গাজা, লেবাননে ‘নিষিদ্ধ’ সাদা ফসফরাস ব্যবহার করছে ইসরায়েল: এইচআরডব্লিউ
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা ও লেবাননে চলমান হামলায় নিষিদ্ধ সাদা ফসফরাস ব্যবহার করেছে ইসরায়েল বলে নিশ্চিত করেছে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। সাদা ফসফরাসের ব্যবহারের ফলে গুরুতর ঝুঁকিতে পড়েছে বেসামরিক নাগরিকদের স্বাস্থ্য।
এইচআরডব্লিউ জানায়, মঙ্গল ও বুধবার লেবানন ও গাজার ভিডিও ফুটেজ যাচাই করেছে তারা। এতে দেখা গেছে, গাজার বন্দরসহ আরও দুটি গ্রামাঞ্চল ও ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তে সাদা ফসফরাস ছুড়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
এইচআরডব্লিউ প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষাৎকারও নিয়েছে। তারা মানবাধিকার সংগঠনটিকে হামলার বর্ণনা দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক আইনে জনবসতিপূর্ণ এলাকায় সাদা সাদা ফসফরাসের ব্যবহার নিষিদ্ধ। এটি ব্যবহার করে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে বলে জানিয়েছে এইচআরডব্লিউ। সাদা ফসফরাস মানুষকে মারাত্মকভাবে দগ্ধ করতে পারে। আগুন ধরে যেতে পারে ঘরবাড়িতে।
এইচআরডব্লিউর মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার পরিচালক লামা ফাকিহ বলেছেন, জনবসতিপূর্ণ বেসামরিক এলাকায় সাদা ফসফরাস ব্যবহার করলে এমনভাবে শরীর পুড়ে যেতে পারে, যার যন্ত্রণা আজীবন বয়ে বেড়াতে হয়।
সাদা ফসফরাস অত্যন্ত দাহ্য রাসায়নিক। অক্সিজেনের সংস্পর্শে এলেই এটি জ্বলে ওঠে।
এই রাসায়নিক পদার্থটি মানুষের মাংস ভেদ করে হাড় পর্যন্ত পুড়িয়ে দিতে পারে।
আন্তর্জাতিক আইনে যুদ্ধক্ষেত্রে সাদা ফসফরাস ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ না হলেও, জাতিসংঘের কনভেনশন অন কনভেনশনা ওয়েপনস অনুসারে বেসামরিক এলাকায় এটি ব্যবহার নিষিদ্ধ। যদিও ইসরায়েল এই কনভেনশনে স্বাক্ষর করেনি।
এ বিষয়ে আলো জাজিরার মন্তব্যের অনুরোধে তাৎক্ষণিক সাড়া দেয়নি ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে।
তবে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলেছে, তারা [ইসরায়েলি সেনাবাহিনী] বর্তমানে গাজায় সাদা ফসফরাসযুক্ত অস্ত্র ব্যবহারের বিষয়ে অবগত নয়।
তবে লেবাননে এই অস্ত্র ব্যবহারের বিষয়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী কোনো মন্তব্য করেনি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
এর আগে ২০০৯ সালে গাজায় চালানো বোমা হামলায় সাদা ফসফরাস ব্যবহার করেছিল ইসরায়েল। ওই সময় দেশটির বিরুদ্ধে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছিল।
২০১৩ সালে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলে, ব্যতিক্রমী পরিস্থিতি ছাড়া তারা আর কখনও জনবসতিপূর্ণ এলাকায় সাদা ফসফরাস ব্যবহার করবে না।
গত শনিবার ইসরায়েলে হামলা করে হামাস। এরপর হামাসকে নিশ্চিহ্ন করার শপথ করে পাল্টা আক্রমণ চালায় ইসরায়েল।
গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় ১ হাজার ৫০০-র বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৬ হাজার ৬০০-র বেশি।
অন্যদিকে হামাসের আক্রমণে ১ হাজার ৩০০-র বেশি ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ৩ হাজারের বেশি।