকারীদেরকে উৎসাহিত করা হবে। এছাড়াও ডরমিটরি ও সায়েন্স পার্ক স্থাপন করা হবে।'

সিটি হাইটেক পার্কে আনুমানিক ৫,০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে এবং ১৫,০০০ লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে বলে তিনি জানান।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের পরিচালক (অর্থ ও প্রশাসন) এন এম সফিকুল ইসলামসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.