আট মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি

অর্থনীতি

টিবিএস রিপোর্ট
20 July, 2021, 01:00 pm
Last modified: 20 July, 2021, 01:06 pm
বিশেষজ্ঞদের মতে, চালের দাম বৃদ্ধিতে জুন মাসের মূল্যস্ফীতিতে বেশি প্রভাব পড়েছে। এছাড়া ভোজ্যতেলের দাম বাড়ার কারণেও মূল্যস্ফীতি বেড়েছে।

খাদ্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকায় সদ্য সমাপ্ত ২০২০-২১ অর্থবছরের গড় মূল্যস্ফীতি সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরের ১২ মাসে গড় মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫.৫৬%। সরকারের লক্ষ্য ছিল ওই অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি ৫.৪% এর মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার। এর আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৫.৬৫%।

গত রোববার জুন মাসের হালনাগাদ মূল্যস্ফীতির তথ্য প্রকাশ করে বিবিএস।  

বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, জুনে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে সাধারণ মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫.৬৪%, যা গত আট মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে গত অক্টোবরে সর্বোচ্চ ৬.৪৪% মূল্যস্ফীতি ছিল। গত মে মাসে মূল্যস্ফীতি ছিল ৫.২৬%। আর গত বছরের জুনে সাধারণ মূল্যস্ফীতি ছিল ৬.০২%।

বিশেষজ্ঞদের মতে, চালের দাম বৃদ্ধিতে জুন মাসের মূল্যস্ফীতিতে বেশি প্রভাব পড়েছে। এছাড়াও ভোজ্যতেলের দাম বাড়ার কারণেও মূল্যস্ফীতি বেড়েছে।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, "চালের দাম বাড়তি থাকায় মূল্যস্ফীতিতে বড় ধরণের প্রভাব পড়েছে। নতুন ধানের দামও বেশি। এছাড়া বিশ্বব্যাপী পণ্যের দাম বাড়তি। বিশেষ করে ভোজ্যতেলের দাম ৪০% পর্যন্ত বেড়েছে। বিশ্বব্যাপী সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যাহত হওয়া এবং চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে"। এসব কারণে আগামীতে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।

দেশে তারল্যের প্রভাবেও মূল্যস্ফীতি বেড়েছে বলে তিনি জানান। তাছাড়া ডিপোজিট প্রবৃদ্ধি বেশি। এসব  কারণেও মূল্যস্ফীতি বেড়েছে বলে মনে করছেন তিনি।

জাতিসংঘের কান্ট্রি ইকোনমিস্ট ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, জুনে লকডাউন ছিল লম্বা একটা সময় ধরে। তাছাড়া কোভিড গ্রামেও ছড়িয়ে পড়েছে। এ সময়ে পরিবহন ব্যবস্থা বাঁধাগ্রস্ত হওয়ার কারণে সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক ছিল না। এছাড়া বাড়তি তেলের দাম ও চালের দাম মূল্যস্ফীতি বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে।

বিবিএসের তথ্য অনুয়ায়ী, জুনে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫.৪৫%, যা মে মাসে ছিল ৪.৮৭%।  গত বছরে জুনে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ৬.৫৪%। চাল, তেল ছাড়াও খাদ্যপণ্যের মধ্যে মাছ, মসলাসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম এ সময়ে বেড়েছে বলে জানায় বিবিএস।

এদিকে পোশাক, নির্মাণ সামগ্রী, পরিবহন ভাড়া, চিকিৎসা ব্যয়সহ খাদ্য বর্হিভূত অনেক পণ্যের দামই গত ফেব্রয়ারি থেকে বাড়তি থাকায় খাদ্য বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি বেড়ে চলেছে। এ ধারাবাহিকতায় গত জুনে আবারও বেড়েছে খাদ্য বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি। গত জুনে খাদ্য বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ৫.৯৪%। মে মাসে যা ছিল ৫.৮৬%। এছাড়া ৫.২২% খাদ্য বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ছিল গত বছরের জুনে।    

 

 
 

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.