চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে আমদানি কমল প্রায় ১০ শতাংশ

অর্থনীতি

17 January, 2021, 09:20 am
Last modified: 17 January, 2021, 09:27 am
অনিশ্চয়তার সময় ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত নেয়া কঠিন হয়। অনেকে চাহিদা বেশি হবে এমন বিবেচনায় আমদানি বাড়িয়ে দেন। কিন্তু পরিস্থিতি পরিবর্তন হয়ে যাওয়ায় দেখা যায়, যে পরিমাণ এলসি খোলা হয়েছিল সেই পরিমাণ নিষ্পত্তি হয় না। 

কোভিডের অভিঘাতে উৎপাদন ও চাহিদা কমে যাওয়ায় আমদানিও হ্রাস অব্যাহত আছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) গেল অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আমদানি কমেছে ৯.৭ শতাংশ।  

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণপত্র (এসি) খোলা ও নিষ্পত্তি (সেটেলমেন্ট) সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণে, এমন চিত্র উঠে এসেছে। এতে দেখা যায়, যে পরিমাণ ঋণপত্র খোলা হয়েছে তার চেয়ে অনেক কম নিষ্পত্তি হয়েছে। 

চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বরে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১.৪২ শতাংশ বা ৩৯৭ মিলিয়ন ডলারের ঋণপত্র খেলা (এলপি ওপেনিং) কমেছে। বিপরীতে একই সময়ে ৯.৭ শতাংশ বা ২.৫৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণপত্র নিষ্পত্তি (এলসি সেটেলমেন্ট) কমেছে ।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডি'র গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, অনিশ্চয়তার সময় ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত নেয়া কঠিন হয়। অনেকে চাহিদা বেশি হবে এমন বিবেচনায় আমদানি বাড়িয়ে দেন। কিন্তু পরিস্থিতি পরিবর্তন হয়ে যাওয়ায় দেখা যায়, যে পরিমাণ এলসি খোলা হয়েছিল সেই পরিমাণ নিষ্পত্তি হয় না। 

আমদানি কমলেও দেশের প্রধান বন্দর, চট্টগ্রাম বন্দরের কার্গো হ্যান্ডেলিং এর পরিমাণ বাড়ছে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক প্রকাশিত মনিটরি পলিসি রিভিউ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোভিডের ফলে গেল বছরের মার্চ থেকে মে পর্যন্ত বন্দরের কার্যক্রম ব্যহত হওয়ায় আমদানির ক্ষেত্রে কার্গো হ্যান্ডেলিং ব্যাপকভাবে কমে যায়। 

তবে মে থেকে আমদানি আবারও ঘুরে দাঁড়াতে থাকে। ওই মাসে (মে) আমদানি ৪ মিলিয়ন মেট্রিকটন থেকে নভেম্বরে এসে ৮ মিলিয়ন মেট্রিকটন ছাড়িয়ে যায়, যা ২০১৯ সালের নভেম্বরের কাছাকাছি।

আমদানি কমলেও কার্গো হ্যান্ডেলিং বাড়ার বিষয়ে ড. মোয়াজ্জেম বলেন, একটি হতে পারে, পণ্য আমদানির পরিমাণ বাড়লেও যেসব পণ্য আমদানি হচ্ছে তার মূল্যমান আগের তুলনায় কম। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, এখন শিল্প স্থাপনে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি কমে গেছে। ওই সব যন্ত্রপাতি পরিমাণগত দিক থেকে কম হলেও মূল্যমান বেশি। অন্যদিকে এখন বন্দরে যেসব পণ্য খালাস হচ্ছে তা হয়তো আগের খোলা এলসি'র বিপরীতে। 
 
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে আশা প্রকাশ করা হয়, করোনার মাঝেও রেমিটেন্সের উচ্চ প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়বে। 

অন্যদিকে বেসরকারি খাতও ঘুরে দাঁড়াচ্ছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, আসছে দিনগুলোতে আমদানি বাড়বে এবং কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলা করেই ঘুরে দাঁড়াবে দেশের অর্থনীতি। 

ড. মোয়াজ্জেম বলেন, "কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ এর মাঝে পরিস্থিতি এখনো অনিশ্চিত। অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়ানোর ক্ষেত্রে সরকারকে আরো উদ্যোগী ভূমিকা পালন করতে হবে। সত্যিকার অর্থে যাদের আয় কমে গেছে তাদের আয় বাড়ানোর দিকে নজর দিতে হবে"। 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.