Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
    • ফুটবল বিশ্বকাপ ২০২২
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Monday
December 11, 2023

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
    • ফুটবল বিশ্বকাপ ২০২২
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
MONDAY, DECEMBER 11, 2023
এই ‘লকডাউন’ কতোটা কাজে আসবে?

মতামত

ফরিদা আখতার
18 April, 2021, 07:00 pm
Last modified: 30 April, 2021, 03:35 pm

Related News

  • লকডাউনের ভয়াবহ স্মৃতি ফিরিয়ে আনছে রাজকুমার রাওয়ের 'ভিড়' 
  • চীনের লকডাউনে থমকে আছে দোহাজারী-কক্সবাজার রেল প্রকল্পের কাজ
  • চীনে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ, স্থগিত করা হলো এবারের এশিয়ান গেমস
  • ২ বছর পর নিউজিল্যান্ডের সীমান্ত খোলা: কান্নার রোল, চকলেটে বরণ
  • মহামারির সময়ে হাজার হাজার ছেলে কাজ করতে বাধ্য হয়েছে, এখন স্কুল চালু হয়েছে তারা ফেরেনি

এই ‘লকডাউন’ কতোটা কাজে আসবে?

'কাজ নাই তো খাদ্য নাই'- এমন অবস্থা যাদের, তাদের কথা ভেবে ব্যবস্থা নিন। তাদের কাছে জীবন আগে না জীবিকা আগে- এমন গোলকধাঁধা সৃষ্টি করে কোনো লাভ নেই।
ফরিদা আখতার
18 April, 2021, 07:00 pm
Last modified: 30 April, 2021, 03:35 pm
ফরিদা আখতার। প্রতিকৃতি: টিবিএস

সারাদেশে 'লকডাউন' চলছে। অফিস আদালত, গণপরিবহণসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও কার্যক্রম এপ্রিলের ১৪ তারিখ থেকে ২১ তারিখ পর্যন্ত বন্ধ বা আধা-বন্ধ করে দেওয়ার জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ১৩ দফা নির্দেশনাসহ প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। প্রজ্ঞাপনের বিষয় হিশেবে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসজনিত রোগ কোভিড-১৯-এর বিস্তার রোধকল্পে সার্বিক কার্যাবলি/চলাচলে বিধি-নিষেধ আরোপ।

এই বিধি-নিষেধ দেওয়ার কারণ করোনাভাইরাস পরিস্থিতির অবনতি, অর্থাৎ সংক্রমণ ও মৃত্যু উভয়ই বেড়ে যাওয়া।

সরকারের নির্দেশনার কোথাও লকডাউন শব্দটি উচ্চারিত হয়নি, তাই উদ্ধ্বৃতি দিয়ে 'লকডাউন' সম্পর্কে পর্যালোচনা করছি। প্রচার মাধ্যমে একে বিভিন্ন নামে আখ্যায়িত করা হচ্ছে; যেমন কঠোর লকডাউন, সর্বাত্মক লকডাউন, এমনকি আধা লকডাউনও বলা হচ্ছে। কারণ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান, শিল্প কারখানা, হোটেল, রেস্তোরাঁ, কাঁচাবাজার, শেয়ারবাজার, ব্যাংক ঘণ্টা মেপে খোলা রাখা হয়েছে। গত বছর একই কাজ করা হয়েছিল সাধারণ ছুটির নামে, যা প্রথমে দুই সপ্তাহ দিয়ে পরে আরও দীর্ঘ করা হয়েছিল।

বিশ্বের অনেক দেশেই লকডাউন দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে ইউরোপের দেশগুলোতে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট আসার পর আবার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার পরিস্থিতিতে লকডাউন দিতে হয়েছে মার্চ থেকে। ফ্রান্স, হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড, ইতালি, বেলজিয়ামে সীমিত আকারে বিশেষ করে নন-এসেনশিয়াল ব্যবসা, যেমন হেয়ার ড্রেসার, জিম, ফিটনেস সেন্টার, রেস্তোরাঁ ইত্যাদি সাময়িক বন্ধ করা হয়েছে। ফ্রান্সে ১৬টি এলাকায় ২ কোটি মানুষ লকডাউনের আওতায় রয়েছেন। ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলা এবং তার আশেপাশের এলাকায় লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। ভারতের বিভিন্ন রাজ্য, বিশেষ করে মহারাষ্ট্র, উত্তর প্রদেশ, মধ্য প্রদেশ, করণাটক ও নতুন দিল্লিতে লকডাউন কিংবা রাতের কারফিউ ঘোষণা করা হয়েছে।

