রেকর্ড লেবেল কোম্পানির সাথে দ্বন্দ্ব; কে-পপ ব্যান্ড নিউজিন্সের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা!
২০২২ সালে প্রতিষ্ঠিত কে-পপ ব্যান্ড নিউজিন্স ভক্তদের মধ্যে আলোড়ন তৈরি করেছে। কিন্তু জনপ্রিয় এই ব্যান্ডটির ভবিষ্যৎ নিয়ে এখন অনেকেই সন্দিহান।
কেননা দুই সপ্তাহ আগে ব্যান্ডটি পাঁচ সদস্য আচমকা ইউটিউবে একটি লাইভস্ট্রিমিং ভিডিও করেন। যেখানে তারা ব্যান্ডটির রেকর্ড লেবেল 'হাইব' এর ওপর অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। একইসাথে তাদের প্রযোজক মিন হি-জিনকে সরিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদ করেন।
এমনকি ব্যান্ডটির সদস্যদের পক্ষ থেকে আল্টিমেটাম দেওয়া হয় যে, মিনকে ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে স্বপদে ফিরিয়ে দিতে হবে। তবে রেকর্ড লেভেল প্রতিষ্ঠানটির পদ থেকে এই দাবি মেনে নেওয়া হয়নি।
কে-পপ ইন্ডাস্ট্রিতে ব্যান্ড সদস্যদের এমন প্রতিবাদের ঘটনা খুব একটা দেখা যায় না। এমতাবস্থায় নিউজিন্সের পক্ষ থেকে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে সেটি নিয়ে তৈরি হয়েছে জল্পনা-কল্পনা।
একদিকে ব্যান্ডটির সাথে রেকর্ড লেভেল কোম্পানিটির সাত বছরের চুক্তি রয়েছে; যা ২০২৯ সালে শেষ হবে। তবে আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে যে, ব্যান্ডের সদস্যরা এমন পরিস্থিতিতে কাজ করতে অনাগ্রহ প্রকাশ করছে।
কে-পপ নিউজ সাইট কোরিয়াবোর তথ্যমতে, সময়েই আগেই চুক্তি থেকে সরে আসতে ব্যান্ডটির ১৭০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হবে। এক্ষেত্রে দেশটির সবচেয়ে বড় এন্টারটেইনমেন্ট কোম্পানি সাথে বিষয়টি কীভাবে সুরাহা হয় সেটিই দেখার বিষয়।
হাইব কর্পোরেশনের অন্তর্ভুক্ত প্রতিষ্ঠান এডিওআর-এর অধীনে আত্মপ্রকাশ করে নিউজিন্স। ব্যান্ডটির পাঁচজন সদস্য অলেন মিনজি, হানি, ড্যানিয়েল, হেরিন ও হাইইন।
সমস্যা শুরু হয় যখন হাইব কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে মিনের ওপর কর্পোরেট গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনা হয়। সেখানে বলা হয়, তিনি বাইরের বিনিয়োগকারীদের সাথে নিয়ে আলাদাভাবে নিউজিন্স ও এডিওআর পরিচালনা করতে চেয়েছিলেন।
যদিও মিন গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বরং তিনি উল্টো দাবি করেছেন যে, নিউজিন্সকে অনুকরণের অভিযোগে কর্পোরেশনের অন্য একটি প্ল্যাটফর্মের আইএলএলআইটিকে দায়ী করার পরে প্রতিশোধ হিসেবে এমনটা করা হচ্ছে।
গত মে মাসে মিনকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে না দিতে আদালতের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। যার ফলে হাইবের পক্ষ থেকে তাকে বরখাস্ত করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু আগস্টে মাসে মিনের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার কথা জানান এডিওআর।
প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয় যে, মিন নিউজিন্সের প্রযোজক হিসাবে কাজ চালিয়ে যাবেন। কিন্তু পরবর্তীতে মিন ঘোষণা করেন যে, তিনি সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। কেননা হাইবের শর্তাবলি ছিল 'অযৌক্তিক'।
মিন দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার পর নিউজিন্সের সদস্য মিনজি, হানি ও ড্যানিয়েল তাদের কমিউনিটি অ্যাপ ফোনিং-এ নিজেদের হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
মিনজি বলেন, "কোনো সমাধান করতে না পারার জন্য আমি নিজের প্রতি খুব হতাশ। আমি খুবই দুঃখিত যে, আমরা এই অপ্রয়োজনীয় সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। যখন কি-না ভালো বিষয়ে দৃষ্টি প্রদানের জন্যই পর্যাপ্ত সময় নেই।"
এদিকে ২৫ সেপ্টেম্বর এক বিবৃতিতে হাইব জানায়, মিনকে সিইও হিসেবে পুনর্বহালের দাবি বোর্ড মানতে পারছে না। তবে তাকে প্রযোজক হিসেবে রাখার পূর্ণ নিশ্চয়তা প্রদান করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে এই বিষয়ে আরও আলোচনা করা হবে।
হাইবের প্রস্তাব নিউজিন্স ব্যান্ড সদস্যরা গ্রহণ করবে কি-না সেটি নিয়ে সন্দিহান রয়েছে। তবে ধারণা করা হচ্ছে যে, প্রস্তাবটি গ্রহণ করা না হলে আইনি জটিলতার মুখোমুখি হতে পারে ব্যান্ডটির সদস্যরা।
অনুবাদ: মোঃ রাফিজ খান