এস কে সুর ও মুনিরুজ্জামানকে ডেকেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্ত কমিটি
আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম-দুর্নীতি ধরতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গঠিত তদন্ত কমিটি সাবেক দুই ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী ও এস এম মুনিরুজ্জামানকে ডেকেছে।
মঙ্গলবার (২২ জুন) কমিটির সঙ্গে তাদের দেখা করার কথা আছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে। নাম উল্লেখ না করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, তদন্তের অংশ হিসেবেই তাদের ডাকা হচ্ছে।
আদালতের পর্যবেক্ষণের পরিপ্রেক্ষিতে গেল ১৭ ফেব্রুয়ারি ডেপুটি গভর্নর এ কে এম সাজেদুর রহমান খানকে প্রধান করে কমিটি গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ কমিটিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তা ছাড়াও সাবেক একজন বিচারক এবং আমলাও আছেন। আগামী মাসে এই কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।
ইতোমধ্যেই একটি প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে।
তদন্ত কমিটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যান, পরিচালক এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছে।
পিকে হালদার ইস্যুতে বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফসি) আর্থিক অনিয়মের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দায়দায়িত্ব নির্ধারণে তদন্ত কমিটি গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। কমিটি বিআইএফসির পাশাপাশি অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অনিয়মের ঘটনাও খতিয়ে দেখছে।
পি কে হালদার ইস্যুতে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশেদুল হক গেল ২ ফেব্রুয়ারি আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
তিনি জানান, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অনিয়ম চাপা দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন কর্মকর্তাদের পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকা করে দিত রিলায়েন্স ফাইন্যান্স ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিং।
বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের তৎকালীন মহাব্যবস্থাপক শাহ আলমকে প্রতি মাসে দুই লাখ টাকা করে দেওয়া হতো । আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অনিয়ম-দুর্নীতি চাপা দিতেন সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী।
রাশেদুল হকের দেওয়া ওই জবানবন্দি গণমাধ্যমে প্রকাশের পর আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো দেখভালের দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শাহ আলমের বিভাগ বদল করা হয়েছে।
৩৫টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কমপক্ষে ১০টির অবস্থা নাজুক। এসব প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে পারছে না। এর মধ্যে পিপলস লিজিং এর অবসায়নের জন্য অবসায়ক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
ইন্টারন্যাশনাল লিজিং ও বিআইএফসিতে চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়েছেন আদালত। এসব আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে অন্তত সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা পি কে হালদার লোপাট করেন বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্তে উঠে আসে।