লকডাউন মূলত মিডিয়ারই ভাষা, যারা এই নির্দেশনা দিচ্ছেন তাদের ভাষা নয়। মিডিয়ার রিপোর্টিংয়ের ধরন দেখে মনে হয় তারা হরতালের বর্ণনা দিচ্ছেন। তবে এই হরতাল বিরোধী দলের ডাকা নয়, খোদ সরকারের এবং এটাকে প্রশাসনের দিক থেকে বাস্তবায়ন সফল কিংবা বিফল হলো কি না তা বিচার করছেন। 

প্রজ্ঞাপনে জেলা ও মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনকে বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেটাও তারা নজরদারিতে রেখেছেন। সাংবাদিকরা যেভাবে মানুষকে লকডাউন নির্দেশনার লংঘনের দায়ে প্রশ্ন করছেন, তাতে মনে হয় দায়িত্বটা যেন তাদের। কিন্তু রাস্তায় থেকে এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় না রেখে কথা বলার মধ্য দিয়ে যে তারা নিজেরাও সংক্রমিত হতে পারেন বা অন্যকেও সংক্রমিত করতে পারেন, এই দিকটা মোটেও দেখা হচ্ছে না। মনে হয় তারা সংক্রমণ মুক্ত হয়ে আছেন। প্রজ্ঞাপনে চলাচল বন্ধ রাখা বা কার্যকলাপ সীমিত করার মূল কারণ হচ্ছে করোনা পরিস্থিতির অবনতি, এই কথা সবার জন্যেই প্রযোজ্য।

কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম লকডাউনের যে ব্যাখ্যা বাংলা ট্রিবিউন পত্রিকায় দিয়েছেন, তা হচ্ছে এই রকম: 'লকডাউন মানে হচ্ছে কোনো এলাকাকে একেবারেই লক করে ফেলা। যেখানে বাইরের কেউ আসবে না, যেখান থেকে কেউ বাইরে যেতে পারবে না। যাতে করে সে এলাকায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পর তার থেকে অন্য কেউ সংক্রমিত হতে না পারে। মানুষের চলাচল সীমিত করে দিতে হবে।' সেটা কি এই নির্দেশনায় আছে?

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই পর্যন্ত কখনো 'লকডাউন' করার পরামর্শ কোনো দেশকে দেয়নি। তাদের প্রস্তাব হচ্ছে 'স্টে হোম' নীতি অবলম্বন করা। ঠিক যেমন মাস্ক পরা, হাত ধোয়া, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার কাজ ব্যক্তি পর্যায়ে করতে হবে, একইভাবে ঘরে থাকার ব্যাপারটিও ব্যক্তি পর্যায়ের। এর জন্যে প্রশাসনিক কোনো পদক্ষেপ নিতে হবে কি না, কোনো নিষেধাজ্ঞা জারি করতে হবে কি না- এমন কোনো নির্দেশনা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোনো দেশকে দেয়নি। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই প্রস্তাব খুবই মধ্যবিত্ত-উচ্চবিত্ত কেন্দ্রিক এবং ইউরোপ-আমেরিকায় বেশি কার্যকর। বাংলাদেশে বাড়িতে বসে সব কাজ হয় না, সব ধরনের কর্মচারীর কাজ কম্পিউটার, স্মার্ট ফোন, জুম মিটিং দিয়ে হবে না। তাই 'স্টে হোম'-এর মানে যদি হয় কেউ প্রয়োজন ছাড়া বাইরে আসবে না, তাহলে বাংলাদেশের মতো দেশে সেটা চলাচলে নিষেধাজ্ঞাই হবে, যার অপর নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে লকডাউন।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, লকডাউনের একটি মেয়াদ আছে। সংক্রমণ এড়াতে মানুষের চলাচলের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করলে সাত দিনে তার ফল পাওয়া যাবে না বলেই জনস্বাস্থ্য ও করোনা সংক্রমণ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। কম পক্ষে দুই সপ্তাহ লকডাউন দিলে ভালো, তিন সপ্তাহ হলে আরও ভালো, তাতে এই চলাচল কমে যাওয়ার কারণে কী ফল এলো তা বোঝা যেতে পারে। কিন্তু এই নিষেধাজ্ঞা শুধুমাত্র এক সপ্তাহের জন্য দেওয়া হয়েছে। এরপর কি নতুন নির্দেশনা আসবে?

