শান্তিতে থাকতে ঘর ছেড়ে শ্রীঘরে!

লকডাউনে ঘরের লোকদের সঙ্গে থাকতে থাকতে হাঁপিয়ে উঠেছিলেন ভদ্রলোক। সহ্য করতে না পেরে শেষমেষ পুলিশের কাছে নিজেই নিজেকে সোপর্দ করলেন! এমন অভিনব ঘটনা ঘটেছে ইংল্যান্ডের পশ্চিম সাসেক্সে।
তার পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
বুধবার বিকেলে সাসেক্স পুলিশের কাছে 'শান্তি এবং শান্ত হওয়ার আশায়' স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেন তিনি।
পুলিশ জানিয়েছে, লোকটিকে এমনিতেই কারাগারে ফেরানোর জন্য খোঁজা হচ্ছিল। বার্গেস হিল পুলিশ স্টেশনে এসে তিনি নিজেই নিজেকে আইনের হাতে সোপর্দ করেন। এরপর তাকে কারাগারে ফিরিয়ে নেওয়া হয়।
এদিকে, কোভিড-১৯ মহামারিতে মানুষের ক্রমবর্ধিত মানসিক সমস্যা নিয়ে মনোবিজ্ঞানীরা উদ্বেগ প্রকাশ করে চলেছেন। মাসের পর মাস একই স্থানে নির্দিষ্ট মানুষের সঙ্গে আবদ্ধ থেকে অনেকেই যেমন হাঁপিয়ে উঠছে, তেমনি দীর্ঘদিন বিচ্ছিন্ন থাকার ফলেও মানুষের মাঝে মানসিক চাপ, বিষণ্ণতা, ঘুমের সমস্যা প্রভৃতি প্রকট হচ্ছে।
দিনের পর দিন একসঙ্গে থাকার চেয়ে যেমন কারাগারে ফিরে যাওয়াই অধিকতর শ্রেয় ভেবেছেন ওই ব্যক্তি।
সাসেক্স পুলিশের পরিদর্শক ড্যারেন টেইলর টুইটারে লিখেছেন, "শান্তি ও শান্ত! 'ওয়ান্টেড' লোকটি জানালেন, তিনি কারাগারে ফিরে আসবেন। এতদিন যাদের সঙ্গে কাটিয়েছেন, তাদের সঙ্গে আর থাকবেন না। বরং তিনি পুলিশি হেফাজতে ফিরে নিজের মতো সময় কাটাতে চান!"
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, পারিবারিক ও বন্ধুত্বের সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে চলমান মহামারি। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় উঠে এসেছে, লকডাউনের চাপে অভিভাবকদের মাঝেও মানসিক চাপ, হতাশা ও উদ্বেগের মাত্রা বেড়েছে।
চাপের মধ্য দিয়ে গেছেন দম্পতিরাও। রিলেশনশিপ সাপোর্ট চ্যারিটি রিলেটের এক গবেষণা বলছে, গত বছরের এপ্রিলে প্রায় এক-চতুর্থাংশ দম্পতি (২৩ শতাংশ) সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে লড়াই করেছে।
এরপর জুলাইয়ে প্রকাশিত পরিসংখ্যানে দেখা যায়, লকডাউনে ৮ শতাংশ মানুষ নিজেদের সম্পর্ক শেষ করে ফেলতে চেয়েছেন; ২৫-৩৪ বছর বয়সীদের মাঝে সম্পর্কচ্ছেদের হার বেড়েছে ১৫ শতাংশ।
কো-অপ নামে আরেকটি আইনি সংস্থার মতে, গত বছর লকডাউনের ভেতর ডিভোর্স নিয়ে মানুষের মাঝে অনুসন্ধান বেড়েছে ৩০০ শতাংশ। ডিভোর্সের পর লকডাউনে সন্তান মা নাকি বাবার তত্ত্বাবধানে থাকবে, সেসব বিষয়ে আইনজীবীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল।
- সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান