বেভারলি হিলে ১৭৮ কোটি টাকার প্রাসাদ কিনলেন সাবেক আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রীর ছেলে  

অফবিট

টিবিএস ডেস্ক
11 October, 2021, 03:20 pm
Last modified: 11 October, 2021, 03:24 pm
আর্কিটেকচার ফার্ম ‘উডস প্লাস ড্যানগারানে’র নকশা করা সদ্যনির্মিত ৯,০০০ বর্গফুটের বাড়িটিকে ‘আধুনিকতা ও মধ্যযুগের নকশার সমন্বয়’ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামি সমুদ্র সৈকতের পাশে স্বনামধন্য সেন্ট রেজিস হার্বার রিসোর্টের ২৭ তলা ভবনে বিলাসবহুল একটি অ্যাপার্টমেন্টের মালিক তিনি, যার দাম ৫.২ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু এখানেই শেষ নয়, দাউদ ওয়ারদাক মার্কিন মুলুকের পশ্চিম উপকূলেও নিজের একটা আস্তানা চেয়েছিলেন। সে কারণেই বেভারলি হিলসের প্রধান ট্রুসডেল এস্টেট স্ট্রিটে রেকর্ড ২০.৯ মিলিয়ন ডলার মূল্যে আরও একটি প্রাসাদ কিনে নিয়েছেন এই রহস্যময় ব্যবসায়ী।

বলা হচ্ছে সাবেক আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রী আবদুল রহিম ওয়ারদাকের ছেলে দাউদ ওয়ারদাকের কথা। তার বেভারলি হিলসের প্রাসাদের মূল্য বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৭৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকারও বেশি!

আর্কিটেকচার ফার্ম 'উডস প্লাস ড্যানগারানে'র নকশা করা সদ্যনির্মিত ৯,০০০ বর্গফুটের বাড়িটিকে 'আধুনিকতা ও মধ্যযুগের নকশার সমন্বয়' হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। ০.৫৮ একরের এই সম্পত্তি ২০১৬ সালে ৯.৫ মিলিয়ন ডলার মূল্যে 'উডবেইজ গ্রুপ' নামক বর্তমানে বিলুপ্ত একটি পঞ্জি স্কিমের কাছে বিক্রি করা হয়।

তবে মালিকানা নেওয়ার পর উডব্রিজ গ্রুপ মূল বাড়িটি ভেঙে ফেলে। প্রতিষ্ঠানটি দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার পর নতুন অবকাঠামোটি ওয়ারদাকের কাছে বিক্রি করা হয়।

লস অ্যাঞ্জেলেসের খ্যাতনামা হেয়ার স্টাইলিশ স্যালি হার্শবার্গারের মালিকানাধীন থাকার সময় এখানে অপেক্ষাকৃত ছোট একটি বাড়ি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু আকারে ছোট হলেও বাড়িটিতে ষাটের দশকের স্থাপত্যকলার কাজ ছিল চোখ জুড়ানো। হার্শবার্গার এই প্রপার্টিকে 'স্প্রিংকেল কাপকেকস' ও 'পিজানা' ফুড চেইনের প্রতিষ্ঠাতা ক্যানডেস নেলসনের কাছে ইজারা দেন। এরপর ২০১৩ সালে বাড়িটির হাতবদল হয়ে চলে যায় ফ্লোরিডার আরেক ব্যবসায়ীর হাতে।

বোঝাই যাচ্ছে, ওয়ারদাকের হাতে আসার আগে বহু হাত ঘুরেছে বেভারলি হিলসের এই বিখ্যাত প্রাসাদ। কিন্তু বাড়িটিকে নিজের মনের মাধুরী মিশিয়ে সাজানোর জন্য পয়সা খরচ করতে কার্পণ্য করেননি আফগান কোটিপতি।

ওয়ারদাকের বর্তমান বাড়িতে রয়েছে কৌণিক ধাচের ৫টি শোবার ঘর ও ৭টি বাথরুম, যেগুলোর কাঁচের দেয়ালের মধ্য দিয়ে ডাউনটাউন লস অ্যাঞ্জেলেসের  আকাশচুম্বী ভবনগুলোর চমৎকার সৌন্দর্য্য উপভোগ করা যায়।

ইন্টেরিয়র সজ্জায় ব্যবহার করা হয়েছে বার্নিশবিহীন কাঠ এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক উপকরণ। কনটেম্পোরারি মিনিমালিজমকে থিম হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে এখানে।

জলপাই গাছে শোভিত আঙিনায় বিশেষ ধরনের গাছপালা লাগানো হয়েছে, যা খরা-প্রতিরোধী এবং কিছুটা বুনো ধাঁচের। বাড়ি থেকে কয়েক ফুট দূরেই রয়েছে  আয়তাকার সুইমিং পুল।

১৯৭৭ সালে আফগানিস্তানে জন্ম নেওয়া পশতুন শরণার্থী দাউদ ওয়ারদাকের ব্যাবসা বা সম্পদের উৎস সম্পর্কে খুব বেশি ধারণা পাওয়া যায়নি। তবে পাবলিক করপোরেশনের নথিপত্র থেকে জানা যায়, তিনি মায়ামিভিত্তিক প্রতিষ্ঠান, 'এডি ক্যাপিটাল গ্রুপে'র প্রেসিডেন্ট।

তাছাড়া, একাধিক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ওয়ারদাকের বড় ভাই হামেদ ওয়ারদাকও একজন সফল ব্যবসায়ী এবং জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক। 

'এনসিএল হোল্ডিংস' নামক একটি সামরিক পরিবহণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে তার। মূলত যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়াভিত্তিক প্রতিষ্ঠান হলেও প্রাথমিকভাবে আফগানিস্তানে কার্যক্রম চালিয়েছে এটি।

শুধু তাই নয়, আফগানিস্তানে আমেরিকান রসদ প্রবেশের পথ নিরাপদ রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মার্কিন সরকারের বেশকিছু  চুক্তিও তারা নিজেদের হস্তগত করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, চুক্তিগুলোর মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ৩৬০ মিলিয়ন ডলার লুফে নিয়েছে এনসিএল হোল্ডিংস।


  • সূত্র: ডার্ট ডটকম

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.