এশিয়ার অন্যান্য দেশ বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে করোনা সংক্রমণ রোধ করা হচ্ছে, তার মধ্যে ভিয়েতনাম অন্যতম। এবং ভিয়েতনামের অভিজ্ঞতা সফল বলেই সবাই জানে। ২০২০ সালে মার্চের ২৮ তারিখ থেকে দুই সপ্তাহের জন্য ম্যাসেজ পার্লার, ট্যুরিস্ট এলাকা এবং সিনেমা-হল সারা দেশেই বন্ধ ঘোষণা হয় এবং কোথাও ২০ জনের বেশি লোকসমাগম নিষিদ্ধ করা হয়। এছাড়া হ্যানয়, হোচি মিন সিটি-সহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শহরে খাদ্য পণ্য, ওষুধ এবং চিকিৎসা সেবা ছাড়া সব সেবা প্রদান বন্ধ রাখা হয়। ভিয়েতনাম ও ক্যাম্বোডিয়ার মাঝে সীমান্ত এপ্রিলের ১ তারিখ থেকে সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হয়। প্রয়োজনীয় সামগ্রী উৎপাদনের কারখানা, প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা হলেও তাদের স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়। একসাথে দুজনের বেশি মানুষ যেন বাইরে একত্র হতে না পারে এবং তাদের মধ্যেও শারীরিক দূরত্ব থাকে সেটা নিশ্চিত করা হয়।

এ বছর ভিয়েতনামের কোভিড সংক্রমণের সংখ্যা ২৭১৭ এবং ৩৫ জনের মৃত্যু ঘটেছে। নতুন সংক্রমণ ঘটেছে বেশির ভাগ বাইরে থেকে আসা নাগরিকদের। তাদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। অর্থাৎ দেশব্যাপী লকডাউন না করেও সুনির্দিষ্ট নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যায় এবং খুব নির্দিষ্টভাবে কাজ করে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি দেখা দিয়েছিল এবং সরকারের 'সফলতা' দেখে অনেকেই খুশি হয়েছিল। মাস্ক পরা, শারীরিক দূরত্ব, হাত ধোয়া ইত্যাদির ব্যাপারেও একটু শিথিলতা এসে গিয়েছিল। এরই মধ্যে ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয়ে গেছে, অতএব করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসে গেছে বলেই ধরে নেওয়া হয়েছিল। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে মানুষের প্রায় স্বাভাবিক চলাচল শুরু হয়ে গিয়েছিল, বিয়ে-শাদি, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক অনুষ্ঠান হতে থাকল। কোভিড সংক্রমণের সংখ্যা হঠাৎ করেই মার্চ থেকেই বাড়তে শুরু করে, যা ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকেই আভাস পাওয়া যাচ্ছিল। এই সময় দেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং নানা ধরনের প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে।

স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে নরেন্দ্র মোদির আগমনকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদ এবং রাষ্ট্রীয় আয়োজন কোভিড সংক্রমণের জন্যে সোনায় সোহাগা হয়েছে। যার ফলাফল মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকেই সংক্রমণ ও মৃত্যুর হারে লাফিয়ে বাড়ার গতিতেই বোঝা যায়। মার্চের শুরুতে ছিল ৮৪৫ (৮ মার্চ), ১৭১৯ (১৬ মার্চ), ৩৫৬৭ (২৪ মার্চ), এখন তা দাঁড়িয়েছে ৬ থেকে ৭ হাজারের মধ্যে। মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে ১৪ থেকে ৮৩ জন পর্যন্ত। আজ (রোববার) ১০২ জন মারা যাওয়ার খবর দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। প্রতিদিনই সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যুর খবর আসছে। পরিচিত চেনা-জানা, আত্মীয় স্বজনদের মধ্যেও সংক্রমণের খবর আসছে।

অবাক হবার বিষয় যে মার্চে যখন সংক্রমণ লাফিয়ে বাড়তে শুরু করল, তখন কোনো লকডাউন বা নিষেধাজ্ঞার প্রশ্ন ওঠেনি, কারণ সেই সময় প্রশাসন অন্য কাজে ব্যস্ত। এটা কি প্রশাসনের কাজ, নাকি জনস্বাস্থ্যের কাজ?

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ এবং সম্পৃক্ততা ছাড়াই বিধি-নিষেধ, নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার বিষয়টিও খুব বোধগম্য নয়। এর মধ্যেও সিদ্ধান্তহীনতা এবং চিন্তার অস্পষ্টতা দেখা গেছে। প্রথমে অফিস-আদালত খোলা রেখে গণপরিবহন বন্ধ করে দেওয়ার কারণে কর্মজীবী মানুষ রাস্তায় এই চৈত্র্য মাসের গরমে পুড়ে কষ্ট পেল। বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের জনসমাগম এড়ানো গেল না। সরকারের ওপর একদিকে ব্যবসায়ীদের চাপ, অন্যদিকে গার্মেন্ট মালিকদের চাপ, পরিবহন শ্রমিক ও মালিকের চাপে যখন এগুলো খোলা হলো, তখন আরও মানুষের সমাগম বেড়ে গেল। মানুষ করবে কী? কোন দিকে যাবে? অফিস আদালত ছাড়া যারা নানা ধরনের জীবিকার সাথে জড়িত, তারা শংকায় পড়ে ঢাকা ছাড়তে শুরু করল। গণপরিবহণ বন্ধ করেও তাদের ঠেকিয়ে রাখা যায়নি।

সাধারণ মানুষ ঢাকায় কাজে আসে, কিন্তু ঢাকা তাদের একদিনের জন্যেও কাজ ছাড়া খাদ্যের যোগান দেয় না। তাই তাদের 'পালাতে হয়' এই শহর থেকে। গ্রামে অন্তত কুড়িয়ে কাড়িয়ে হলেও কিছু খাওয়া যেতে পারে। কিছু না হোক, কচু শাক তো জুটবে। এটা আমাদের দেশের জন্যে খুব লজ্জার একটি বিষয় যে, আমরা জিডিপি'র উন্নতি করেও মানুষের খাওয়া যোগাতে পারি না। দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও কী করে ক্ষুধার ভয়ে মানুষ ঢাকা ছাড়তে বাধ্য হয়!

লকডাউনের এই ঘটনায় উন্মোচিত হচ্ছে, অনেকেরই এখন সঞ্চয় কমে গেছে। তাই আয় ছাড়া বেশিদিন চলার চিন্তা করা যায় না। করোনা নয়, ক্ষুধায় মরার প্রশ্ন ওঠে।

বিভিন্ন পত্রিকায় লকডাউনে রিকশা বা ঠেলাগাড়ি চালকদের কথা সংবাদকর্মীরা লিখেছেন। একজন ভ্যানচালক বললেন, 'স্যার, রিকশা ও ঠেলাগাড়ির মালিকদেরও পুলিশ রাতে বলে গেছে যেন রিকশা ও ঠেলাগাড়ি ভাড়া না দেয়। এই যে দেখতাছেন রিকশা ও ঠেলাগাড়ি কিছু, তারা মালিকদের অনেক বইলা, কইয়া রিকশা ও ঠেলাগাড়ি নামাইছে রাস্তায়।' আরেক রিকশাচালক দুই ঘণ্টা বসেও কোনো যাত্রী পাননি। তার কথা, 'কি কমু স্যার। লকডাউন আমাগো পেটে লাথি মারছে। সারাদিনে রোজগার কি হইব বুইঝা গেছি। খামু কী কন?'

