গাজায় ‘আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন’ ঘটছে: জাতিসংঘ মহাসচিব

গাজায় আবারও যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ওপর হামাসের 'ভয়াবহ হামলা'র প্রতিক্রিয়ায় 'সমস্ত ফিলিস্তিনি জনগণের' ওপর শাস্তি আরোপ কোনোভাবেই ন্যায্য (জাস্টিফায়েড) নয়।
মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশনে তিনি বলেন, "গাজায় আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের যে সুস্পষ্ট লঙ্ঘন আমরা দেখতে পাচ্ছি, তা নিয়ে আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমি স্পষ্টভাবে বলছি, একটি সংঘাতে কোনো পক্ষই আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের ঊর্ধ্বে নয়।"
মহাসচিব বলেন, "গাজায় আমাদের জাতিসংঘের জ্বালানি সরবরাহ আর কয়েক দিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। সেটি হবে আরেকটি বিপর্যয়। এই দুর্ভোগ লাঘবের জন্য ত্রাণ বিতরণ কাজকে আরও সহজ ও নিরাপদ করতে এবং জিম্মিদের মুক্তির সুবিধার্থে, আমি অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতির জন্য আমার আবেদন পুনর্ব্যক্ত করছি।"
গুতেরেস বলেন, ইসরায়েলের ওপর হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলা 'শূন্য থেকে হয়নি'।
"ফিলিস্তিনি জনগণ ৫৬ বছর ধরে শ্বাসরুদ্ধকর দখলদারিত্বের শিকার হয়েছে। তারা তাদের ভূখণ্ড বসতিতে পরিণত হতে এবং সহিংসতায় জর্জরিত হতে দেখেছে। তাদের অর্থনীতি থমকে গেছে। এই মানুষগুলো বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং তাদের ঘরবাড়ি ধ্বংস করা হয়েছে। তাদের দুর্দশার রাজনৈতিক সমাধানের আশাও ধুলোয় মিশে গেছে," যোগ করেন তিনি।
ইসরায়েলের নাম না নিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, "বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করার অর্থ এই নয় যে, ১০ লাখের বেশি মানুষকে দক্ষিণে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া; যেখানে আশ্রয় নেই, খাবার নেই, পানি নেই, ওষুধ নেই, জ্বালানি নেই; এবং তারপর সেখানে নিজেরাই বোমা হামলা চালিয়ে যাওয়া।"
এদিকে, মহাসচিবের এমন বক্তব্যকে 'আশ্চর্যজনক' বলে অভিহিত করেছেন জাতিসংঘে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদান।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (পূর্বতন টুইটার) তিনি লিখেছেন, "'হামাসের হামলা শূন্য থেকে হয়নি'– তার (অ্যান্তোনিও গুতেরেস) এই বক্তব্য সন্ত্রাসবাদ এবং হত্যার পক্ষে একটি সমঝোতা প্রকাশ করে। এটি সত্যিই দুঃখজনক যে, হলোকাস্টের পরে উদ্ভূত একটি সংস্থার প্রধান এমন ভয়ঙ্কর দৃষ্টিভঙ্গি ধারণ করেন।"
এদিকে, জাতিসংঘ মহাসচিব হামাসের হামলাকেও 'ভয়াবহ এবং নজিরবিহীন' বলে উল্লেখ করে গাজায় হামাসের কাছে জিম্মি প্রায় ২০০ জনের মুক্তির দাবি জানান।