ই-কমার্স খাতের ‘সংকট নিরসনে’ সিপিডি’র ৭ সুপারিশ

দেশের ই-কমার্স খাতের চলমান সংকট নিরসনে এবং এই খাতের প্রতি গ্রাহকদের আস্থা ফেরাতে বেশ কয়েকটি সুপারিশ করেছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)।
শনিবার সিপিডি'র আয়োজনে "ই-কমার্স খাতের চ্যালেঞ্জ: সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপট ও করণীয়" শীর্ষক ভার্চুয়াল সংলাপে এ সুপারিশগুলো তুলে ধরা হয়।
সুপারিশগুলো হলো—
- প্রচলিত আইনের সংশোধন করতে হবে এবং যথাযথ প্রয়োগ করে প্রতারণামূলক ই-কমার্স ব্যবসাগুলোর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে।
- আইন প্রয়োগের ক্ষমতা ও যথাযথ ব্যবহারের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ও বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও কার্যালয়ের পর্যাপ্ত ও দক্ষ জনবল বৃদ্ধি ও নতুন প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে।
- বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাসহ সকল সংস্থাগুলোর মাঝে সমন্বয় বৃদ্ধি ও কার কী ভূমিকা রয়েছে তা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকতে হবে।
- ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)-এর উচিত ই-কমার্স খাতের নিয়মিত তথ্য সংগ্রহ করা এবং সেগুলোকে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সাথে এবং জনসাধারণের কাছে নিয়মিত বিতরণ করা; যাতে এই ব্যবসার জবাবদিহিতা বৃদ্ধি পায় এবং গ্রাহকদের ই-কমার্স ব্যবসার কার্যক্রম সম্পর্কে সচেতন করে।
- ভোক্তাদের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে যেন তারা আরও সতর্কভাবে ই-কমার্স খাতে ব্যবসা করতে পারে এবং প্রতারণামূলক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান থেকে সাবধান থাকতে পারে।
- ব্যবসায়ী সংগঠনে নিবন্ধন করার আগে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা যাচাই ও নিবন্ধন প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ করতে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব)-এর মত সংগঠনের বিশেষ ভূমিকা পালন করতে হবে এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সদস্যপদ প্রদান করতে হবে।
- সরকারকে এই সমস্যা সমাধান করতে হবে কোম্পানি আইনের মাধ্যমে কিন্তু কোনোভাবেই জনগণের করের টাকা ব্যবহার করে নয়।
সংলাপ পরিচালনা করেন সিপিডি'র নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। আলোচনার শুরুতে তিনি কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ই-কমার্স খাতের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, "এই খাত বড় হয়েছে ইন্টারনেটের ব্যবহার বৃদ্ধি হওয়ায় আর মানুষের এই খাতের চাহিদা থাকায়। যদিও এই খাতকে যথাযথ নীতিমালার মাধ্যমে পরিচালনা করার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।"
চালডাল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়াসিম আলিম বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে বর্তমান নীতিগুলো পর্যাপ্ত এবং নতুন কোন নীতির প্রয়োজন নেই।
বিডিজবস-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম ফাহিম মাশরুর একই মত দিয়ে বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ অন্যান্য সংস্থার নজরদারি আরও জোরদার করতে হবে। তিনি আরও বলেন, নীতি আছে কিন্তু তার যথাযত প্রয়োগ দরকার।
সংলাপে ই-কমার্স বিশেষজ্ঞ, গবেষক, উন্নয়ন কর্মী, শিক্ষাবিদ, ব্যবসায়ী নেতা, সুশীল সমাজ প্রতিনিধি, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অংশীদার এবং সাংবাদিকরা সংলাপে উপস্থিত ছিলেন এবং তাদের মতামত তুলে ধরেন।