এই প্রশ্নের উত্তর সাংবাদিকের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু তিনি অন্তত লিখে এইটুকু উপকার করেছেন যে, যারা মনে করে গরিব মানুষ অহেতুক রাস্তায় বের হয়, তারা যেন একটু সহানুভুতির দৃষ্টিতে দেখতে পারে।

অথচ রিকশা এবং ভ্যান গাড়ির প্রয়োজন কিন্তু আছে। সীমিত সংখ্যক রিকশা ভ্যান চালাবার অনুমতি দিলেও অনেকের, যাদের এখন হাসপাতালে যেতে হচ্ছে, কোনো পরিবহন পাচ্ছে না, তাদের উপকার হতো। টেলিভিশনে দেখেছি, রিকশাতেই করোনা আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে যাচ্ছে। উপসর্গ থাকলে টেস্ট করতেও যেতে হচ্ছে। কিন্তু হাসপাতালে এত বেশি রোগী হয়েছে যে, এক হাসপাতালে গেলে হচ্ছে না, কয়েকটি হাসপাতালে যেতে হচ্ছে। কোনো পরিবহনের ব্যবস্থা তো নেই। সংক্রমণ থেমে নেই, মৃত্যুও থেমে নেই।

আইইডিসিআর ঢাকা শহরে কয়েকটি এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করেছে। কিন্তু এখানকার বাসিন্দাদের জন্যে কোনো বিশেষ ব্যবস্থা কি দেখতে পাচ্ছি? এখানে যারা সংক্রমিত হচ্ছেন, সবাই নিশ্চয়ই অ্যাম্বুলেন্স সেবা পাবেন না। তাহলে তারা কীভাবে হাসপাতালে যাবেন? তারা হাসপাতালে গেলে কোনো অগ্রাধিকার পাবেন কি না। এখানে যে হাসপাতালগুলো আছে, সেগুলোর আরেকটু সক্ষমতা বাড়ানো হবে কি না। এসব অনেক ব্যবস্থাই নেওয়া যেত, তাহলে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার সংক্রমণ অন্য এলাকায় ছড়াত না। হয়তো সময়মতো অক্সিজেন ও চিকিৎসা পেলে মৃত্যুর সংখ্যা কমত।

তাহলে লকডাউনকে সরকারি হরতাল ঘোষণা দিলেই ভালো হতো। কিংবা প্রশাসনের শাসনের দিক থেকে ঢিলে-ঢালা কারফিউ বলা যেতে পারে। 

কল কারখানা খুলে রাখায় শ্রমিকরা তাদের চাকুরির স্বস্তি পেলেও সংক্রমণ থেকে বাঁচবেন কি না সে নিশ্চয়তা পাননি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারখানা চালু রাখা হবে বলে বলা হলেও টেলিভিশনের খবরে ইপিজেড অঞ্চলের কোরিয়ান ফ্যাক্টরিতে আসা শ্রমিকের মিছিল দেখে বোঝার উপায় নেই দেশে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে এবং ইপিজেড-এর বাইরে লকডাউন চলছে। গার্মেন্ট মালিকরা কোনো এক অজানা বৈজ্ঞানিক কারণে ভেবে রেখেছেন, গার্মেন্ট শ্রমিকদের করোনা সংক্রমণের হার খুব নগন্য। তাই বিশেষ দুঃশ্চিন্তার কারণ নেই। মালিক পক্ষ এখনও নিশ্চিত করেননি, করোনা আক্রান্ত শ্রমিকের বেলায় মালিকদের নীতি কী? কেউ আক্রান্ত হলে তাকে কমপক্ষে ১৪ দিন আইসোলেশন এবং চিকিৎসায় কাটাতেই হবে। এই চিকিৎসার খরচ কে দেবে? করোনা আক্রান্তদের খাদ্য খুব গুরুত্বপূর্ণ, সে ব্যবস্থা কী?

