আমেরিকায় যাচ্ছে রাশিয়ার সারের জাহাজ

রাশিয়া থেকে তরল সার নিয়ে একটি ট্যাংকার যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছে। জাহাজ ট্র্যাকিং ডাটা নিয়ে কাজ করে এমন প্রতিষ্ঠান ও মার্কিন সরকারি সূত্রে এ খবর জানা গেছে।
বিশ্ববাজারে এই মুহূর্তে সারের দাম আকাশছোঁয়া। এর জেরে দেখা দিতে পারে খাদ্য ঘাটতি। ঠিক এই সংকটের মুহূর্তেই রুশ সারবাহী জাহাজটি যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছে।
রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালানোর থেকে মস্কোর উপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। রাশিয়ার অপরিশোধিত ও পরিশোধিত পণ্য, কয়লা ও তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ওয়াশিংটন।
তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন সারসহ রাশিয়ার অন্য কোনো কৃষিপণ্যের উপরই নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। তবু অনেক পশ্চিমা ব্যাংক ও ব্যবসায়ী প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল নিয়মনীতির মধ্যে ঝামেলায় পড়ার ভয়ে রুশ কৃষিপণ্যের সরবরাহ এড়িয়ে গেছে।
রাশিয়া ও ইউক্রেন বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ সার রপ্তানিকারক। খাদ্যশস্য, সয়া, ধান ও গমের ফলন বৃদ্ধির জন্য সার অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু দেশ দুটি যুদ্ধ জড়ানোর ফলে সারের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে।
এতে বেড়ে গেছে সারের দাম। চড়া দামের কারণে কৃষকরা সারের ব্যবহার কমিয়ে দিয়েছেন। কৃষিকাজের জন্য যে পরিমাণ ভূমির ব্যবহার করবেন ঠিক করেছিলেন, তা-ও কমিয়েছেন তারা।
লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী ট্যাংকার 'জনি রেঞ্জার' সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউ অরলিন্সে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। জাহাজটি ৩৯ হাজার টন তরল ইউরিয়া অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট—ইউরিয়া, নাইট্রিক অ্যাসিড ও অ্যামোনিয়ার সংমিশ্রণে তৈরি—সার বহন করছে।
গত মাসে রাশিয়ার সেইন্ট পিটার্সবার্গ থেকে জাহাজটিতে সার বোঝাই করা হয়।
তবে সারের ক্রেতা-বিক্রেতার ব্যাপারে কোনো তথ্য এখনও প্রকাশ করা হয়নি। এ ব্যাপারে ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট ও কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রটেকশন এজেন্সিও কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগের এক মুখপাত্র বলেছেন, রুশ খাদ্য ও কৃষিপণ্যের উপর কখনোই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, 'রাশিয়ান সরকারের মতো খাদ্যকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে মানবিক সংকট সৃষ্টিতে আমরা কোনো আগ্রহ নেই।'
তবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধ করার আগপর্যন্ত রাশিয়ার খাদ্য-বহির্ভূত পণ্যের উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বলবত থাকবে বলে জানান তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগের তথ্য বলছে, ২০২১ সালে আমেরিকা রাশিয়া থেকে ২৬২.৬ মিলিয়ন ডলারের ইউরিয়া অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট সার আমদানি করে।
চলতি সপ্তাহে ইউএস ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড কমিশন সারের ঘাটতি এবং মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে রাশিয়া থেকে ইউরিয়া অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট সার আমদানির উপর অ্যান্টি-ডাম্পিং ও অ্যান্টি-সাবসিডি শুল্ক প্রত্যাহার করে।
- সূত্র: রয়টার্স