রানি নেফারতিতির সমাধি খুঁজে পাওয়ার দাবি

অফবিট

টিবিএস ডেস্ক
19 September, 2022, 04:05 pm
Last modified: 19 September, 2022, 04:14 pm
ফারাও আখেনাতেন ও তাঁর স্ত্রী রানি নেফারতিতির নাম ও পরিচয় মুছে ফেলার পাশাপাশি সেসব বিকৃত করার চেষ্টা করে উত্তরসূরীরা। সহস্রাব্দকালের জন্য চাপা পড়ে যায় তাঁদের সমৃদ্ধ ইতিহাস।

প্রাচীন মিশরের রানি নেফারতিতির সমাধি অবশেষে খুঁজে পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছেন প্রখ্যাত প্রত্নতাত্ত্বিক জাহি হাওয়াস।

বছরের পর বছর ধরে রানি নেফারতিতির সমাধি খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করছিলেন প্রত্নতত্ত্ববিদরা। মিশরের উদ্যোগে নীল নদের তীরবর্তী শহর লুক্সরের আশেপাশে সাম্প্রতিক এক প্রত্নতাত্ত্বিক অভিযানে প্রাপ্ত পুরাকীর্তিগুলো রাজা তুতেনখামেনের অলঙ্কারের সদৃশ বলে ডিসেম্বরে ঘোষণা দেওয়া হয়।

একই অভিযানে লুক্সেরের পশ্চিমতীরে একটি মমি আবিষ্কৃত হয়। এই মমিটিই নেফারতিতির বলে ধারণা করছেন হাওয়াস।

জাহি হাওয়াস নিজেও ওই অভিযানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি বলেন, 'মিশরের অষ্টাদশ তম রাজবংশের আখেননাতেন থেকে শুরু করে দ্বিতীয় বা তৃতীয় আমেনহোতেপের মমি থেকে সংগৃহীত ডিএনএ আমাদের কাছে আছে। এছাড়াও কেভি২১এ এবং বি নামে দুটি অশনাক্ত মমির ডিএনএ-ও সংরক্ষিত রয়েছে। অক্টোবরে আমরা তুতেনখামেনের স্ত্রী আনখেসেনামুন এবং তুতেনখামেনের বাবার স্ত্রী নেফারতিতির মমি আবিষ্কারের বিষয়টি চূড়ান্তভাবে নিশ্চিত করতে পারব।'

 'এছাড়াও কেভি৩৫ নামের সমাধিতে ১০ বছর বয়সী একটি ছেলের মমি রয়েছে। ছেলেটি তুতেনখামেনের ভাই ও আখেনাতেনের পুত্র হলে নেফারতিতি রহস্যের সমাধান হবে'।

খ্রিস্টপূর্ব ১৩৭০ থেকে ১৩৩০ সাল পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন রানি নেফারতিতি। তিনি রাজা তুতেনখামেনের সৎমা এবং ফারাও আখেনাতেনের স্ত্রী। নেফারতিতি স্বামীর সঙ্গে ও তাঁর মৃত্যুর পর সমৃদ্ধ এক মিশর শাসন করেছিলেন বলে ধারণা করা হয়। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের সূত্রানুসারে, ফারাও আখেনাতেন মিশরে বহুঈশ্বরবাদ থেকে একেশ্বরবাদ প্রবর্তন করেন। সেসময় সৌরদেবতা আতেনের একক উপাসনা শুরু হয়। এমনকি তিনি নিজের রাজধানীও আখেতাতেন নামে নতুন এক শহরে স্থানান্তর করেন যার অর্থ 'দেবতা আতেনের দিগন্ত'।

তবে তাঁর উত্তরসূরীরা ফারাও আখেনাতেনের নাম ও পরিচয় মুছে ফেলার চেষ্টা করে। তাঁর স্থাপিত রাজধানী পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। আখেনাতেন ও নেফারতিতি এবং তাদের পরিবারের পছন্দের শিল্পকর্ম এমনকি তাদের নাম পর্যন্ত বিকৃত করার চেষ্টা করা হয়। তাদের সেসব ঐতিহ্য সহস্রাব্দকালের তলে চাপা পড়ে যায়।

নেফারতিতি শাসক হিসেবে কেমন ছিলেন তা এখনও বিতর্কিত একটি বিষয়। হাওয়াস বলেন, 'আমি এখনও দুটো জিনিস খুঁজছি। নেফারতিতির সমাধি ও তাঁর দেহ। আমার বিশ্বাস আখেনাতেনের মৃত্যুর পর নেফারতিতি স্মেনখকারে নামে তিন বছরের জন্য মিশর শাসন করেছেন।'

তবে সম্ভাব্য এই আবিষ্কার নিয়ে অনেকেই সন্দেহ পোষণ করেছেন।

'ধর্মীয় ও রাজনৈতিক কারণে লুক্সরে নেফারতিতির প্রকৃত মমি খুঁজে পাওয়া আসলেই সম্ভব কি না তা নিয়ে আমার সন্দেহ রয়েছে,' বলেন বিবলিওথেকা আলেজান্দ্রিয়ার অ্যান্টিক মিউজিয়মের পরিচালক হুসেইন আবদেল বাসির।

২০২১ সালে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, 'লুক্সরের পশ্চিম তীরে নেফারতিতির সমাধি খুঁজে পাওয়া একমাত্র তখনই সম্ভব যদি আমারনা থেকে পরবর্তীকালে লুক্সরে আখেনাতেন ও নেফারতিতির মমি সরানো হয়ে থাকে'।


  • সূত্র: আর্টনেট

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.