জানি এতসব ব্যবস্থা মালিক পক্ষ করবেন না, কিন্তু শ্রমিকদের সংক্রমণ থেকে নিরাপদ থাকার মতো পরিস্থিতি করা হয়নি। গার্মেন্ট মালিকরা তাদের প্রয়োজনে শ্রমিকদের ব্যবহার করছেন, কিন্তু দায়িত্ব নিচ্ছেন বলে মনে হচ্ছে না।

একইভাবে লকডাউন জনস্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট কেউ বাস্তবায়ন করছে না, রাস্তায় নামিয়ে দেওয়া হয়েছে পুলিশ। সেই পুলিশও রক্তমাংসের মানুষ এবং করোনা সুযোগ পেলে তার উর্দি পরা শরীরে নাক-মুখ-চোখ দিয়ে ঢুকবে না- এমন নয়। অর্থাৎ তারাও সমান ঝুঁকিতেই আছেন। পুলিশের বড় কর্মকর্তারা মাঠে কম থাকছেন, কিন্তু সাধারণ পুলিশের অবস্থা তা নয়।

লকডাউনের একটি বড় নির্দেশনা হচ্ছে, 'জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে যাবেন না।' সেটাই যদি হয়,তাহলে যাদের আসলেই বাইরে যাওয়া দরকার, বাইরে গিয়ে কাজ করার ব্যবস্থা করুন। 'কাজ নাই তো খাদ্য নাই'- এমন অবস্থা যাদের, তাদের কথা ভেবে ব্যবস্থা নিন। তাদের কাছে জীবন আগে না জীবিকা আগে- এমন গোলকধাঁধা সৃষ্টি করে কোনো লাভ নেই। জীবন বাঁচানোর লকডাউন পরিকল্পনায় জীবিকার পথ খোলা রাখুন।

সবাই সুস্থ থাকুন।           


  • লেখক: প্রাবন্ধিক ও মানবাধিকার কর্মী

Related Topics

টপ নিউজ

লকডাউন

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • ‘সবকিছুর একটা লিমিট আছে’- মুশফিক ইস্যুতে পাপন 
  • রাতারাতি পেঁয়াজের দাম বেড়ে প্রতি কেজি এখন ২২০ টাকা!
  • যে কারণে আপনি সহজেই আর কাশ্মীরের বিখ্যাত আপেল পাবেন না
  • ফিক্সিংয়ের অভিযোগ তুলে খবর প্রচার করায় একাত্তর টিভিকে মুশফিকের আইনি নোটিশ
  • টাকা ছাড়াও যারা কোটিপতি হতে চান, গুরুত্ব দিন এই ১০ বিষয়ে
  • আদম তমিজী হককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে

Related News

  • লকডাউনের ভয়াবহ স্মৃতি ফিরিয়ে আনছে রাজকুমার রাওয়ের 'ভিড়' 
  • চীনের লকডাউনে থমকে আছে দোহাজারী-কক্সবাজার রেল প্রকল্পের কাজ
  • চীনে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ, স্থগিত করা হলো এবারের এশিয়ান গেমস
  • ২ বছর পর নিউজিল্যান্ডের সীমান্ত খোলা: কান্নার রোল, চকলেটে বরণ
  • মহামারির সময়ে হাজার হাজার ছেলে কাজ করতে বাধ্য হয়েছে, এখন স্কুল চালু হয়েছে তারা ফেরেনি

Most Read

1
খেলা

‘সবকিছুর একটা লিমিট আছে’- মুশফিক ইস্যুতে পাপন 

2
বাংলাদেশ

রাতারাতি পেঁয়াজের দাম বেড়ে প্রতি কেজি এখন ২২০ টাকা!

3
আন্তর্জাতিক

যে কারণে আপনি সহজেই আর কাশ্মীরের বিখ্যাত আপেল পাবেন না

4
খেলা

ফিক্সিংয়ের অভিযোগ তুলে খবর প্রচার করায় একাত্তর টিভিকে মুশফিকের আইনি নোটিশ

5
মতামত

টাকা ছাড়াও যারা কোটিপতি হতে চান, গুরুত্ব দিন এই ১০ বিষয়ে

6
বাংলাদেশ

আদম তমিজী হককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে

EMAIL US
[email protected]
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2023
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - [email protected]

For advertisement- [email protected]